সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ১০০)

রেকারিং ডেসিমাল

মিশ্রজী এইবারে এক গাল হেসে আতিথেয়তা করেন। ঘরে রাখা কেটলি থেকে চা ঢেলে দেন সবাইকে বড়ো বড়ো মাটির গ্লাসে।
বাচ্চারা চা খায়না জেনে দুধ আনতে ব্যস্ত হচ্ছিলেন। মা নিরস্ত করে বললেন, ওদের জন্য ফল আছে।
বাকিদের জন্য বিস্কুট বেরোলো ঝুলির থেকে। মিশ্রজীর জন্যে ও।
চায়ে চুমুক দিয়ে সবাই বলল, আআহ!
মা সাধারণত চা খেতে চান না।
তিনি দুগ্ধপোষ্য জীব।
আজ তিনিও এক গাল হাসলেন চা খেয়ে।
চা তো না, যেন চায়ের গন্ধ মাখা রাবড়ি। আহা, আহা।
মিশ্রজী মন্দিরের পুজো, আরতি সব সময় টময় কাগজে লিখে দিচ্ছিলেন বাবা আর ঠাকুরদার কাছে।
মা এক ফাঁকে এর মধ্যেই প্রশ্ন করেন।
—- ও মিশ্রজী, নীচে, উঠোনে, সিঁড়ির তলায়, অতবড় কালো, কি?
মিশ্রজী কথা বলতে বলতে ঘাড় কাত করে হাসেন।

ও একটা মোষ। এসে উঠোনে শুয়ে থাকছে দু তিন দিন ধরে। থকে গেছে মনে হয়।

মা ভাবেন, বাবা এত বিশাল প্রাণী।

এখানে রাস্তাঘাট তো গরুময়। এ আবার মহিষ।
আসার পথে মণিকর্ণিকা, দশাশ্বমেধ ঘাটের পথ নির্দেশ দেখে আসা গেছে।
চারদিকেই ত শ্মশান।
কত গল্প শুনে আসছে ছোটবেলা থেকে।
কাশীধাম, বিশেশ্বর বিশ্বনাথ স্বয়ং এখানে মুক্তি দেন সব প্রাণীর। এখানে মৃত্যু হলে মুক্তি অনিবার্য।
এই মহিষ, এর যদি প্রাণ যায়, এ কোথায় যাবে মুক্ত হয়ে?

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!