প্রবন্ধে রতন বসাক

স্বেচ্ছায় রক্তদান করা এক মহান এবং পুণ্যের কাজ

দানের থেকে বড় কোনো পুণ্য কর্ম হতে পারে না এই জগতে। দান অর্থাৎ নিঃস্বার্থ ভাবে কাউকে কিছু দিয়ে দেওয়া। দান কোনো সময় পরিমাণ কিংবা মূল্যের উপর নির্ভর করে না। মন থেকে কেউ কতটা দান করছে, সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। দান করা মানে সেবামূলক কাজের মাধ্যমে কিংবা কোনো বস্তুগত কিছু দিয়ে দেওয়া কাউকে। পরম করুণাময় ঈশ্বর আমাদের প্রত্যেকটি জীবকেই আলো, বায়ু, জল সবকিছুই সমপরিমাণে দিয়েছেন ধনী গরিব বিভেদ ভুলেই।

রক্তদান করা একটা মহান কর্তব্যের মধ্যে পড়ে আমাদের। প্রত্যেককেই নিজের সম্ভব অনুযায়ী প্রতি বছর দুবার কিংবা তিনবার রক্তদান করা উচিত। এর ফলে আমাদের শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। বরঞ্চ রক্তদান করলে আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের প্রতি লাভজনক হয়। প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারেই আমাদের শরীরে রক্ত তৈরি হয় আবার সেই রক্ত নির্দিষ্ট সময়ের পরে নষ্ট হয়ে যায়। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া আমাদের দেহে।

আজ পর্যন্তও রক্ত তৈরি করার কোনো প্রক্রিয়া মানুষ সৃষ্টি করতে পারেনি। রক্ত একমাত্র আমাদের দেহেই উৎপাদন হয় এছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি এখনও পর্যন্ত। তাই মানুষ রক্তের প্রয়োজনে নিরুপায় হয়ে যায়; যা অর্থ দিয়ে কোথা থেকেও কিনতে পাওয়া যায় না। একমাত্র মানুষই মানুষের কাজে কাছে এই সময়ে।

একটা মোটরযান যেমন জ্বালানি বিনা একচুলও নড়তে পারে না। ঠিক তেমন আমাদের শরীরে রক্ত না থাকলে আমরা দুর্বল হয়ে পড়ি আর এক পা’ও এগোতে পারি না। রক্তই আমাদের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সচল রাখতে সহায়তা করে সবসময়। বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরে অনেক সময় রক্তের কমি হয়ে যায়। আর সময়মতো ও পরিমাণ মতো সেই দেহে রক্ত না দিলে মৃত্যু অবধারিত।

তাই আসুন এই মহান কাজ অর্থাৎ রক্তদান করে আমরা নিজেকে ও অন্যকে এই সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচতে সাহায্য করি। আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে যখন রক্তদান শিবির করা হয়; তখন আমাদের প্রত্যেককেই স্বেচ্ছায় গিয়ে রক্তদান করা উচিত। আমরা যদি একে অপরের কাজে না আসি তাহলে আমরা কিসের মানুষ? এছাড়া মহান জ্ঞানী জনেরা বলে গেছেন ” জীবে সেবা পরম ধর্ম। “

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।