কবিতায় শিপ্রা দে

১। তবু ভালোবাসি

জানিনা তুমি আমার সাথে
করলে কেন ছল!
সারা জীবনে দিলে গো তুমি
খালি চোখের জল।

বিষাদ ভরা হৃদয় দ্বারে
প্রশ্ন করে মন
পাহাড় বুকে ঝর্না যেন
বহে অনুক্ষণ।

বোঝোনি তুমি শব্দহীন
অন্তরের ব্যথা
নিটোল প্রেম ভালোবাসার
নীরবতার কথা।

বক্ষদেশে ফল্গু ধারা
অধর কোণে হাসি
ঝিনুক যন্ত্রণা বয়ে নিয়ে
তোমায় ভালোবাসি।

বিলীন হয় উচ্ছ্বসিত
নদীর কলতান
বসন্তের কৃষ্ণচূড়া
ভরেনা মন প্রাণ।

শরত চাঁদে দেখি না হাসি
উৎসবের খুশি
বৃষ্টি আর লাগে না ভালো
শ্রাবণ বুকে পুষি।

রাধা যেমন চিরদৈন্য
শ্যামকে ভালোবেসে
আমিও তাই সব হারিয়ে
বাসবো ভালো হেসে।

২। নষ্ট মেয়ে

ব্যস্ত তলি যখন ঘুমে,
তখন জাগে লাল বাতির এঁদো ময়লা গলি
বেচাকেনার হিসেব কষে এই শহরতলি।
জুঁই চামেলি খোঁপায় গুঁজে,
ঠোঁটে উগ্র লিপস্টিক, সস্তা শাড়ি পরে
নষ্ট মেয়ে শরীর বেঁচে পেটের দায়ে মরে।
এখানে ওরা নকল নামে,
কেউ চামেলি, কেউ কমলা, কেউ বা ফুল কলি
বুকের মাঝে দুঃখ ব্যথা অভিমানের থলি।
নাম করা সে বাবুরা সব,
বিলাসিতার আতর মেখে প্রতি রাতেই আসে
কাম বাসনা চরিতার্থে মিথ্যা ভালোবাসে।

চাপা কান্না গিলছে ওরা,
পেটের দায়ে সতীত্বকে বেঁচে বাবুর হাতে
হামলে পড়ে শরীর ছিঁড়ে খিদে মেটায় রাতে।

মদ্যপানে বিভোর হয়ে আনে ফুলের তোড়া
ঊরুর ভাঁজে, বুকের খাঁজে শকুনি চোখ জোড়া।

অন্ধকারে যেই বাবুরা মুখ লুকিয়ে আসে
নিশি ফুরালে সে বাবুরাই নষ্ট বলে হাসে।

ললাট বুক চিবুক ছুঁয়ে কামনা সুখ বোঝে
কাম লালসা শরীর মেপে যৌনাঙ্গ খোঁজে।
ঘর্মাক্ত শরীর ছুঁয়ে উচ্ছিষ্ট খায়
দিনের বেলা সেই শরীরে ঘেন্না বড়ো পায়।
জাত পাতের তুলনা দিয়ে নোংরা বলে তাকে
বিকি-কিনির আলো আঁধারে চামেলি বলে যাকে ।
নিশি ফুরালে বাসি মালাটা ফেলে গঙ্গার জলে
এঁদো গলির নোংরা ধুয়ে শুদ্ধ নাকি বলে।
দাম্ভিকতা অহংকারে শিল্পপতি বাবু
রঙিন ঠোঁটে বাঁকা হাসিতে রাতের বেলা কাবু।
শরীর বেঁচে অলীক সুখে পণ্য এঁরা হায়!
চোখের জলে মুখটি বুজে বাঁচার আশা পায়।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।