T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় সন্দীপ গাঙ্গুলী
বৃষ্টিতে একা
ঘুম ভেঙে গেল সোহমের ‘ নব আনন্দে জাগো র’ প্রতিধ্বনিতে।চোখ চলে গেল ব্যালকনির দিকে আনন্দের অনুসরণে, নজরে এল দুটো শালিকের খুনসুটি।আচমকা সোহমের হাত চলে গেল কপালে, হেঁসে ফেলল একমুঠো ছেলেমানুষি মেখে।
দু-শালিকের দর্শনে এমনই কপালে হাত ছোঁয়াতো বৃষ্টি। এ নিয়ে কম রসিকতাও করেনি সোহম- ” এই যে তোমার দু-শালিক” বলে অনেকবার কাকের দর্শনও করিয়েছে।
ব্যালকনিতে চলে এলো সোহম, ততক্ষনে খুনসুটি ছেড়ে শালিক যুগল উধাও। আজ ২৫ শে বৈশাখ- পাশের স্কুলটাতে তার প্রস্তুতি।
চারবছর আগের এক ২৫ শে বৈশাখ বারেবারে ফিরে আসে সোহমের স্মৃতির চৌকাঠে, বহু চেষ্টায় ভাসাতে পারেনা বিস্মৃতির উজানে।
স্কুলের অনুষ্ঠানের সবদায়িত্ব ছিল বৃষ্টির। আগের দিন অনেকবার মেসেজ পাঠিয়েছিল- ‘ বেলফুলের মালাটা কিন্তু ভুলো না।’ ভোরবেলা সোহমের ঘুম ভাঙে বেলফুলের সুগন্ধে। বেলফুলের সুবাসে স্নাত বৃষ্টিকে বলল ” আর দশ মিনিট পরে গেলে হত না,আমার আশার কুঁড়ি প্রস্ফুটিত করে।” ” না মশাই আজ অনেক দেরি হয়ে গেল” বলে বৃষ্টি বেরিয়ে পড়ল রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনে।
আধঘণ্টা পরে অজানা নম্বরের ফোন সোহমের মোবাইলে- বৃষ্টি ঝরে গেল,অটোর সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে। ‘আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে ‘ আবর্তে সোহম ভেসে গেল বৃষ্টির অঝোর ধারায়….
‘ বৃষ্টি ,আমি এখনও রোজ জল দিই ব্যালকনির দুটো বেলফুলের টবে, যদি আবার আসো কোন একলা রাতে অচিনপাখির ডানায়’ সোহম আর কোন গাছ রাখেনি ব্যালকনিতে।
তাদের দু-কামরার ফ্ল্যাটের দেওয়াল জুড়ে থাকে বৃষ্টি ভেজা বেলফুলের জলছবি।