কর্ণফুলির গল্প বলায় মনোজিৎকুমার দাস

স্বর্ণচাঁপার ঘ্রাণ

আমাদের পুকুর পাড়ে স্বর্ণচাঁপা গাছটায় ফুল ফোটে বছরে একবারই। বোশেখ মাসের দিকে।ফোটা ফুলের রঙ সোনার মত। ঘ্রাণ মিঠেকড়া।
মোনালি সেসময় রোজই স্বর্ণচাঁপা পাড়তে আসতো। ও আমার মেজ বোন সাথী’র সাথে পি সি গার্লস’ কলেজিয়েট স্কুলে একই সাথে পড়তো। ওকে সাথী’র সঙ্গে মাটিতে খোপ কেটে এক্কাদোক্কা খেলা করতে দেখতাম। তখন হয়তো ওরা ক্লাস ফাইভে পড়তো। আমি তখন ক্লাস এইটে। সুদীপের ছোট বোন অমলাকেও মাঝে মধ্যে ওদের সঙ্গে এক্কাদোক্কা খেলতে দেখতাম।

আমাদের বসার ঘরের সামনের প্রকাণ্ড জামরুল গাছের নিচেয় এক্কাদোক্কার কোট কাটতো। জামরুল গাছের সামনের সান বাঁধানো পুকুরঘাটের কাছে বড়সড় সাইজের একটা স্বর্ণচাঁপা ফুলের গাছ ছিল। অমলা আমার এক ক্লাস নিচে পড়তো। ছুটির দিনে আমি বিকেলে মাঝেমধ্যে আমাদের বসার ঘরের জানালার পাশে বসে বাবা’র আলমারী থেকে বই নিয়ে পড়তাম।

গল্প পড়তে আমার বেশ ভাল লাগতো। এক একদিন গল্প ভাল লেগে গেলে মাঠে ফুটবল খেলতে যেতে মন চাইতো না। আমার সহপাঠী পিন্টু আমাকে মাঠে না পেয়ে ছুটতে ছুটতে আমার খোঁজে প্রায়ই আসতো।

একদিনের কথা বইয়ের পাতার ভেতরে আঙুল রেখে জানালা দিয়ে জামরুলতলার দিকে তাকিয়ে সবে পড়ে শেষ করা রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতার লাবণ্যের কথা ভাবছিলাম।
এমন সময় পিন্টু দৌড়াতে দৌড়াতে আমার কাছে এসে আমাকে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমাকে বললো,’ নিজে খেলতে না গিয়ে এক্কাদোক্কা খেলা দেখছিস্ ! ‘ আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিস ফিস করে ও আমাকে যা বললো তাতে হকচকিয়ে গেলাম। বাড়ন্ত শরীরের অমলার দিকে তো আমি চোখ তুলেই চাইনি , ওর বুকের পানে চেয়ে থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না। মোনালী দেখতেশুনতে সুন্দরী। হরহামেশাই আমার বোনের সঙ্গে ও আমাদের বাড়িতে আসতো। কেন যেন ওকে আমার ভাল লাগতো।

প্রাইমারী স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে তখন ও ক্লাস এইটে। হাত বাড়িয়ে ডাল ভেঙে ফুল পাড়তে শুরু করলে একদিন আমি রাগ করে ওকে কয়েকটা কথা শোনালে সেও কয়েকটা মিঠেকড়া কথা শোনালো।

বেশ কয়েক দিন সে আমাদের বাড়ি মাড়ালো না । আমি মনে মনে ভাবলাম, ভালই হয়েছে ফুলগুলো ওর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে, বিকেল থেকে ফুলের গন্ধে সুরভিত হয়ে থাকবে আমাদের বাড়িটা।

বোশেখের বিকালটা সুরভিত হয়ে থাকলেও আমার মনের মাঝে কেন যেন শূন্য শূন্য লাগতে থাকলো এ ঘটনার পর থেকে আমি এক সময় বুঝতে পারলাম। আমি একদিন আমার বোন সাথীকে বললাম,’ মোনালীকে ক’দিন দেখছি না তো, ও কি মামাবাড়ি গেছে?
‘ সাথী যা বললো তা শুনে আমার মনটা কেন যেন বিষণ্ন হয়ে গেল!
‘ ও স্বর্ণচাঁপা ফুলের ডাল ভেঙেছিল বলে তুই ওকে বকেছিস তাই ও আর আমাদের বাড়িতে আসবে না বলেছে।’ বোনের কথা শুনে বললাম,’ আমি না হয় ওকে বকেছিস্,তুই তো আর বকিসনি। তোর সঙ্গে দেখা করতে আসতে কি বারন!’
আমার কথা শুনে আমার বোনটি কোন উত্তর না দিয়ে মুচকি মুচকি হাসলো। ওকে হাসতে দেখে আমি একটু লজ্জিত হয়ে ভাবলাম,বোনকে মোনালী’র কথা জিজ্ঞেস করা ঠিক হয়নি। মোনালী’র প্রতি আমার দুবর্লতার কথা কি ও টের পেয়েছ। এর ক’দিন পরে কোচিং ক্লাস করে বাড়ি ফেরার পথে দূর থেকে মোনালীকে দেখতে পেলাম। একটা স্বর্ণচাপা ফুলের ডাল হাতে।ও আমাদের বাড়িতে ঢুকতে দেখলান। তবে কি আমার অনুপস্থিতিতে —-।
পরক্ষণেই ভাবলাম ও তো অমলাদের বাড়ির ওদিক থেকে এলো। কেন যেন আমার মনে হলো ও স্বর্ণচাঁপার জন্য এতটা পাগল কেন! ও নিজেই তো স্বর্ণচাঁপার মতো। দু’দিন পরে ও নিজেই তে সুবাস ছড়াবে।

এর কিছুদিন পরে এক বিকেলে মোনালীকে গট গট করে আমাদের বাড়ি ভেতরে ঢুকতে দেখলাম দূর থেকে। সাথীর শরীর খারাপ, তাই ও ক’দিন স্কুলে যায় না। সাথীকে দেখতে এসেছে বুঝতে আমার বাকী রইলো না। আমি ঠিক করলাম, ওর মান থাকতে পারে তাই বলে ওর মান ভাঙাতে আমার বয়ে গেছে। আমি বাড়িতে না ঢুকে দ্রুত পায়ে খেলার মাঠের দিকে রওনা দিলাম। তারপর থেকে ঠিক করলাম, আমি কোন ভাবেই মোনালীর মুখোমুখি হবো না। ভাবলাম, আমাদের বাড়িতে মোনালী এলে বিকেলের দিকেই আসবে।

আমার স্কুল ফাইনাল পরীক্ষার প্রায় আগত। বিকেলে মাঠে খেলতে যাই না বাড়িতে পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকায়। মোনালী যাতে আমার দেখা না পায় তার জন্য আমি ঠিক করলাম বিকাল হবার আগেই আমি পিন্টুদের বাড়িতে গিয়ে পড়াশোনা করবো। যেমন ভাবনা সেই মতোই চলতে লাগলাম।
বাড়ি এলে বোনটি বললো,’দাদা,মোনালীর কথায় বুঝলাম সে তোর জন্য—–‘ ওর কথা শেষ করতে না দিয়ে বলে উঠলাম,’ ওর নাম আমার সামনে বললে—‘
সাথীও আমার কথা শেষ করতে না দিয়ে বললো,’ আমি কিছু বুঝি না! ‘
‘ এখন মাথায় পড়াশোনা ছাড়া মোনালীটোনালী কথা আমার মাথায় নেই। তুই মোনালীকে নিয়ে মআমাকে ঘাটাসনে। আমার পড়াশোনার মাঝখানে মোনালীরা কেউ আসুক আমি তা চাই না। ‘

সত্যি সত্যি আমি ভাল রেজাল্ট করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। ওদের এক্কাদোক্কা খেলার কাল থেকে মোনালী’র প্রতি আমার মনে একটা সফট কর্ণার ছিল, ওর প্রতি প্রচ্ছন্ন ভাল লাগা আমার মনে জমা ছিল। এক সময় জানতে পারলাম মোনালী আমাকে গ্রাহ্য না করে স্বর্ণচাঁপা গাছ থেকে স্বর্ণচাঁপা পেড়ে নিয়ে যায় আমার মাকে হাত করে। আমি জানতাম, ওর মা ওকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায় চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে।

‘ওর বাবা আবার বিয়ে করেছ। মোনালীকে মানুষ করার কথা না ভেবে। ‘
আমার মা আমাকে প্রায়ই বলতেন–‘মা মরা মেয়ে মোনালীকে আমার নিজের মেয়ের মতো মনে হয়।
আমি বুঝতে পারতাম, মোনালী আমার মাকে শ্রদ্ধা করে। মাও ওকে ভালবাসে কিন্তু সে আমার সঙ্গে আড়ি দিয়ে চলে কেন!.
আমার সম্বন্ধে সে সাথীর কাছে যে সব কথা বলে তাতে আমার মনে তেমনটাই হয়।
মা একদিন আমাকে বললেন,’ মোনালী’র জন্য দুঃখ হয়। মা মরা মেয়েটিকে আমার খুব ভাল লাগে।

আমি স্কুল ফাইনালে ব্রিলিয়েন্ট রেজাল্ট করলাম। আমাদের গাছের স্বর্ণচাঁপা, গোলাপ আর রজনীগন্ধা দিয়ে তৈরি ফুলের স্তবক আমার হাতে তুলে দিয়ে মোনালী আমাকে অভিনন্দন জানাতে এলে আমার মনের মধ্যে যেন আগ্নেয়গিরির অগ্নুপাত শুরু হলো।
সেদিন আমার মনে হলো মোনালী আমার ভাল চায়।আমি অনেক দিন পরে সেদিন মোনালীকে কাছ থেকে মন ভরে দেখলাম।

ঢাকা কলেজে ভর্তি হলাম। স্বর্ণচাঁপা প্রতি বছরই ফুটতে লাগলো। ছুটিতে বাড়ি এসে সাথী কাছে শুনলাম, মোনালী স্বর্ণচাঁপা নিতে আসে না। আমি বোনকে বললাম,’ আমি তো থাকি না, স্বর্ণ নেবার এখন ওর বাধা কোথায়!’
‘ ওই জানে কেন আসে না।’

একদিন মোনালী ও আমার বোন সাথী স্কুল ফাইনাল পাশ করে স্থানীয় কলেজ ভর্তি হলো। গরমের বন্ধের আগে আমার ইন্টার পরীক্ষা। আমাকে পরীক্ষায় ভাল করতে হবে,তা না হলে ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি হওয়া কষ্টকর হবে।

পরীক্ষার শেষে বাড়ি এসে আমি আমার মায়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম, মোনালীর সৎমা তাকে আর পড়াশোনা না করিয়ে বিয়ে দেবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। মায়ের কাছ থেকে কথাটা শুনে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল।

সেদিন বিকেলের দিকে মোনালী ও সাথীকে স্বর্ণচাঁপা গাছের নিচে বসে থাকতে দেখলাম ।স্বর্ণচাঁপা ফোটার সময় নয়। দূর থেকে মোনালীকে দেখে মনে হলো না তার মুখে বেদনার কোন ছাপ আছে। তবে কি মোনালী পড়াশোনা বাদ দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চায়। আমি ভাবলাম এমনটা হবার কথা নয়। আমার বোন সাথীর কাছে মোনালী তো বলেছিল যে সে ডাক্তার হবে,তার অভাগী মা তাকে জন্ম দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। আমাকে শত বাধাবিঘ্ন সত্ত্বেও ডাক্তার হতে হবেই। ‘
আমি ভাবলাম তবে কি মোনালী তার প্রতিজ্ঞা থেকে সরে গেছে সৎ মায়ের চাপের মুখে। মোনালী তো এখন জামরুলতলার এক্কাদোক্কা খেলা ছোট্ট মেয়েটি নয়। মোনালীর সঙ্গে এ বিষয়ে খোলামেলা কথা বলাটা এখন জরুরী। স্বর্ণচাঁপা গাছের দিকে আমাক এগিয়ে যেতে দেখে সাথী ফিস ফিস করে মোনালীকে বললো,’ দাদা এদিকে আসছে কেনরে মোনালী?’
‘ আমি কী করে বলবো!’ জবাবে মোনালী বললো।

আমি ওদের কাছে পৌঁছে কোন রকমের ভনিতা না করে বললাম,’ মোনালী, তোর নাকি বিয়ে,তা কোথায়,কবে!’
‘ আমার বিয়ে, তাতে তোমার কী!’
‘কোথায় থাকি না থাকি, তাই জানতে চাওয়া। তোকে পিঁড়িতে বসিয়ে বরের —‘ আমার কথা শেষ করতে না দিয়ে ও যেন রাগে ফুসে উঠলো। মোনালী আমার চেয়ে বছর তিনেকের বড়,এতদিন ও আমাকে তুই করে বলতো। কিন্তু আজ সেই মাত্রা তুই থেকে তুমিতে উন্নিত করায় আমার খুশি হবারই কথা! ওর রাগ দেখে আমি মজাই পেলাম। আমি কিছু বলতে যাচ্ছিলাম, এমন সময় ও হাতে তালু দিয়ে মুখ ঢেকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো
। আমার বোনটিও মোনালী’র বিয়ের খবরে অস্থিরতার মাঝে আছে তা ওর কথা থেকে বুঝতে পারলাম। আমি ভাবলাম, মোনালীর মা চায় সৎ মেয়েকে বাড়ি থেকে বিদায় করে দায় মুক্ত হতে। মোনালীর কান্না দেখে ওর প্রতি আমার এক ধরনের মায়া হলো। এভাবে কত মেধাবী মেয়ের জীবন বিনষ্ট হয়ে যায়। আমার বোন সাথী ডাক্তার হবার সুযোগ পাবে ইন্টারে ভাল রেজাল্ট করতে পারলে,অন্যদিকে মোনালীর ভাগ্যে জুটবে অপ্রাপ্ত বয়সে স্বামীর সংসারে গিয়ে কয়েক বছরের মাঝে কয়েকট সন্তানের মা হয়ে কুড়িতে বুড়ি হবার দুর্ভাগ্য! আমি মোনালীকে বুঝানোর চেষ্টা করলাম সৎমায়ের ইচ্ছেটাকে পূরণ না করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হতে। তখনো মোনালী কেঁদেই চলেছে।
‘ তোর মা তো আজই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে না। ইন্টারে ভাল রেজাল্ট করার জন্য মরিয়া হয়ে পড়াশোনা কর।খুব ভাল রেজাল্ট করতে পারলে তুই স্কলারসিপ পেয়ে যেতে পারিস্। তুই আমার কথাই ধর স্কুল ফাইনালে শিক্ষাবোর্ড থেকে এককালীন একটা বৃত্তি পেয়েছিলাম। তুই আর সাথীও তো এখনো মেয়েদের বৃত্তি পাচ্ছিস্, হতে পারে টাকার পরিমাণ কম।তোরা তো কাগজে দেখেছিস্ ডাচ বাংলা ব্যাংক মেধাবী ও গরীব ছেলেমেয়েদের এককালীন বৃত্তি দেবার খবর। তোর বাবা গরীব নয়, ভাগ্যের পরিহাসে তুই এখন—-‘
আমাকে থামিয়ে দিয়ে মোনালী বললো,’ বাবা তো আমাকে পড়াতে চায়, মা বাবাকে ফু্ঁসলিয়ে আমার বিয়ে দেবার জন্য উঠে পড়েছে লেগেছে ।’
‘আপন মা বেঁচে থাকলে এমনটা কখনোই হতো না। মোনালী শোন্, এখন যদি তুই তোর সৎ মায়ে কথায় বিয়ের জন্য নেচে উঠিস্ তবে তোর স্বামী হয়তো তোর মতো ডাগর বয়সী সুন্দরী মেয়েকে বউ হিসেবে পেয়ে তোকে নিয়ে যে মজা করবে তাতে তুইও ক’দিন সুখে সাগরে ভাসবি, তখন তুই আমাদের কথা ভুলেই যাবি।’

আমার কথা শুনে মোনালী’র মুখটাতে যেন অমাবস্যা রাতের আঁধার নেমে এলো।মোনালীকে এভাবে বলায় সাথী যেন লজ্জায় মরে যাবার অবস্থা!মোনালী কী বলবে ভেবে পেল না। ‘মোনালী, প্রতিবাদ করতে শেখ্, তা না হলে বাঁচতে পারবিনে। ‘ আমি ওকে বললাম।

বিয়ের কুটুৃম আসার খবর জেনে মোনালী বাবাকে বললো,’ আমার বয়স এখনো আঠারো হয়নি, মায়ের কথায় আপনি আমাকে বিয়ের পিঁড়ি বসতে বাধ্য করালে হিতেবিপরীত হবে কিন্তু, আমি বলে রাখলাম।’ মোনালী’র কথা শুনে ওর বাবা একটা কথাও বললো না।

দিনের পর দিন গড়িয়ে যেতে থাকলো।আমি ঢাকার বুয়েটে ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হলাম। এক সময় মোনালী ও আমার বোন সাথী ইন্টার পাশ করলো গোল্ডেন এ প্লাস গ্রেড পেয়ে। আমার পরার্মশে ও ডাচ বাংলা ব্যাংকে আবেদন করে বৃত্তি পেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারী পড়ার সুযোগ পেল।এদিকে সাথী রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএসে পড়ার জন্য সিলেকট হলো। গরমে ছুটিতে আমি আর মোনালী এক সাথে প্রথমবার বাড়ি ফিরলাম একই বাসে পাশাপাশি সিটে বসে। মাসটা ছিল বোশেখ। এক সময় মোনালী আমাকে বললো, ‘তোদের স্বর্ণচাঁপা গাছে এতদিনে ফুল ফুটেছে,তাই না অভি? স্বর্ণচাঁপা ফুলের সুবাসে এখন চারদিক মম করছে, তুই কি এখনো স্বর্ণচাঁপা গাছে ডাল ভাঙলে আগের মতো আমাকে বকবি?’
আমি ওর কথা শুনে মুচকি হেসে বললাম,’ এখন তো তুই নিজেই স্বর্ণচাঁপা। স্বর্ণচাঁপার সুবাস আমি তোর পাশে বসেই পাচ্ছি।’ মোনালী কপট রাগ দেখিয়ে বললো,’ সাথীকে আমি বলে দেব তুই আমাকে কথায় কথায়
যাচ্ছেতাই বলিস্। দরকার হলে মাসিমাকেও বলতে—–‘
আমি ওর কথা থামিয়ে দিয়ে বলালাম,’ তোর কথা তারা বিশ্বাসই করবে না।’

বেশ কয়েক বছর পরের কথা, মোনালী আর আমি এখন সুখী দম্পতি। বিছানায় শুয়ে আমার গলা জড়িয়ে ধরে প্রায় প্রায়ই মোনালী আমাকে বলে, ‘ তুই কি এখনো আমাকে স্বর্ণচাঁপা ফুল পাড়লে বকবি।’
আমি ওর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ওর গোলাপী গালে একটার পর একটা চুৃমু দিয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি ।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।