Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

গুচ্ছকবিতায় তুহিন কুমার চন্দ

maro news
গুচ্ছকবিতায় তুহিন কুমার চন্দ

চালাক ভালো রতন মালো

চালাকিতে কাজ হয়ে যায় চালাক হওয়াই ভালো, এমনতরো ভেবেছিলেন রতন কুমার মালো।
লোভী ভীষণ হাড়কিপটে অসৎ পথে কামাই, একদিন সে পড়লো ধরা পিটলো নিজের জামাই।
ভাবতো নিজেই একলা চালাক সঙ্গী যে এক ঢংঙ্গি পা ধরতে পিছ পা সে নয় ভীষণ ভালো সঙ্গী।
এর কথাটা ওকে লাগায় সবাই যে দেয় বলে নিত্যদিনই খাচ্ছে গালি নানান রকম ছলে।
এখন তারা ষ্টেশন মাঠে হাত পেতে রয় খালি, সব চালাকি পড়ছে ধরা দিচ্ছে সবাই তালি।
চালাকিতে হয়না কিছুই সব পড়ে যায় ধরা, রতন মালো ভাবছে এখন সবটুকু তার খরা।

হারিয়ে যাওয়া বাড়ি

তাকাস সামনে যে তোর বিশাল বড় একখানা নীল আকাশ।
ওবাক হলি ভারী উড়তে উড়তে খুঁজে পেলাম হারিয়ে যাওয়া বাড়ি।
পলাশরাঙ্গা ডালে চুপটি করে তিনটি শালিক বসছিলো কোনকালে।
সবুজ বনে ধারে দুধ সাদা মেঘ রোজ এসে তাই ডাকতো বারেবারে।
কেয়া ফুলের পাতায় ভুল করে এক নাও এঁকেছে অংক কষার খাতায়।
আকাশ রোজ কেন তোর বায়না এত এদিক ওদিক তাকাস।
নীল পাহাড়ের দেশে চল চলে যাই চুপ করে আজ হাওয়ায় ভেসে ভেসে।
কেউ পাবে না খোঁজ বলবে না কেউ পড়তে বসো সকাল বিকাল রোজ।
অবাক হলি ভারী উড়তে গিয়ে খুঁজে পেলাম হারিয়ে যাওয়া বাড়ি।

খুশীর ফাগুন সাজায়

দোল এনেছে ঝড়ের খবর মন কারো নেই ভালো হঠাৎ করে পুব আকাশে ফুটলো দিনের আলো।
হল্লা শুরু পিচকারিতে হাজার পাওয়ায় রংয়ে আবীরটাতে খুন রয়েছে রংয়ের বেলুন টংয়ে।
গোপালপুরের তালপাড়াতে ভীষণ তাড়াহুড়ো, কেউ হাতে তেল মাখছে কালি করছে কয়লা গুঁড়ো।
ছোট্ট জুঁইয়ের বালতি বোঝাই রং কিছু নেই জানে, তাতেই খুশী ছোট্ট মেয়ে জল ভরে সে আনে।
যেই এসেছে রাঙ্গাদাদা দু-হাত দিয়ে তালি, বাগিয়ে ধরে পিচকিরিতে চাপ দিয়েছে খালি।
কি খুশী সেই ছোট্ট মেয়ে হোলির দিনের মজায়, রং ছাড়া সেই জলকে দিয়ে খুশীর ফাগুন সাজায়।

চূর্নী নদীর কাছে

পদ্মপাতায় সবুজ খাতায় সকাল মাতায় রাত্রি আকাশকে আজ জোর করে যে বানাই আমার ছাত্রী।
টাপুর টুপুর মধ্য দুপুর হাঁপায় কুকুর মাঠে পড়লো দিদা হুড়মুড়িয়ে বাড়িরই চৌকাঠে।
বইছে হাওয়া করছে ধাওয়া চূর্নী নদীর কাছে ইষ্টিকুটুম কাটুম কুটুম ডাকছে ডালিম গাছে।
আকাশ জুড়ে পায়রা ওড়ে রামধনুকের ছটায় হাওয়ায় দুলে কদম ফুলে মোরগ ফুলের জটায়।
বায়না ধরে রায়না পাড়ার ভট্টদীঘির পিসি বায়না করে পায়না জানি দাঁত মাজনের শিশি। বাবলা কাঁটায় সময় কাটায় মেঘ জড়ানো রাত্রি এই তো আমি বাতাসটাকে বানিয়ে নিলাম ছাত্রী।

নৌকাখানি ভাসিয়ে দিলাম জলে

নৌকাখানি ভাসিয়ে দিলাম জলে হারিয়ে যাবো নদীর কথা বলে, খুঁজবে তুমি আমায় বারেবারে ফিরবো কি আর আমার নিজের ঘরে?
দেখবে তুমি আঁকার খাতায় আরো ইচ্ছে হলে মিলিয়ে নিতে পারো ঘরের চালে চাঁদ নেমেছে যেদিন জ্যোৎস্না মেখে হারিয়ে গেছি সেদিন।
বসবে তুমি ইচ্ছে নদীর কোলে হাওয়ায় মৃদু পানসি নাওটি দোলে মরা নদীর তাল কাঠের ওই সিঁড়ি কাপড় কাচার আদ্যিকালের পিঁড়ি।
যেমন ছিলো তেমনি ঘাটেই আছে ভয়েই মানুষ যায়না যে তার কাছে পিছল ঘাটে সব দেনা শোধবোধ আছড়ে পড়ে সোনায় মোড়া রোদ।
নৌকাখানি ভাসিয়ে দিলাম জলে হারিয়ে যাবো নদীর কথা বলে, খুঁজবে তুমি আমায় বারেবারে ফিরবো কি আর নিজের আপন ঘরে?

তুড়ুক পাখি উড়ুক আরো

তুড়ুক পাখি উড়ুক আরো উড়ুক নতুন ছন্দে, মন মেতেছে আজকে জানি নতুন ফুলের গন্ধে।
তুড়ুক পাখির ছোট্ট ডানা ব্যস্ত ভালো মন্দে ভাসছে আকাশ মেঘের ভেলায় রং তুলি আর ছন্দে।
ছোট্ট খোকন ডাক শুনেছে লেবু গাছের ফাঁকে ছোট্ট পাখি ছোট্ট বাসায় চুপটি করে থাকে।
তুরুক পাখি উড়ুক আরো লাল পলাশের বনে, দুধ সাদা রং তুলোর ডানায় গাইছে আপনমনে।
ছোট্টসোনা জানলা দিয়ে ডাকছে বারেবারে, সেই পাখিটা তুরুক করে দৌড়ে আসে ঘরে।
তুড়ুক পাখি উড়ুক আরো উড়ুক নতুন ছন্দে, মন মেতেছে আজকে জানি সজনে ফুলের গন্ধে।

কি হয়েছে তোর

কি হয়েছে তোর জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখি হচ্ছে সবে ভোর।
বকুল গাছের কোনে প্রেতের মতো দাঁড়িয়ে আঁধার রাতের প্রহর গোনে।
ঘুম জড়ানো চোখে হাঁসগুলো সব নামছে জলে ভোরের আলো দেখে।
দুঃখ ভীষণ তোর এখন আবার পড়ার ঘরে দিতেই হবে দোড়।
দীঘল নদীর ঢেউ শাল মহুয়ার পাতার কোলে দেখতে পায়নি কেউ।
সূর্য উঠলো হেসে দুষ্টু খোকন যাচ্ছে ভেসে তেপান্তরের দেশে।
কি হয়েছে তোর জানলা দিয়ে দেখ তাকিয়ে পাখির ঠোঁটে ভোর।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register