সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে শ্রীরাজ মিত্র (পর্ব – ১৪)

ছায়াপথ, গুঁড়ো ছাই

অনেক কিছুই সময়ের সাথে পরিবর্তন হলেও, কোথাও যেন ধরে রাখে তার মূলগত ধর্ম। এই যেমন- আগে যেখানে ছিল অনাথ আশ্রম, রূপ বদলে হয়ে গেল হাওড়া স্টেশন। অথচ আজও যেন সে বহু অনাথজনের আশ্রয়।

উনিশ শতকের প্রথমভাগ। হাওড়ায় গঙ্গার ধারে ছিল একটি অনাথ আশ্রম। মূলত রোমান ক্যাথলিক ছেলেমেয়েদের জন্যই ছিল এই আশ্রম। পাশে একটি গির্জা। এর দায়িত্বে ছিলেন পর্তুগিজ মিশনারিরা। সব কিছুই ঠিক মতো চলছিল। কিন্তু বাঁধ সাধল ভয়ঙ্কর মহামারী। সেখানকার সমস্ত বাচ্চা, কর্মী, মিশনারিদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল কলকাতায়। সেখানেই আবার নতুন করে শুরু হল সংস্থার কাজকর্ম। ফাঁকা হয়ে গেল আশ্রম ও গির্জা চত্বর।

ফাঁকা জমিটি বিক্রি করার জন্য অনেক দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন পর্তুগিজ মিশনারিরা। এক সময় তাঁরা জানতে পারলেন, ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানি নাকি হাওড়ায় একটি জমির সন্ধান করছেন! তখন তাঁরা আর সময় নষ্ট না করে রেলওয়ে কোম্পানির কাছে জমিটি বিক্রি করে দেন। রেলওয়ে কোম্পানি তখন হাওড়ায় একটি রেল স্টেশন বানানোর পরিকল্পনা করছিল। এই জমি সেই সম্ভাবনাকে আরও খানিকটা গতি দিল। ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার জর্জ টার্নবুল ১৮৫১ সালে প্রথম হাওড়া স্টেশনের জন্য সরকারি দপ্তরে প্ল্যান জমা দেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সে প্ল্যান খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে ১৮৫২ সালে তিনি পুনরায় পরিমার্জিত প্ল্যান জমা দেন। এবারে সেই প্ল্যান গৃহীত হয় ও স্টেশন তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। চারটি টেন্ডার জমা পড়ে। হাওড়া স্টেশন তৈরির জন্য রেল কোম্পানি আনুমানিক খরচ ছিল, তখনকার দিনে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।

শুরু হল স্টেশন তৈরির কাজ। আর্মেনিয়ান ঘাটের কাছে তৈরি হল একটি লাল ইটের একতলা বাড়ি ও একটি মাত্র প্ল্যাটফর্ম বিশিষ্ট একটি রেল ট্র্যাক। ইটের বাড়িতে ছিল একটি ছোট্ট জানলা। সেখান থেকেই টিকিট সংগ্রহ করতে হত। ইঞ্জিন মেরামতের কারখানা হিসেবে তৈরি হল কয়েকটি টিনের ঘর। হল একটি স্টোর রুমের ব্যবস্থাও। এটাই ছিল আদি হাওড়া স্টেশন।

১৮৫৪ সালের ১৫ অগস্ট। সকাল ৮টা নাগাদ হাওড়া থেকে হুগলির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে একটি ট্রেন। ঐতিহাসিক এই যাত্রা দিয়েই হাওড়া স্টেশনের পথ চলা শুরু। শুরুর মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা ছিল বহুমানুষের। তিন হাজার দরখাস্তের ভেতর থেকে মাত্র কয়েকশো মানুষই সুযোগ পেয়েছিলেন এই যাত্রার ভাগিদার হওয়ার। প্রথম ট্রেন দর্শনের জন্য ছোট্ট হাওড়া স্টেশনে উপচে পড়েছিল সাধারণ মানুষের ভিড়।ট্রেনটিতে ছিল তিনটি প্রথম শ্রেণির কামরা, দু’টি দ্বিতীয় শ্রেণির কামরা, তিনটি তৃতীয় শ্রেণির কামরা এবং গার্ডের জন্য একটি ব্রেক ভ্যান। এগুলি সবই কলকাতায় তৈরি করা হয়েছিল। প্রথম যাত্রায়, হাওড়া থেকে হুগলি যেতে সময় লেগেছিল ৯১ মিনিট। হাওড়া-হুগলি যাত্রাপথের মাঝে ট্রেন থামত তিনটি স্টেশনে— বালি, শ্রীরামপুর ও চন্দননগরে। ট্রেনের প্রথম শ্রেণির ভাড়া ছিল ৩ টাকা ও তৃতীয় শ্রেণির ভাড়া ছিল ৭ আনা। টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে রেল কোম্পানির লঞ্চে করে গঙ্গা পার হয়ে কলকাতা যাওয়া-আসা হত। লঞ্চের ভাড়া রেলের ভাড়ার সঙ্গেই জুড়ে থাকত। তখন তো আর হাওড়া সেতু ছিল না। রেল কোম্পানির লঞ্চই ছিল একমাত্র ভরসা। ১৮৮৬ সালে হাওড়া পন্টুন ব্রিজ তৈরি হবার পরে এই পদ্ধতি বন্ধ হয়। তারপর তো আর ফিরে তাকাতে হয়নি…। দিনে দিনে বহরে বেড়েছে হাওড়া স্টেশন। কত কি অদলে বদলে গেছে সময়ের নিয়মে। কিন্তু কোথাও একটা যেন কত আশ্রয়হীনের আশ্রয় সে আজও। এই বলে প্রকাশ ব্যানার্জী আমার দিকে তাকালেন।

●●

আর এদিকে ঘটেছে এক মহা ঝামেলা! মুকুল রায় আসলে চাণক্য কি না, তা নিয়ে দু পক্ষের বেশ তর্কাতর্কি। আজ আমাদের মাস্টার মার খেতে খেতে বেঁচে গেছে।

ওদিকে দু পক্ষের রগড় জমে উঠেছে। আর মাস্টারের কি হল, ঐ দলের একটা ছেলেকে সাইডে ডেকে বলল- আচ্ছা ভাই, চাণক্যটা কে? ছেলেটা উত্তরে বলল- তুমি মাস্টার যে গো! এটাও জাননি। অমিত শাহ কে চাণক্য বলে। চন্দ্রগুপ্ত কে পাটলিপুত্রে বিরাট মার্জিনে ভোটে জিতিয়েছিল, তারপর থেকেই তো আনন্দবাজার অমিত শাহ কে চাণক্য বলতে শুরু করল…

আমরা হেসে মরি! মাস্টার এবার আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল – ভাবতে পারেন?!! তারপর বলল, আসলে আমরা অনেকেই জানিনা চাণক্য আসলে কে?

আচার্য্য চনক এবং চনেশ্বরী দেবীর কোল আলো করে, আজ থেকে প্রায় 2300 বছর আগে
(খ্রিস্টপূর্ব 300 অব্দে) তক্ষশীলায় (বর্তমান পাকিস্তানে),মতান্তরে পাটলিপুত্র অর্থাৎ বর্তমানের বিহারের পাটনায় জন্মগ্রহণ করেন আচার্য্য চাণক্য। যদিও আবার অনেকের মতে আচার্য্য চাণক্য উড়িষ্যার চণক গ্রামের ভূমিপুত্র।

তাঁকে নিয়ে আজও কতকথা প্রচলিত, প্রচারিত ও সমাদৃত। এই যেমন- একদিন বিষ্ণুগুপ্ত বিমর্ষ।
বসে রয়েছেন আসনে। সামনে চন্দ্রগুপ্ত, পাশে অস্তি। সারা শিবিরে বিষণ্নতার ছোঁয়া।
এই জয় ছিল খুব দরকার। হল না। হারতে হয়েছে খুব বাজেভাবে। বাহিনীর বেশিরভাগ আহত, অনেকেই নিহত। সবেমিলে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আবার নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। কিভাবে করা যায় সেই নিয়ে তিনি চিন্তিত। আলোচনা চলছে এই বিষয়ে। গম্ভীর আলোচনা।
সবাই রাখছে মতামত।

ঠিক সেই সময়ে একটি বাচ্চা ছেলে দৌড়ে ঢুকে পড়ল শিবিরে। আদুল গায়ে এক মিষ্টি বাচ্চা।
পাহারাদার এসে বাচ্চাটিকে বের করে নিয়ে যেতে চায়। আচার্য্য না করলেন। চলে গেল সে। বাচ্চাটির হাতে ধরা একটি রুটি। মাঝে মধ্যে রুটিতে কামড় দিচ্ছে। খাচ্ছে যতটুকু ছড়াচ্ছে বেশি। বেশির ভাগটাই তার নষ্ট হচ্ছে। মিষ্টি বাচ্চাটি তাঁর পরিচিত। আচার্য্যর দেহরক্ষীর ছেলে। পাশের তাঁবুতে থাকে। মাঝে মধ্যে পুচকে এসে গল্প করে যায় আচার্য্যর সাথে। আধো আধো বুলি তার বেশ ভালো লাগে।

এদিকে হাজির তার মা, বাচ্চা খুঁজতে খুঁজতে।
বাচ্চাটিকে দেখে আশ্বস্ত হলেন।
আচার্যকে বললেন- দেখেছেন খুঁজে খুঁজে চলে এসেছে আপনার কাছে। কদিন পায়নি আপনাকে। কিন্তু আজ এলেন আপনি ওমনি এর মজা দেখে কে…
বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন-
আচার্য্যদেব আপনিই বলুন এভাবে কেউ রুটি খায়।
রুটির একপাশ থেকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে হয়। তা না করে রুটির মাঝখানে আগে কামড় দিলে আশেপাশের অংশ নষ্ট হবে, ছড়াবে এদিক ওদিক। খাওয়াটাও ঠিকঠাক হবেনা। রুটিও নষ্ট। নষ্ট শ্রম অর্থ।
এখন থেকে না শিখলে সারাটা জীবন নষ্ট করতেই শিখবে।
এই বলে বিড় বিড় করতে করতে বাচ্চাকে নিয়ে চলে গেলেন।

আচার্য্য যেন হতভম্ব হয়ে শুনছিলেন সব। মনে হচ্ছে তার যেন তিনি শুনেছেন কোন দৈব বাণী। আশেপাশের থেকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে হয়। মাঝখানে কামড় দিলে নষ্ট হয় সব। পন্ড হয় পরিশ্রম। অর্থ যায় জলে। সত্যিই বড্ড ভুল হয়ে গিয়েছে। আগেই পাটলিপুত্র আক্রমন করা হয়েছে বড় ভুল। রাজধানী ওটা।
সবচেয়ে সুরক্ষিত। স্বাভাবিক ভাবে তার হয়েছে পন্ডশ্রম।
গেছে অর্থ। নষ্ট হল সময়। হল শক্তিক্ষয়।

বুঝে গেলেন তার অসফলতার সঠিক কারণটা ঠিক কি? এবারে শুধরে নিতে হবে, নতুন উৎসাহ নিয়ে লেগে পড়তে হবে।

পরেরদিন থেকে আচার্য্য শুরু করলেন তাঁর কাজ। আশেপাশের জঙ্গলে গেলেন জংলীদের একত্রিত করার কাজ শুরু করলেন। দেখা করলেন ভাড়াটে সৈন্যদের সাথে। রফা করলেন তাদের সাথে।

এরপরে মনোনিবেশ করলেন পাটলিপুত্রের দুর্বল দিকে।
নন্দ রাজ্যের দুর্বল অংশগুলোর দুর্বলতা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলতে লাগলো। এরকম এক ব্যস্ত দিনে অস্তি এসে খোঁজ দিল নন্দ রাজার কোষাগারের। এক জেলে জানে এসব।

একদিন সন্ধ্যায় চুপিচুপি চললেন অস্তি আর আচার্য্য। তাদের গন্তব্য এখন নদীর দিকে। চলেছেন তাঁরা আপাদমস্তক চাদরে মুড়ে। হাতে মশাল, তবে জ্বালানো নেই। খুব দরকার না হলে জ্বলবে না।
মোটামুটি চাঁদের আলোয় ঠাহর করে করে দুই মূর্তি এসে পৌঁছল নদীর ধারে। অস্তি একরকম সাংকেতিক আওয়াজ করল। উল্টো দিকের অন্ধকার ভেদ করে এল এক ব্যক্তি। ইশারায় পিছু নিল এই দুজন। গিয়ে বসল এক নৌকোয়। চলল নদীর মাঝে।
আলোচনা হল সবকিছু। এরপরে সেই জেলে নিয়ে গেল প্রাসাদের কাছে। দেখিয়ে দিল গোপন এক রাস্তা। যা ঢুকেছে প্রাসাদে।
প্রাসাদে ঢোকার রাস্তা বলাটা বোধহয় ভুল হল। কারন এটা সেই রাস্তা যা দিয়ে প্রাসাদ থেকে পালানো যাবে যদি হয় আক্রমন।

আচার্য্য খুব সন্তর্পণে নৌকো চালাতে বললেন।এমনভাবে নৌকো চলল যেন জেলে বেরিয়েছে মাছের সন্ধানে। প্রাসাদের অন্যান্য রক্ষীরা যাতে সন্দেহ না করে। আচার্য্য দেখে চললেন প্রাসাদের খুঁটিনাটি।
কোন কোন জায়গায় রয়েছে প্রহরী।এরপর নৌকো ঘুরে এক জায়গায় গেল যেখানে রয়েছে প্রাসাদের কোষাগার।মোটামুটি প্রাসাদের একটা ধারণা করা গেল। নকশা কয়েকদিন আগেই এসেছে হাতে। মোটামুটি সেইমত মিলিয়ে নেওয়া গেল।কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেল।

যতক্ষন আচার্য্য আর অস্তি তাদের কাজ করে গেল পাশাপাশি মাছ ধরে গেল জেলে।
মোটামুটি যা মাছ হল যথেষ্ট, রক্ষীদের নজরে পড়লে আর ভয় নেই সাধারণ মাছ ধরা জেলে নৌকো মনে করে ছেড়ে দেবে।

পরেরদিন ভোরের আলো ফোটার বেশ কিছুক্ষণ আগেই নৌকো এসে ভিড়ল ঘাটে।
আচার্য্য জেলের হাতে ধরিয়ে দিলেন একটি মুদ্রা।
নেমে গেলেন দুজনেই নৌকো থেকে।
কিছুক্ষনের মধ্যে মিশে গেলেন অন্ধকারে।
আলো ফুটতে শুরু করেছে। জেলে বের করল মুদ্রাটি। চোখ তার চকচক করে উঠল। এ তো স্বর্ণ মুদ্রা। তার মোটামুটি দু বছরের রোজগার।
না এমন লোককে হাতছাড়া করা যাবেনা। ধরে রাখতে হবে। এর কথামতো কাজ করলে অনেক অর্থ রোজগার হবে। খুব ধনী ব্যক্তি সন্দেহ নেই…

পরিকল্পনা অনুযায়ী আচার্য্য কাজ শুরু করেছেন। ছায়াসঙ্গী তার অস্তি। দুজনে মিলে দেখা করছেন নন্দ রাজ্যের বিভিন্ন অঙ্গ প্রদেশের কর্মকর্তার সাথে। তাদের অভাব অভিযোগ শুনে দুর্বল জায়গাগুলো ধরার চেষ্টা করছেন। মোটামুটি তাঁরা সফল। একটা তালিকা বানিয়ে ফেলেছেন তাতে যা দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ কর্মচারী নন্দ রাজের অপমান সয়েছেন। ক্ষোভ রয়েছে মনে। আর কিছু রয়েছেন তারা উৎকোচ ছাড়া কিছু বোঝে না।
ধীরে ধীরে অপমানিত যারা তাদের সাথে সখ্যতা বাড়ালেন। দুর্বলতম জায়গাগুলো আরো স্পষ্ট হতে লাগলো।

ওদিকে চন্দ্রগুপ্ত ব্যস্ত রয়েছেন নতুন যারা বাহিনীতে যোগদান করছেন তাদের ট্রেনিং দেওয়ার কাজে। নিজে দাঁড়িয়ে করছেন পরিচালনা। কোন অবহেলা নয়।
তিনি নিজে আলেকজান্ডার বাহিনীর থেকে যুদ্ধ শিক্ষা করেছেন তাই গ্রীক যুদ্ধপদ্ধতি তিনি জানেন। গেরিলা বাহিনীর যুদ্ধ কৌশলও তাঁর অনবগত নয়।
কিন্তু সবার আগে দরকার অস্ত্রের শিক্ষা আর তার প্রয়োগের খুঁটিনাটি জ্ঞান। সাথে দরকার সৈন্যবাহিনীর মধ্যে সামঞ্জস্য। ঐক্যবদ্ধতা। নিয়মানুবর্তিতা।
সবে মিলে সৈন্যরা তার একটি ইশারা যেন বুঝে যায়। সেই অনুযায়ী যেন নেয় পরবর্তী প্রতিটি পদক্ষেপ।

কাজটা খুব সহজ নয়। কিন্তু দক্ষ চন্দ্রগুপ্তর কাছে তা খুব কঠিনও নয়। একটু লেগে থাকলেই সব নিয়ন্ত্রণ হয়ে যাবে।

বেশ কয়েকটি প্রদেশের প্রধানদের অর্থের বিনিময়ে কিনে নেওয়া হল। তারপর একদিন সুযোগ বুঝে হল অতর্কিত আক্রমন। নন্দ রাজের সেনাদের পরাজিত করে প্রদেশ স্বাধীন করে দেওয়া হল। পরাজিত সেনাবাহিনীর বিশেষ বদল করা হল না। যারা এতদিন নন্দ রাজের হয়ে কাজ করছিল এখন তারা চন্দ্রগুপ্তের হয়ে কাজ করতে শুরু করল। শুধু প্রধানদের মধ্যে যারা সন্দেহজনক ছিল তাদের সরিয়ে অন্য নির্ভরযোগ্য একজনকে প্রধান করা হল। পুরো এই ক্ষমতা হস্তান্তরের রননীতিতে সাধারণ মানুষের উপর কোন রকম প্রভাব পড়ল না। বরং আইন শৃঙ্খলার উন্নতি ঘটিয়ে এলাকার প্রজাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা হল।

এই নীতিতে একের পর এক প্রদেশ আক্রমন করে অধীনস্থ করা হল। ক্রমশঃ ছোট হয়ে আসতে লাগলো নন্দ রাজ্য।
নতুন রাজ্যে শান্তি আরো বাড়ল। । বাড়ল ব্যবসা বাণিজ্য। উন্নততর হল সেই রাজ্য।
সেই খবর ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ল পাটলিপুত্রে। সেখানের প্রধানদের মধ্যে দেখা দিতে লাগলো বিক্ষোভ। মুখে কেউ কিছু বলছে না কিন্তু ভেতরে ফুঁসছে। তাদের ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালতে লাগলো নন্দ রাজের দুর্ব্যবহার।
যত ছোট হয়ে আসছে নন্দ রাজ্য, তত বেশি হতাশাগ্রস্থ হচ্ছেন রাজা। এমনিতেই ছিলেন অহংকারী। এখন হয়ে উঠলেন রূঢ়। ব্যবহার খারাপ ছিলই, এখন হল জঘন্য। সমস্ত প্রধানরা একজোট হতে শুরু করল রাজার বিরুদ্ধে।

এদিকে আচার্য্য শুরু করেছেন আরেকটি কাজ। গোপনে দেখা করিয়ে দিয়েছেন ধননন্দের কন্যা নন্দনীর সাথে চন্দ্রগুপ্তের। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়ে এমন ব্যবস্থা স্থাপন করে ফেলেছেন। দুজনের একে অন্যকে পছন্দের সেই খবরটা পেয়ে গেছেন আচার্য্য। এবারে প্রেম যাতে হয় গাঢ় সেই সুযোগ তৈরি করলেন।

এহেন এক সময়ে একদিন অস্তি এসে বসলেন এক সরাইখানায়। তখন সূর্যদেব যাচ্ছেন পাটে। একে একে এসে ভীড় করছে বেশ কিছু প্রধান। সন্ধ্যার পুজো শুরু হচ্ছে অনতিদূরের এক মন্দিরে।
ঘন্টা কাঁসর ধ্বনি আসছে ভেসে। সবাই হাতজোড় করে বসে ইস্ট দেবতার স্মরণ করলেন। পুজো শেষের ঘন্টা ধ্বনিতে প্রণাম করলেন একযোগে।

কিছু খাদ্য পানীয় বলা হল।সেগুলো খেতে খেতে চলল আলোচনা। ঠিক হল আর নয় দেরি আজ ভোরের মধ্যেই কাজ হবে সম্পন্ন। শুভস্য শিঘ্রম।

রাত যত বাড়ছে ভীড় বাড়ছে নদী ঘাটে। সাংকেতিক বাক্য হচ্ছে আদানপ্রদান এর মাধ্যম।একেকটা নৌকো ভর্তি হচ্ছে, চলে যাচ্ছে গন্তব্যে। বেশ কিছু নৌকো চলে গেল ওদিকে। ওদিকে রয়েছেন চন্দ্রগুপ্ত আর আচার্য্য।
এদিকের কাজ সামলাচ্ছেন অস্তি। খুব বিশ্বস্ত সেনাদের ডাকা হয়েছে আজকের কাজে। শেষ নৌকায় উঠলেন অস্তি সাথে তার নিজের বিশ্বস্ত কয়েকজন সেনা।

ধীরে ধীরে সব নৌকগুলো ভীড় করল প্রাসাদের গোপন প্রবেশদ্বারে। সাঁতরে পার হলেন চন্দ্রগুপ্ত সাথে কয়েকজন। একটু পেছনে রইলেন অস্তি তার সেনা নিয়ে। যদি সামনে কোন অযাচিত আক্রমন হয় তাহলে অস্তি বাহিনী থাকছে তাদের সাহায্যের জন্য।
না সেরকম কিছ হল না। কয়েক জন নন্দ সেনা ছিল ঠিকই তবে তাদের কব্জা করতে বিশেষ সময় লাগলো না। তাদের বেঁধে পিছমোড়া করে কালো চাদর দিয়ে বেঁধে দেওয়া হল যাতে তারা চিৎকার করতে না পারে আর দেখতে যেন না পারে। শারীরিক দিক দিয়ে কোনরকম ক্ষতি করা হল না। এরকম বিশ্বস্ত সেনা হাতে রাখতে হবে। এরাই শক্তি।

অস্তি যোগ দিল চন্দ্রগুপ্তের দলের সাথে। এবারে অস্তি এল সামনে। প্রাসাদের নকশা তার হাতে।
পথ দেখাচ্ছে সে। চলেছে বাহিনী। কথা হচ্ছে খুব কম। যেটুকু হচ্ছে সবই সাংকেতিক। ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রহরা পেরিয়ে তারা পৌঁছলেন মূল দরজায়।
সেখানে রয়েছে ভালো রকমের প্রহরা। গুনে দেখলেন অস্তি প্রহরাদের সংখ্যা। মোটামুটি যা কথা হয়েছিল সেই রকমই রয়েছে। প্রতি জন পিছু তিনজন বাহিনী হয়ে একযোগে ওদের উপর আক্রমণ করে হল।
আক্রমন না বলে হামলা বলাই ভালো হবে। মুহুর্তের মধ্যে নিরস্ত্র করে মুখে কাপড় গুঁজে পেটের উপর শুইয়ে পিঠের উপর চেপে ধরে হাত বেঁধে ফেলা আর কালো কাপড়ে মুড়ে দেওয়া। সাথে সাথে মূল দরজার চাবিকাঠি নিয়ে হাজির হল এক প্রধান। দরজা খুলে লুট হল সেই কোষাগার। কয়েক মুহুর্তের মধ্যে হল খালি। সব ভরে নেওয়া হল কাপড়ের বস্তায়। একে একে চলল সবাই নৌকোয় ফিরে।

বস্তাগুলো নৌকোয় রেখে ফেরার পথে সমস্ত নন্দ সেনাদের নিয়ে আসা হল কোষাগারের দরজায়।
কোষাগার খালি হলে পরে তাদের সবাইকে ঢুকিয়ে দেওয়া হল ভেতরে। শুধু একজনকে বাইরে রাখা হল। অস্তি বের করলেন এক বিশেষ ওষুধ। খাইয়ে দিলেন তাকে একরকম জোর করেই।
কিছুক্ষনের মধ্যে সে গভীর ঘুমে হল অচেতন। যা অবস্থা হল সকালের আগে ভাঙবে না ঘুম।
কোষাগারের চাবি রেখে দেওয়া হল তার পাশে। প্রধান চলে এল সবার সাথে এদিকে।

রাজা ক্ষমতাচ্যুত হয় তখনই যখন তার নিজের লোকজনেরা তার বিরুদ্ধে যায়। চিরকাল হয়ে এসেছে এটাই। অন্যথা হয়নি।

ভোরে সেই সেনা ঘুম ভেঙে উঠে মুক্ত করে সবাইকে। কিছুক্ষনের মধ্যে মূল প্রাসাদে খবর পৌঁছে যায় লুট হয়ে গেছে কোষাগার।
বিশৃঙ্খলা শুরু হয় চারিদিকে। বেতনভুক্ত সব কর্মচারী, তারা কাজে যেতে নাচার। কোনরকমে সামাল দিলেন নন্দ রাজা। তার পরিচিত বন্ধু রাজ্যের থেকে সাহায্য এল। আপাতভাবে শান্ত হল পরিস্থিতি।

এদিকে এই শিবিরে আনন্দের পরিবেশ। সবাই আনন্দ করছে।

আনন্দিত আচার্য্য। তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলেছে। মন তাঁর পড়ে অতীতে। দরিদ্র তিনি গিয়েছেন নন্দ রাজার কাছে। কোন বসার জায়গা খালি ছিলনা তাই দিন তিনেক বসেছেন রাজার আসনে। প্রহরী বাধা দিয়েছিল। দেখয়েছিল একটি নিচু আসন। বসতে বলেছিল সেখানে। ব্রাহ্মণের সেখানে বসা অপমানের সমান। তাই শোনেন নি তিনি তার কথা। নিজের হাতের কমণ্ডলু রেখেছেন সেই আসনে।
রাজা এসে তার সিংহাসনে বসা দরিদ্র ব্রাহ্মণকে দেখে বিরক্তি প্রকাশ করে প্রথমে প্রহরীকে দিলেন জোর ধমক। তারপর উপহাস করছেন বিষ্ণুগুপ্তকে নিয়ে। উপহাস করেছেন তার রূপ নিয়ে। এমন বিকৃত রূপের কেউ যদি বসে সিংহাসনে তাহলে সিংহাসন তার মর্যাদা হারায়!বিষ্ণুগুপ্তর হৃদয়ে গিয়ে লাগল সেই সমস্ত কথা। উপস্থিত সকলের সম্মিলিত হাসির রোল তার অন্তরকে জ্বালিয়ে দিল।
সেই মুহুর্তে তিনি উঠে পড়লেন।
বললেন- এই অহংকারে পতন হবে নন্দ রাজার। নন্দ রাজা তার উত্তরে যা বললেন- ক্ষুদ্র পিঁপড়ার যেমন ডানা গজালে মৌমাছি হবার বাসনা জাগে। তেমনি এই ব্রাহ্মণের অবস্থা। ব্রাহ্মন বলে কিছু বলছেন না তিনি। নেহাৎ ব্রহ্ম হত্যার ভাগীদার তিনি হতে চান না তাই এযাত্রায় বেঁচে গেলেন বিষ্ণুগুপ্ত।

তবে এরপরে যদি তিনি চেষ্টা করেন নন্দ রাজ্যের ক্ষতি করার তাহলে উড়ন্ত পিঁপড়া যেভাবে উজ্জ্বল প্রদীপে পুড়ে মরে, সেভাবেই বিনাশ হবে বিষ্ণুগুপ্তর।
অপমানিত বিষ্ণুগুপ্ত নিজের শিখা খুলে ফেলেন।
শপথ করলেন শেষ করবেন এই বংশ নিজের হাতে। যতদিন না হচ্ছে ততদিন এই শিখা থাকবে খোলা। ফিরে আসেন তিনি তার কুটিরে। প্রতিদিন সকালে তার কুটিরের সামনে এক জায়গায় তিনি ধীরে ধীরে ঢালেন ফুটন্ত গরম জল। কয়েকদিনের মধ্যেই সব ঘাস মরে গেলে জায়গাটি হয়ে উঠল বিবর্ণ।
শপথ নিলেন বিষ্ণুগুপ্ত যতদিন তিনি থাকবেন এই কুটিরে গরম জল ঢেলে যাবেন। নন্দ রাজ্যের পতন অবধি এক বিন্দু ঘাস তিনি জন্মাতে দেবেননা। প্রতিশোধের আগুন তিনি এইভাবে জ্বালিয়ে যেতে লাগলেন নিজের মনে…

এদিকে আনন্দিত চন্দ্রগুপ্ত ।তিনি রাজা হতে চলেছেন। মনের আশা পূরণ হতে চলেছে। চন্দ্রগুপ্ত ভাবছেন তার ফেলে আসা সময়ের কথা। নিজের কথা।
একটু বড় হতে আচার্য্য দিলেন শিক্ষা। তৈরি করলেন তিনি। তারপর ভর্তি করলেন তক্ষশীলায়। শিক্ষা শেষ হলে পরে জঙ্গলের রাজাদের সাথে কথা বলে আচার্য্য তাকে পাঠালেন গভীর জঙ্গলে। দিনের পর দিন জঙ্গলে পড়ে থাকা। জঙ্গলের শিকারিদের সাথে থেকে যুদ্ধ শেখা। যেকোন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়া।
এরপরে আচার্য্য তাকে নিয়ে গেলেন আলেকজান্ডার এর বাহিনীতে। সেখানে ইউনানী যুদ্ধ বিদ্যা শিখলেন। যা তাকে আরো যোগ্য করে তুললেন।

অবশ্য আচার্য্য কম পরীক্ষা নেন নি। সতীর্থ ছিল পৱত সেও ছিল ধন নন্দের সন্তান। চন্দ্রগুপ্তের মতোই। দুইজন দাসীপুত্রকেই আচার্য্য শিক্ষা দিয়েছেন।
এদের মধ্যে একজনকে আচার্য্য বানাবেন রাজা সেইজন্য পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

চন্দ্রগুপ্ত একদিন ঘুমিয়ে ছিলেন তখন সতীর্থ পৱতকে বলেন তার পৈতে নিয়ে আসতে। পৱত ব্যর্থ হন। একটু পরে যখন পৱত ঘুমিয়ে পড়ে তখন আচার্য্য বলেন চন্দ্রগুপ্তকে একই কথা।
তখন চন্দ্রগুপ্ত মাথা কেটে ফেলেন ঘুমন্ত পৱতের, নিয়ে আসেন তার পৈতে। এরপর থেকে অবশ্য আর পিছু ফিরে দেখতে হয়নি।আচার্য্য এগিয়ে চলেছেন দুর্বার গতিতে সাথে চলেছেন চন্দ্রগুপ্ত।

আনন্দিত অস্তি সে গুরুর কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পেরেছে।
ভেবে চলেছে সে তক্ষশীলাতে শিক্ষার শেষে আচার্য্যের সাথে উত্তরাপথ ধরে ফেরা তার প্রত্যন্ত গ্রামের ঘরে। মা বাবা কে সাথে নিয়ে তার জীবন নতুন করে শুরু হয়েছে ঠিকই তবে সেটা একরকম ভবঘুরে জীবন। এই জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন অস্তির অতি সাধারণ চাষী বাসি বাবা মা। যুদ্ধ বিগ্রহ দুদিন ছাড়া। শিবির তুলে ফেলা। আবার অন্য জায়গায় শিবির ফেলা হচ্ছে।
বড্ড বেশি অস্থায়ী জীবন।এবারে স্থিতু হবে তার জীবন। বাবা মা চায় অস্তি এবার বিবাহ করুক। সংসার জীবনে প্রবেশ করুক।
অস্তিও ভালোবাসে একজনকে।
এরপর মনে হচ্ছে সব ঠিক হবার সময় আসন্ন।

তৎপরতা বাড়ল। জাল গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন তুলে নেওয়ার সময়। আচার্য্য যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন। সৈন্যদল বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অসন্তোষ। সবকিছু ঠিক রাখার জন্য সৈন্যদলের মধ্যে নিয়োগ করতে হচ্ছে গুপ্তচর। এক নয় একাধিক। যাতে সমস্ত খবরাখবর ঠিকঠাক ভাবে কানে আসে।

এইভাবে দিন কাটছে। আচার্য্য, অস্তি, চন্দ্রগুপ্ত কারুর দম ফেলার সময় নেই।আচার্য্য দেখা করলেন রাজা পুরুর সাথে। যে রাজা পুরু যুদ্ধ করেছেন আলেকজান্ডার এর সাথে। নিয়ে এলেন তাকে স্বপক্ষে।
ঠিক হল নন্দ রাজ্য ভাগ হবে দুই ভাগে একভাগ দখল নেবে রাজা পুরু, আরেকভাগ চন্দ্রগুপ্ত দখলে নেবে।

দেখা করলেন বিভিন্ন ছোট ছোট রাজাদের সাথে। কিরাত অর্থাৎ শিকারী গোষ্ঠীর রাজাদের সাথে করলেন গোপন বৈঠক। আনলেন স্বপক্ষে। কম্বোজ, বাহলিক, শক, গ্রীক রাজাদের সাথে বললেন কথা। ঠিক হল এই যুদ্ধে তারা করবে সহায়তা
বিনিময়ে তারা পাবে সুরক্ষা।
চন্দ্রগুপ্ত এবং পুরু দুই পক্ষই তাদের সুরক্ষার ব্যাপারটা দেখে নেবে।

অবশেষে এসে গেল সেই মহেন্দ্রক্ষন।পাটলিপুত্র দখলের যুদ্ধ শুরু হল। সম্মিলিত বাহিনীর বেশ কয়েকদিনের প্রচেষ্টার পরে সম্মুখ যুদ্ধের পরে অবশেষে দখল হল পাটলিপুত্র। নন্দ রাজা হলেন সিংহাসন চ্যূত।সমস্ত মগধ হল করায়ত্ত্ব। অবশেষে রাজা ধননন্দের পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে দখল হল মগধ।

সেদিন রাতে স্নান করে আচার্য্য বাঁধলেন তার শিখা অর্থাৎ টিকি। অবশেষে দীর্ঘ নয় বছর ধরে অল্প অল্প করে তিনি তার লক্ষ্যে এগিয়ে জয় নিয়ে এসেছেন হাতের মুঠোয়। প্রতিজ্ঞা হয়েছে পূরণ।

শিখা বাঁধতে বাঁধতে তিনি ভাবছেন নানা কথামনে পড়ছে তার জয়ের পুরো রাস্তাটার কথা।
মোটেই সুগম ছিল না এই পথ।

এই দীর্ঘ পথে কিছু করতে বাদ রাখেন নি । সাম-দাম-দন্ড-ভেদ সব তিনি প্রয়োগ করেছেন। তাঁর জীবনে যেই এসেছে তাকেই ব্যবহার করেছেন। রাজা মন্ত্রী সান্ত্রী সাধারণ মানুষ কাউকেই ছাড়েন নি। তাঁর তৈরি দুই ঘুঁটি চন্দ্রগুপ্ত এবং অস্তি একজন তার হাত আরেকজন তার কান। সফলভাবে তাদের ব্যবহার করতে তিনি সমর্থ হয়েছেন।
এমনকি মহারাজ ধননন্দ কন্যা রাজকুমারী নন্দিনীকে ব্যবহার করেছেন। তাকে চন্দ্রগুপ্তের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্দরমহলের সমস্ত কথা জানবার জন্য ব্যবহার করেছেন।

প্রতিজ্ঞা পূরণ হয়েছে ঠিকই তবে নতুন বিপদ সামনে উপস্থিত। রাজত্ব দখলে রাখার সাথে সাথে সেই বিপদ এখন সামলাতে হবে।

কোথায় বিষ্ণুগুপ্ত? আর কোথায় আলোচনা। আর তা নিয়ে বিতণ্ডা! ভাবা যায়…

(কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সম্প্রদায়ের জাত্যাভিমানে আঘাত বা আরোপ- এ লেখনীর বিন্দুমাত্র উদ্দেশ্য নয়। যে কোনো প্রকার সাযুজ্য আকস্মিক কিংবা দৃশ্যপট নির্মাণে সংবন্ধিত।)

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।