|| লিসা মিটনার: বঞ্চনা ও অপমান পেরিয়ে এক আলোকবর্তিকা || লিখেছেন মৃদুল শ্রীমানী

লিসা মিটনার: বঞ্চনা ও অপমান পেরিয়ে এক আলোকবর্তিকা

বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন প্রশংসা জানিয়ে তাঁকে বলেছিলেন জার্মান মেরি কুরি। আইনস্টাইনের থেকে সামান‍্য‌ই বড় ছিলেন তিনি। আমি লিসা মিটনার (৭ নভেম্বর ১৮৭৮ – ২৭ অক্টোবর ১৯৬৮) এর কথা বলছি।
মেরি কুরির মতো নোবেল পুরস্কার তাঁর জোটেনি। তবে মেরি কুরি যেমন ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে পদার্থবিজ্ঞানে ও ১৯১১ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, মিটনার তেমনই ১৯২৪ থেকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের মধ‍্যে ঊনিশবার রসায়ন বিভাগে নোবেল পুরস্কারের জন‍্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন। আবার ১৯৩৭ থেকে ১৯৬৭ অবধি এই একত্রিশটা বছরে ত্রিশবার তিনি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলের জন‍্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন। নোবেল সম্মান না পেলেও খুব বড় মাপের বিজ্ঞানীরা তাঁর কদর করেছেন। নোবেল পুরস্কার না পেয়েও ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে লিনডাও নোবেল লরিয়েট মিটিঙে তিনি সসম্মানে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।
১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ নভেম্বর তারিখে রয়‍্যাল সুইডিশ আকাদেমি ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের রসায়নে নোবেল পুরস্কারের জন‍্য জার্মান রসায়নবিদ অটো হান ( ৮ মার্চ ১৮৭৯ – ২৮ জুলাই ১৯৬৮) এর নাম ঘোষণা করেন। অটো হান এর কৃতিত্ব হিসাবে রয়‍্যাল সুইডিশ আকাদেমি অফ সায়েন্স ব‍্যাখ‍্যা করেন যে, ভারি পরমাণুর নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রক কিভাবে ভাঙে, তা তিনি আবিষ্কার করেছেন। নোবেল পুরস্কার মিললেও পরমাণুর ভাঙন আবিষ্কারের কৃতিত্বটা একা অটো হানের ছিল না। লিসা মিটনার ধরিয়ে না দিলে অটো হান হয়তো বুঝতেই পারতেন না, তিনি ইউরেনিয়াম মৌলের নিউক্লিয়াসকে দু টুকরো করে ফেলেছেন।
মিটনার একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, “নিশ্চয়ই বিজ্ঞানী অটো হান রসায়নে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সম্পূর্ণভাবে যোগ‍্য। এ নিয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশটুকু নেই। তবে আমি বিশ্বাস করি যে, অটো ফ্রিশ্চ এবং আমি এই ইউরেনিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াস এর ভাঙন ব‍্যাপারে কিছুটা অবদান রেখেছি। যা তুচ্ছ করার মতো নয়। আমরা ইউরেনিয়ামের ভাঙন কিভাবে সূচনা হয়, কেমন করে তা বিপুল শক্তি উৎপাদন করে, তার পর্যায়গুলি আমরা দুজনে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ব‍্যাখ‍্যা করেছিলাম। আমাদের গবেষণালব্ধ তথ‍্য ও সত‍্য আমাদের‌ই একান্ত। অটো হানের সঙ্গে সে সবের সুদূরতম যোগাযোগ‌ও ছিল না।”

লিসা মিটনার। তিনি নিউক্লিয়ার ফিজিক্স এবং তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করতেন। তিনি ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। মেয়ে হিসেবে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার প্রশ্নে তিনি দ্বিতীয়জন। এরপর জার্মানির বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ফিজিক্সের অধ‍্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। জার্মানিতে মিটনার‌ই প্রথম মহিলা, যিনি ফিজিক্সে পূর্ণ সময়ের জন্য অধ‍্যাপক পদে বৃত হয়েছিলেন।
কিন্তু ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ জার্মানিতে নাৎসিবাদের উত্থান ঘটলে তাঁকে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ‍্যাপনা পদ থেকে এবং কাইজার উইলহেল্ম ইনস্টিটিউটের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রচণ্ড বিপদের আশঙ্কায় জার্মানি ছাড়তে বাধ‍্য হন। তার অল্প কিছুদিন আগেই ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে লিসা মিটনার আর রসায়নবিদ অটো হান এবং জার্মান রসায়নবিদ ফ্রিডরিশ উইলহেল্ম স্ট্রাসমান (১৯০২ – ১৯৮০) এর সঙ্গে কাইজার উইলহেল্ম ইনস্টিটিউটে একত্রে গবেষণা করতে করতে লক্ষ্য করলেন, থোরিয়ম নামে ভারি মৌলের নিউক্লিয়াসে যদি নিউট্রন দিয়ে সজোরে ধাক্কা দেওয়া হয়, তাহলে বিভিন্ন রকম আইসোটোপ তৈরি হয়। প্রাণের দায়ে লিসা মিটনার কাইজার উইলহেল্ম ইনস্টিটিউটের অধ‍্যাপক পদ হতে পালিয়ে আত্মগোপন করলে ওই ১৯৩৮ এর শেষের দিকে হান আর স্ট্রাসমান এই দুইজনে লক্ষ্য করলেন যে, ইউরেনিয়ামের নিউক্লিয়াসে নিউট্রন দিয়ে সজোরে আঘাত করলে বেরিয়ামের বিভিন্ন আইসোটোপ তৈরি হয়।
হান এই ঘটনার ব‍্যাখ‍্যা চেয়ে দেশান্তরী লিসা মিটনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন ডিসেম্বরের শেষ। ক্রিসমাসের অবকাশ। সেই সময় মিটনার আর তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় অটো রবার্ট ফ্রিশ্চ (১৯০৪ – ১৯৭৯) নামে ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী যৌথভাবে গবেষণা করে জানালেন যে, ইউরেনিয়ামের নিউক্লিয়াস ভাঙা পড়েছে। তাঁরা এই ভাঙনের স্তরগুলি ও ক্রমগুলিও ব‍্যাখ‍্যা করলেন। পর বৎসর ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা নেচার-এ তাঁদের প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ইউরেনিয়ামের ভাঙনের ঘটনাটিকে তাঁরা ফিসন নাম দেন। অটো হানের চিঠি পাওয়া মাত্র তিনি লিসা মিটনার আর তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় অটো রবার্ট ফ্রিশ্চ সেই নিয়ে মনপ্রাণ দিয়ে লেগে পড়লেন। তাঁদের মনে হল, একসময়ে জর্জ গ‍্যামো এবং তির পরে নিলস বোর পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে তরল পদার্থের একটি ফোঁটার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বলেছিলেন, যেমন একটি তরলের ফোঁটা দু টুকরো হয়ে ধীরে ধীরে দুটি পৃথক পৃথক ছোট আকারের তরলের ফোঁটায় পরিণত হতে পারে, তেমন ভাবেই ইউরেনিয়ামের নিউক্লিয়াস ওই রকম একটা টলমলে নড়বড়ে তরলের ফোঁটার মতোই, যা কি না একটা একক নিউট্রনের।ধাক্কার মতো সামান‍্যতম আঘাতেই ভেঙে যেতে পারে। তারপর তাঁদের মনে হল, ওই নিউক্লিয়াস, ওইভাবে দু টুকরো হলে পরস্পরকে বিদ্যুৎ আধানের জন‍্য বিকর্ষণ করবে, অর্থাৎ দূরে ঠেলবে। তাতে ওরা দুটোই সাংঘাতিক গতিবেগ নিয়ে ছুটবে। আর দুশো মেগা ভোল্টের মতো শক্তি তৈরি করবে। কিন্তু এই সাংঘাতিক পরিমাণ শক্তি কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে তাঁরা নিজেদেরকে প্রশ্নে প্রশ্নে দীর্ণ করছিলেন। লিসা মিটনারের মনে ছিল, একটি নিউক্লিয়াসের ভর কিভাবে নির্ধারণ করতে হয়। আর তিনি জানতেন, ইউরেনিয়ামের নিউক্লিয়াস দু টুকরো হলে ভাঙনজাত পদার্থের মোট ভর ওই নিউক্লিয়াসের সমান হয় না। কিঞ্চিৎ লঘু হয়। তার পরিমাণ একটি প্রোটনের ভরের এক পঞ্চমাংশের মতো। ওঁরা জানতেন, ওইটুকু ভরের যদি শক্তিতে রূপান্তর ঘটে, তবে তা দুশো মেগা ভোল্ট হবে। অত‌এব, এই দুশো মেগা ভোল্ট পরিমাণ শক্তি যে পরমাণুর ভাঙনের ফলে তৈরি হয়েছে, এটা প্রমাণ হয়ে গেল। এই যে পরমাণুর ভাঙন, অটো রবার্ট ফ্রিশ্চ এর একটা নাম দিতে চেয়ে আমেরিকান বিজ্ঞানী উইলিয়াম এ আর্নল্ড এর সঙ্গে কথা বলেন। আর্নল্ড বলেন, একটি জীবিত কোশ যখন দু টুকরো হয়ে দুটি কোশের জন্ম দেয়, জীববিদ‍্যায় সে ঘটনাকে ‘ফিসন’ বলে। ফিসন শব্দটি ফ্রিশ্চের মনে ধরল। তিনি তাঁদের যৌথ প্রতিবেদন ১৬ জানুয়ারি, ১৯৩৯ তারিখে ‘নেচার’ পত্রিকায় পাঠিয়ে দিলে ১১ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৯ তারিখে তা প্রকাশিত হল। আর নেচার পত্রিকায় প্রকাশ পাওয়া মাত্র তা নিয়ে বিজ্ঞান জগতে হৈ হৈ পড়ে গেল।

লিসা মিটনার ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানী লুড‌উইগ বোল্টজম‍্যানের কাছে ফিজিক্স নিয়ে পড়াশুনা করেছিলেন। ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করার পর তিনি ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিজ্ঞানী ম‍্যাক্স প্ল‍্যাঙ্ক ও বিজ্ঞানী অটো হানের সান্নিধ্য লাভ করেন।

মিটনার হানের থেকে মাত্র‌ই মাস পাঁচেকের বড় ছিলেন। মিটনার ছিলেন ফিজিক্সে দক্ষ, আর হান কেমিস্ট্রিতে দক্ষ ছিলেন। দুজনেই দুজনকে সমৃদ্ধ করতে করতে একসাথে গবেষণা করতেন। এভাবে ত্রিশটি বৎসর ধরে মিটনার হানের সঙ্গে তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করেছেন। ১৯১৭-১৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁরা যৌথভাবে প্রোট‍্যাকটিনিয়াম (পরমাণু ক্রমাঙ্ক ৯১) মৌলের একটি অত‍্যন্ত স্থায়ী ধাঁচের আইসোটোপ আবিষ্কার করেছেন, যার অর্ধজীবন প্রায় তেত্রিশ হাজার বছর।

১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি অস্ট্রিয়াকে গ্রাস করার পর মিটনার জার্মানি ছেড়ে সুইডেনে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্টকহোমে কার্ল মান গেওর্গ সিগবাহন ( ৩ ডিসেম্বর ১৮৮৬ – ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮) নামে এক প্রভাবশালী পদার্থবিজ্ঞানীর একটি সংস্থায় কাজ করতে শুরু করেন। মান সিগবাহন একস রে ক্রিস্টালোগ্রাফি নিয়ে গবেষণা করে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।

কিন্তু মান সিগবাহন মোটেও লিসা মিটনারকে পছন্দ করতেন না। এমনকি সিগবাহন খানিকটা নারীবিদ্বেষী ছিলেন বলতে হবে। তিনি মনেই করতেন না যে মেয়েরা প্রকৃত অর্থে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করার উপযুক্ত। এই গোঁড়া ধ‍্যান ধারণা থেকে সিগবাহন মিটনারকে খুব কম পারিশ্রমিকে কাজ করাতেন এবং নানাভাবে অপদস্থ করতেন। সিগবাহন ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে রয়‍্যাল সুইডিশ আকাদেমি অফ সায়েন্স এর নোবেল ইনস্টিটিউট এর ফিজিক্স ডিপার্টমেন্ট এর ডিরেক্টর হিসাবে নিয়োজিত হয়েছিলেন। পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেন রয়‍্যাল সুইডিশ আকাদেমি আফ সায়েন্সেস। তাঁরা পাঁচজন গুণীজনকে নিয়ে ফিজিক্স বিষয়ে একটি কমিটি ঠিক করে দেন। ওই কমিটি পুরস্কার প্রাপকের নাম স্থির করেন। সর্বাধিক পক্ষে তিনজন পদার্থবিজ্ঞানী একবারে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হতে পারেন।

মিটনার যখন পরমাণুর বিভাজনের পদার্থবিজ্ঞানগত তাত্ত্বিক ব‍্যাখ‍্যা সন্দর্ভ হিসেবে প্রকাশ করেন, তা বিজ্ঞানীসমাজকে আলোড়িত করলেও, মান সিগবাহনকে খুশি করতে পারেনি। এই সময় পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল কমিটিতে রয়েছেন সিগবাহন স্বয়ং, আরো রয়েছেন তাঁর ছাত্র এরিক হালথেন, এবং আছেন অ্যাকসেল লিন্ধ। হালথেন এবং লিন্ধ, এঁরা দুজনেই সিগবাহনের ঘরানায় বিজ্ঞান পড়েছেন। এঁরা মনে করতেন হাতেকলমে নতুন কিছু করে দেখিয়ে দিতে পারলে, তেমন এক্সপেরিমেন্টকেই নোবেল পুরস্কার দেওয়া চলে। তত্ত্বগত পদার্থবিজ্ঞানের মহত্ত্ব সম্পর্কে ওঁদের আস্থা ছিল না। এ কারণেই মিটনারের আবিষ্কারের তাৎপর্য ও গুরুত্ব উপলব্ধি করতে এঁদের অনীহা ছিল। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের রসায়নের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হল ১৯৪৫ এ। তারিখটা ১৫ নভেম্বর।

কিন্তু দীর্ঘদিনের সহকর্মী হ‌ওয়া সত্ত্বেও অটো হান পরমাণুর ভাঙনের তাত্ত্বিক ব‍্যাখ‍্যার জন‍্য লিসা মিটনারের নাম উল্লেখ করলেন না। বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের বদলে বৈরিতা প্রকাশ করেছেন। পরমাণু বিভাজনের প্রশ্নে লিসা মিটনারের অবদানকে ইচ্ছাকৃতভাবে খাটো করে দেখিয়েছেন।

তবে শেষ অবধি লিসা মিটনারকে ঠেকানো যায় নি। নোবেল পুরস্কার না পেলেও তিনি ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ম‍্যাক্স প্ল‍্যাঙ্ক পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে অটো হান পুরস্কার পেয়েছেন। এবং ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে অটো হানের সঙ্গেই এনরিকো ফের্মি পুরস্কার পেয়েছেন। বহু বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডক্টরেট দিয়েছেন। পৃথিবীর সবচাইতে ভারি মৌল, যার পরমাণু ক্রমাঙ্ক ১০৯, তা মিটনারের স্মরণে মিটনেরিয়াম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।