বাড়ির উঠোনের অনতিদূরে বিশালাকার আম গাছ। অতনুর বাবা আজকাল উঠে-পড়ে লেগেছেন ঐ গাছটা বিক্রির জন্য। অতনুদের ধনসম্পদ যা আছে তা যথেষ্ট। তবুও যে কেন অতনুর বাবা চারিদিকের গাছপালা বিক্রি করে সাফ করে দিচ্ছেন তা অতনুকে ভাবিত করে তোলে। সে বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে বৃক্ষচ্ছেদন কতটা ক্ষতিকর, কিন্তু তার বাবা বুঝতেই চান না।
ইতিমধ্যে এক গাছ ব্যবসায়ী ত্রিশ হাজার টাকায় সেই আম গাছটি কেনার জন্য বায়না দিয়ে গেলেন।
বছর পনেরোর অতনুর কচিমনকে যেন স্বজন হারানোর আগাম দুঃখে গ্ৰাস করে নিল। করবেই না বা কেন? সেই শৈশব থেকে অতনুর এই গাছটাই ছিল নিত্য খেলার সঙ্গী। সে মহোল্লাসে কালবৈশাখীর ঝড়ে খসে পড়া আম কুড়াতো এই গাছটা থেকেই। ছেলেবেলার সঙ্গীদের নিয়ে এই গাছে চড়ে ,গাছ থেকে লাফিয়ে কত সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত হয়েছে তার।
বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও গাছ ব্যবসায়ী এলো না। অর্থলোভী অতনুর বাবা ফোন করলেন তাঁকে। গাছ ব্যবসায়ী বললেন যে নগদ পাঁচ হাজার টাকা বেশি মূল্যে অতনু সেই গাছ কিনে নিয়েছে।
অতনুর বাবা একেবারে হতবাক হয়ে ভাবলেন “অতনুর কাছে এত টাকা! গাছ কিনে সে করবেই বা কি?” তারপর গাছ ব্যবসায়ী পুরো টাকাটা অতনুর বাবাকে দিয়ে গেল। অতনু তাঁর বাবাকে বললো, ” -এই গাছটা এখন আমার ,আমার প্রাণ”।গাছটা আজও দাঁড়িয়ে আছে।