ধারাবাহিক রম্য রচনার সংযুক্তা দত্ত – ১৭

 

তখন আমি শ্রী শিক্ষায়তনের স্কুলের ১১,১২ র ছাত্রী। রীতিমতো ভোটে জিতে কালচারাল সেক্রেটারি হয়েছি। বিভিন্ন স্কুলে যাচ্ছি মাঝে মধ‍্যে মিটিং, যে সে মিটিং নয়, যে যে স্কুলে ফেস্ট হবে, সেই সেই স্কুলে যাচ্ছি আমাদের স্কুলের প্রতিনিধিত্ব করতে। বেশ একটা কেউকেটা ভাব, একটু গাম্ভীর্য রেখে চলার চেষ্টা করছি, সেক্রেটারি বলে কথা!
পুজোর ঠিক আগে একটি বিখ্যাত বয়েজ স্কুলের ফেস্ট হবার কথা। সেখানে মিটিং এ যাচ্ছি, দু একজনকে দেখে বেশ মনে রঙও ধরছে কিন্তু প্রকাশ করা যাবে না, সেক্রেটারি বলে কথা!
পুজোর আগে অনুষ্ঠান, থিম ছিল বিভিন্ন প্রদেশের ‘দশেরা সেলিব্রেশন’।সেখানে আমাদের স্কুল থেকে একটা ডান্ডিয়া নাচ হবে ঠিক হল। তখন এই ইন্দোর ভাইজ‍্যাগের ঘোরা সাত ঘাটের জল খাওয়া ‘আমি’ হয়ে উঠি নি, বরং নব নালন্দার গন্ধ রাবীন্দ্রিক মাখা ছিলাম। কিন্তু দেখাতে তো হবে সব জানি, সেক্রেটারি বলে কথা!
নাচ আমার পাগলামি লেভেলের ভালোবাসা তা তো তোমাদের জানা হয়েই গেছে। তবে এর আগে ডান্ডিয়ার লাঠি নিয়ে নাচ করি নি। তাই দুমদাম এদিক ওদিক ঘা
পড়ছে। কেই কিছু বলতেও পারছে না। যাইহোক মোটামুটি রপ্ত করেছিলাম নাচটা। পাঁচদিন বাকী, এমন সময় একটি মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ল। এবার নাচের কোরিওগ্রাফি এমনই পেয়ার ছাড়া জমবে না। একজনকে বাদ দিতে হবে আর এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাকেই। আমার সেদিন মনে হয়েছিল আমাদের পরিবেশনাটা ভালো হতে হবে, সবচেয়ে জরুরী সেটাই। এবার যে বাদ পড়বে তার খুব খারাপ লাগবে। তাই কঠিনতম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেকেই বাদ দিয়েছিলাম। সেক্রেটারি বলে কথা!

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!