|| ভাষাতে বাংলা, ভাসাতে বাংলা || সংখ্যায় পিয়ালী চট্টোপাধ্যায়
by
·
Published
· Updated
প্রতীক্ষায়
ভেবেছিলাম তুমি আসবে।
আমাদের সেই কথা দেওয়া নির্দিষ্ট জায়গায়।
পুকুর পাড়ে,যেখানে দুটো নারকেল গাছ
জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে আছে।
পাতায় পাতায় এমন করে দাঁড়িয়ে আছে
দেখে মনে হয় একটাই গাছ।
সেই গাছের ছায়ায় বসে দুজন মনের কথা বলব,
দুপুর বেলায় শীতের পড়ন্ত রোদে পিঠ দিয়ে বসে।
তুমি আমার হাতদুটো তোমার হাতের মুঠোয়
নিয়ে বলবে,, ভালোবাসো তো আমায়?
আমি কিন্তু তোমাকে খুব ভালোবাসি।
আমি তোমার মাথার চুলে
বিলি কেটে কেটে দিতে দিতে বলব,
কি বোকা ছেলে তুমি,
এতদিনে তুমি এই বুঝলে?
এক আকাশ ভালোবাসা দিতে পারি তোমার জন্য।
তোমার জন্য ছাড়তে পারি সব কিছু।
তারপর তোমার বাহুবন্ধনে ধরা দিয়ে
তোমার বুকে মাথা রাখতাম।
তুমি আমার মুখটা দুইহাতে টেনে তুলে
আমার ওষ্ঠে একটার পর একটা
চুম্বন এঁকে দিতে।
আমি আবেশে থরথর করে কাঁপতাম
লজ্জায় দুচোখের পাতা
খুলতে পারতাম না কিছুতেই।
ঘোর ভাঙতেই দেখি,
বসে রয়েছি আমি একা একা,
শীত নামছে, অবশ হয়ে আসছে হাত পা,
আমার দেহমন খোঁজ করছে একটু উষ্ণতার।
আমি অপেক্ষা করে রয়েছি শুধু শুধু।
তোমার আসার সময় এখন অতিক্রান্ত।
আস্তে আস্তে গাছের নিচে
ঠান্ডা বাতাসের প্রবল আধিপত্য।
সূর্য এখন আবছা আগের চেয়ে।
কুয়াশা একটু একটু করে ধীরে ধীরে
চারিপাশ ঘিরে ধরছে,
যেন দীর্ঘশ্বাস ঘিরে ধরেছে চারপাশ।
নদীর ধার থেকে ঠান্ডা হাওয়া
হুহু করে ছুটে আসছে,
জানান দিচ্ছে রাত আসছে ।
এখনই অন্ধকার ঢেকে নেবে চারিপাশ।
পাখিরা কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে
যে যার নিজের বাসায় আশ্রয় নিচ্ছে,
কাছে টেনে নিচ্ছে নিজের প্রিয়জনকে।
শুধু তুমি, বন্ধু শুধু তুমি
একবারও ভাবলে না আমার কথা।
আমি যে তোমার অপেক্ষায়
বসে বসে প্রহর গুনছি।
একবারও ভাবলেনা,
অন্ধকারে আমার ভয় করে।
আমি যে তোমার প্রতীক্ষায় বসে বসে
অন্ধকারের আগমন দেখতে পাচ্ছি।
আমার যে ভয় করছে, ভীষণ ভয় করছে।
অন্ধকার গ্রাস করে নি তো তোমায়?
তুমি আবার আগের মত ফিরে আসবে তো?
তুমি আবার আগের মত ভালবাসবে তো?
আমি যে তোমার ভালোবাসার অপেক্ষায়
বসে আছি, বসে আছি
যুগ-যুগান্ত ধরে।