গুচ্ছ কবিতায় চিরঞ্জীব হালদার

পানু পুরাণ ৩

পেঁয়াজ দোকানীর সাথে দর কষাকষির আগে ঘটনাচক্র পানুর সাথে দেখা
আমার হয়ে সে মৌটুসী পিঁয়াজের স্বাস্থ্য পরীক্ষায়
মেতে উঠলে আমি লজ্জা লজ্জা ভাব কাটিয়ে সামনের বালিকা বিদ্যালয় এর ছাত্রীনিবাসের
দিকে তাকিয়ে থাকি
পানুর জন্ম আমার ১৬ বছর পর অথচ এতো ম্যাচিওর্ড
কে কখন জানলা খুলে নৌকা হয়ে যায় সব তার নখদর্পণে
কে কখন লাল রাক্ষস জাপটে ধরে গন্ধ মুখে হামি খেয়েও বকলমা দিতে রাজি হয়ে যায় সব জানে
এসট্রো ফিজিক্স আর মনস্তত্ব ভেতর দেহবাদ কতটা খেলতে পারে তা ওয়াকিবহাল করার যাবতীয় সুরঙ্গসাধনা পানুর বাঁয়া হাতকা খেল
একদিন জিজ্ঞেস করলুম করাত কলের আড়ালে
আতা গাছটার নিষিদ্ধ হো হো হাসির কি কারন
ইহা কি উভলিঙ্গজাত
সে সব বলবে কিন্তূক পিঁয়াজে চমৎকার ভর্তা বানানো মাসিকে দেখলে সে কিছুতেই টাল সামলাতে না পেরে নীল বোকাবক্সের ভিতর ঢুকে যাবে

 

পানু পুরাণ ২

প্রথমবার পানু দেখি পুনের কোন এক নির্মীয়মান বহুতলে
আমার সামনে কোন নীল বোকাবক্স ছিল না
ছিলনা অকৃত্রিম উপহার পাওয়া বার্বি ডল
সকাল হতে সবাই বলল তুমি কাল পানুতে মজে ছিলে

আমি পানু দেখেছি কি দেখিনি
মনে করতে পারিনি
লিঙ্গের মৈতাত সেই কবে থেকে নিরুদ্দেশ
আমি প্রক্রিয়া দেখেছি কিন্তুক ইড়াপিঙ্গলা দেখেছি কিনা মনে করতে পারিনি
গুরু বলেছিল পারিস তো ওদের কবজা কর
আমি এই করি সেই করি এইসব ভাবতে ভাবতে আবার পানু হয়ে যাই

 

পানু পুরাণ ১

পানু নামে আমার এক বন্ধু ছিল
তাকে শেষবার দেখা গেছে কঞ্চিবহুল বাঁশের কাণ্ডে বসে হাওয়ায় স্বপ্নে ভাসাতে ভাসাতে ঝিমকালো এক পুকুরে ছিপ ফেলতে
তাকে কখনো বাউল মনে হতো
কখনও এক অজ্ঞেয় সাদাসিধে ছলনারসিক
মনে হতো পুকুরের সমৃদ্ধ কোন মাদী মৎস্যের সাথে সে যেন কোন্ঠী বদল করছে
তার সংসার ছিল কিনা জানা হয়ে ওঠেনি
জানা হয়েনি তার ছিপে যত মৎস্য উঠে আসতো তাকে মৎস্যর্য মুক্ত করে আবার পুকুরেই ছেড়ে দিত
খর দ্বিপ্রহরে যেসব যুবক বিষন্ন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে সবাই যেন এক একজন তৃষ্ণার্ত পানু

পানু আমার বন্ধু ছিল
এখনো আছে কিনা জানা হয়ে ওঠেনি।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।