সমর্পিতা রায় বিদ্যালয়ে একটি অতিপরিচিত নাম ।শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাকে একডাকে চেনে। সে যে শুধু মেধাবী ছাত্রী তা নয় খুব শান্ত ও ভদ্র একটি মেয়ে ।কিন্তু দারিদ্র্য তার সমস্ত মেধার পথে পাহাড় প্রমান বাধা স্বরূপ । তার স্বপ্ন বড় হয়ে সে একজন শিক্ষিকা হবে। দারিদ্র্যের কারণে যারা পড়তে পারে না তাদের সাহায্য করবে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের পরে তার বাবা তার বিয়ে ঠিক করে ফেলে । কারণ দারিদ্র্যের সংসারে কন্যাশ্রীর টাকা শেষ হয়ে গেলে তার পক্ষে মেয়ের বিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় ।
সমর্পিতার আরো পড়াশোনা করার সব পথ বন্ধ হয়ে গেল। বিয়ের পণ হিসেবে পাত্রপক্ষ এক লক্ষ টাকা দাবি করেছে । দরিদ্র পিতা তাতেই রাজি । তার হাতে রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী , রূপশ্রী মিলিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা আছে বাকিটা তাকে জোগাড় করতে হবে অতি কষ্টে । সমর্পিতার সব স্বপ্ন বালির বাঁধের মতো ভেঙ্গে যেতে বসেছে। সে কি একটা শেষ চেষ্টা করবে না ? তার এত বড় স্বপ্নের পুরোটা পূরণ করা তাঁর পক্ষে হয়তো আর সম্ভব নয়, কিছুটা সে করবেই , এতো সহজে সে ছেড়ে দেবে না ।
বিয়ের পণের টাকা দিতে গিয়ে তার বাবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। সমর্পিতার ব্যাঙ্কের একাউন্ট পুরো খালি । একটা টাকাও নেই । সেই টাকা তুলে নিয়ে সমর্পিতা কিছু বস্তির ও পথ শিশুদের শিক্ষাকে সুনিশ্চিত করেছে । জানি না এরপর সমর্পিতার বিয়ে বা শিক্ষিকা হওয়ার কি হয়েছিল ? কিন্তু সেই মুহূর্তেই সমর্পিতা যেটা করেছিল , তাতে সেই হয়েছিল প্রকৃত কন্যাশ্রী ।