ধারাবাহিক রম্য রচনায় সংযুক্তা দত্ত – ২৭

ফেসবুকের বন্ধুগন এর মধ‍্যেই আমার পারফরম্যান্স দেখে নিয়েছ আশাকরি। আরে ওই যে বন্ধুর রৌপ‍্য বিবাহবার্ষিকীতে তার বরের চরিত্রে রূপদান, দেখেছ তো সবাই?
আগেই বলেছি,বিয়ের পরেই ইন্দোরে চলে যাওয়া আর কোনমতে নাচ বাঁচিয়ে রাখা ওই মোহিনী রূপী মাধুরির নাচ শিখিয়ে। দেড় বছর পর ফিরলাম কলকাতা, কিছু দিন পর ডাক পড়ল এক অনুষ্ঠানে। পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন এক গূণী নৃত‍্যশিল্পী , আমাকে দেখেই মাথায় চুলে হাত বুলিয়ে বললেন, ” এই তো আমার কৃষ্ণ, শুধু একটু শ‍্যামলা করে নিলেই হবে।”। আমি তো হতবাক, তারপর জানলাম ‘ ভানুসিংহের পদাবলী ‘মঞ্চস্থ হতে চলেছে আর আমার এই ঝাঁকড়া অবাধ‍্য কেশরাশি দেখেই উনি আমায় কৃষ্ণের রোলে ফিট করে দিয়েছেন। এর আগে কোনদিন কোনো পুরুষ চরিত্রে রূপদান করি নি, তাই প্রথমটায় মনে হচ্ছিল আমি হয়ত পারব না। একে তো পুরুষ তাও আবার প্রেমিক শ্রেষ্ঠ কৃষ্ণ, খুব চাপের ব‍্যাপার। ছাড়া পেলাম না, তখন আর কী করি নিয়ে নিলাম চ‍্যালেঞ্জ। “আজও সখী মুহু মুহু, ডাকে পিক কুহু কুহু ” তে রাধিকার সাথে জমিয়ে প্রেমময় দৃষ্টি বিনিময় করার সময় রেফারেন্স হিসেবে রেখেছিলাম আমার ক্লাসের দুষ্টু ছেলে বন্ধুগুলোকে। উতরে গেছিলাম বেশ কৃষ্ণ রূপী আমি।
“আমার ঘরে বসত করে কোনজনা মন জানো না”
তাই আমাদের সবার মনেই তো এক সুপ্ত প্রেমিক বা প্রেমিকা লুকিয়ে থাকে যে খোঁজে মনের মানুষ , আবার পরমাত্মাকে যে খোঁজে মানুষ তাও তো প্রেম। কোথাও যেন কৃষ্ণপ্রেমে মিলে মিশে এক্কাকার হয়ে যায় সব প্রেম।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।