ধারাবাহিক রম্য রচনায় সংযুক্তা দত্ত – ২১

যে কোন ঘটনা যখন স্মৃতি হয়ে যায় তাকে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে বেশ লাগে তাই না?
লকডাউন, ঠিক তেমনি এক সময় ছিল আশেপাশের দুঃসংবাদের কথায় যাচ্ছি না, তবে আমরা এই ভিডিও শুটিংয়ের দারুণ দারুণ মজার মজার ব্যাপার ঘটত।
আমার সেই ছাদ স্টেজ, এবার সময় টা আডজাস্ট করে যেতে হত। যখন কেউ হাঁটবে না বা খেলবে না। আবার অন্ধকার হলেও চলবে না। আমার আর খুশির কাজ ছিল মাঝে মাঝে ছাদে গিয়ে দেখে আসা যে অল ক্লিয়ার আছে কী না?
এরকম একদিন অল ক্লিয়ার দেখে নাচ তোলা হচ্ছে। সময়ের খেয়াল নেই। ঠিক পুজোর পরের সময়, বিজয়া সন্মিলনীর জন্য নাচ দিতে হবে। আবার এই হেমন্তের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে টাইপ টাইমে ঝুপ করে সন্ধ্যে নামে তাই ঝটপট তোলা হচ্ছে ভিডিও।
তা হেন সময় আগমন ঘটেছে আমার গৃহ সহায়িকার। সে এসে দেখে দরজা বন্ধ অথচ নিচে দেখে এসেছে গাড়ি আছে তাই কোথাও যে যাই নি সে ব্যাপারে সে নিশ্চিত। কী জানি কী ভেবে সে উঁকি দিল ছাদে। দেখে ওদনী( তেলেগু ভাষায় বৌদি) ধেই ধেই করে ছাদে নাচছে। সে তো কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।
এদিকে আমি তো থামতে পারছি না একটা মেডলি তোলা হচ্ছে থামলেই কন্টিনিউটির মুশকিল হবে তাছাড়া ওই হেমন্তের ঝুপের চাপ। তাই নাচতে নাচতেই লক্ষ্মী আম্মার দিকে তাকিয়ে, হাত দেখিয়ে অপেক্ষা করতে বললাম, পুরোটাই নাচের মুদ্রার মোড়কে ঢেকে। সে বুঝেছিল, অপেক্ষাও করেছিল এবং তারপর থেকে আমাকে না পেলেই ছাদে পৌঁছে যেত। এখনও ওই নাচটা দেখলেই আমি মুচকি মুচকি হাসি।
তবে সত্যি এই ভাবেই প্রতিটি পরিবেশনায় জড়িয়ে থাকে কত মানুষ আর তাই একটা করে নতুন গল্পের জন্ম হয়।