কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে তৌফিক জহুর (গুচ্ছ কবিতা)

নবুবা – ৩১

একটা সন্ধ্যা এ জীবন নিয়ে যায় পশ্চিম পাড়ায়
দেহের বিমারকে তুড়ি বাজায় মুঠো মুঠো প্রেম
তোমার শহরে এতো আয়োজন কতো আলোড়ন
গোপন সিন্দুক খুলে দিলাম, নাও গ্রহণ করো
আমার একাকীত্ব,আনন্দ, চোখের আকুতি
এ জীবন ‘ কুরবানে সুমা ‘….

নবুবা -৩২

রাত গভীর হলে পৃথিবী ঘুমিয়ে পড়ে
চোখের তারায় জেগে থাকে মায়াবী মুখ
ঢেউয়ের মতো বুকে আছড়ে পড়ে স্মৃতির ঝাঁপি
রাত গভীর হলে ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলি চাঁদের আলো
জোনাকির আলোয় ছিটিয়ে দেই মুঠো মুঠো শব্দ
একই আকাশের নীচে থেকেও শহরটা আলাদা
একটা বই মানে একটা সভ্যতা উপহার দেয়া
“দারসে সুমা দার্দ না কুলে” … নবুবা…

নবুবা- ৩৩

কাঁচের দেয়ালের ওপাশে দুঃখের কাঁথাটা ভাজ করো
অন্ধকার নদী সাঁতরে পার হই চন্দ্রগ্রহণের রাতে
আলোর দাবানল ছড়িয়েছে শিরায় শিরায়
গোলাপের সুবাস পেয়েছে দুপুরের রোদ
সানগ্লাসের কাঁচে সভ্যতার পান্ডুলিপি
দুপুরের সূর্যে কুচকাওয়াজ করে দরিয়ার মাছ
এককাপ কফি এবং তুমি, সবুজ পাতায়
খাগড়াছড়ির আলু টিলা গুহার মতো রহস্যময়

নবুবা -৩৪

নীল কুয়াশায় খোপা খোলা এক অপ্সরী হেঁটে যায়
যাঁর খোলাচুলে খেলা করে পৌষের হাওয়া
ঘনকালো চুলের মায়া ছুঁয়ে যায় হৃদয়
স্বপ্নের তীব্রতায় ডেকে ওঠে ঘুঘু
ধূসর দিবসে ভোমরের আহলাদ জানে দু’টি চোখ
আসন্ন শীতে অপেক্ষার সেতু পার হয়ে দেখা হবে
দক্ষিণা বারান্দায় জ্যোৎস্না ডেকে আনি
কালোচুলের গভীরে তাকিয়ে থাকে জীবন
হারমোনিয়ামে দূরের জানালায় কে যেন গাইছে,
” আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন,দিল ওহি মেরা ফাসগায়ী”……

নবুবা-৩৫

কাশফুলের পায়ে নূপুর বাজে
সৃষ্টির আহবানে পরিবর্তিত অভ্যাস খোঁজে একতারা
আয়নায় দাঁড়ালে বিকশিত পাগলামি
নিয়ে যাও আমাকে লোকান্তরের দুর্গম নির্জনে
আধুনিকতার কালো ধোঁয়ামুক্ত অনাথ পৃথিবী ছেড়ে
সবুজ ঘাসের জাজিমে খুঁজি চিরসত্ত্বা
অকল্পনীয় নাচের মুদ্রায় নিঃসঙ্গ আঁধারে
সাম্যের মন্ত্রে উজ্জীবিত তোমার চোখ
মৃতদের পাড়া থেকে জীবিত মানুষ মূলত একাকী

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।