মার্গে অনন্য সম্মান শ্রীস্বদেশ সাধক সরকার (সেরার সেরা)
অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার
সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ৮৫
বিষয় – নববর্ষে বাঙালি
বরণে সাজি কথনে সাহেবি
এই এক হয়েছে,বোশেখ~এলেই
বঙ্গাব্দ স্মরণ ,আরে বাবা-এক পয়লা আর
পঁচিশ, বিজয়া দশমী,সামাজিক অনুষ্ঠান
ছাড়া কেউ কোন দিন তার ধারে কাছে যায় না
যত আদ্যিখ্যাতা ঐ বর্ষবরণ।
বলি বুঝছ কিছু নবীন। তুমি নামেও নবীন,
হও না প্রাচীন। কিন্তু ঐ দেখ বছর । যেই ঘুরল
দিন,মাস মেপে অমনি সব রাবীন্দ্রিক ছন্দে
শান্তিনিকেতনী আদলে নাচে গানে ভরপুর
বাঙালির কি বাঙালিয়ানা দেখলে মনে হয়
বাপরে এত ধূতি,পাঞ্জাবি ছিল কোথায় সব,
আরে সব বিয়ের সময় কোঁচা বাঁধতে পারে
না,সাজান পাট করা ধূতি ,পাজ্ঞাবি কিনে সব
বর সাজে আর পয়লা বোশেখ এলেই
কবিতা,আবৃত্তি,নাচে গানে ভরপূর বোশেখ
ভাবে,তা হলে বাঙালি আবার বাঙালিত্বকে
ফিরে পেল।
আরে ধূর মশায়,ও সব আনুষ্ঠানিক । গেছেন
ইং মাধ্যম স্কুলের ধারে কাছে,দেখবেন
বাঙালি কবে সাহেব হবার প্রস্তুতি নিয়ে
ফেলেছে। ঐ সব বিদ্যালয়ে প্রার্থনাতেও
রবি কবি,দ্বিজেন্দ্ররা নেই অথচ নববর্ষ যেন
সাহিত্য সভার শিরোমণিতে প্রতিভাত,
বিরাজিত মননশীল অনন্য ভাষা যা চিনতে
শেখায় এক ঘরাণাকে~এ রকম কত ভাষণ
শুনবেন তাদের অভিভাবকদের কাছ হতে~
বাঙালির নববর্ষ এখন অন্য উৎসবের
মেজাজ। একদিন মনে পড়ে রবি কবিকে,
নজরুল,মানিক কে,বিভূতি,শরৎ,আশা,
বিমল,শংকর,প্রবোধ,সুবোধ ,অবধূত সব
এখন বিস্মরণের ডাইমেনসিয়া রোগী~
বুঝলে নবীন,বরণ তোমার যতই ঢাকঢোল
পিঠিয়ে হোক না কেন আসলে ঝরা পাতার
শুকনো ডাল। একটু ঝড় উঠলেই ভাঙ্গন~!
কত কথা মাঠে শুনো,কিন্তু বাঙালির
বাঙালিয়ানা তো আড্ডা,তর্ক,চায়ের দোকানে
বচসা,হাটে যাওয়া~দু দন্ডের আলাপনী যেন
বাঙালিয়ানার নিত্য দিনের মহাফেজখানা ,
হারিয়ে গেল নবীন,তুমি নবীন থেকেও
পুরাতনী সেই ভাঁড়ের গল্প,রঙ্গরসে ভরপুর
বৈঠকখানা ,চর্চা,নিন্দা আর প্রশংসার
পাশাপাশি দৃঢ় যোগসূত্রের সেই সামাজিক
আত্মীয়তার মহামিলনের কোরাস ভেঙ্গে
খানখান অথচ নববর্ষের বাঙালিয়ানা
সব ছেড়ে দিয়ে ভাঙ্গনের মাঝে হোম
ডেলিভারি আর হোটেল রেস্তোরায় ভীড়
ছাড়া আর কি বলতে পার~!
প্রশ্ন~নববর্ষে বাঙালিয়ানা কি তবে নেই।
নিশ্চয়ই আছে।
২১শে ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা
দিবস,আর পঁচিশে বৈশাখ দেখলে মনে হয়
বেঁচে আছে সে~আছে ধূতি,আছে শাড়ি আর
বাঙালির আভিজাত্যের এক পূর্ণ ছাপ যা
সত্যিই মনে করায় তবে সে তো একদিনের
নয়,তুমি যেমন নবীন নও পুরাতন~সে রকম
বাঙালিয়ানার চির নবীনত্বই বাঙালির দিশা।
নববর্ষে সেই বাঙালিয়ানার সৌমিত্র ,অনুপ
উত্তম,ভানু,জহর,চিন্ময়,পাহাড়ি,ছবি,সন্ধ্যা
সুচিত্রা,সুপ্রিয়া,ছায়া,সেই অজিতেশ,উৎপল
আর পাওয়া যায় কি~যেখানে নববর্ষের
বাঙালিয়ানার উৎকর্ষতা ছিল প্রবল ও এক
স্মারক।
সেই ময়দানী বারপূজোর ঘটা,চিংড়ি-ইলিশের
লড়াই,আজ আর কোথায়,কোথায় সে
বাঙালির ফুটবল~
কলেজ ষ্ট্রীটবই পাড়ার সেই আমেজ আর
আছে কি,কফি হাউসটা থাকলেও নতুন
মালি,নতুন ফুল ফুটলেও এখন যেন সব
বনসাই~বুঝলে নবীন বরণ !
বাংলার বায়ু,বাংলার জল,পূণ্য হউক,পূণ্য
হউক~ হে ভগবান ।
নববর্ষে বাঙালিয়ানা চিরজীবী হয়ে থাক
অফিস আদালতে বাংলা ভাষার ব্যবহারে,
চিরজীবী হয়ে থাক মাতৃভাষা মাধ্যম যা
আসল নকল চিনতে সহজ হতে সহজতর
করতে সাহায্য ও সহায়কের ভূমিকা নেবে ।