ধারাবাহিক রম্য রচনায় সংযুক্তা দত্ত – ২২

 

অনলাইন জামানার অনেক গুলো চিত্তাকর্ষক ব‍্যাপারের মধ‍্যে একটি ছিল
ফেসবুক লাইভ
প্রথম যখন শুরু হল, ভাবলেই কী অদ্ভূত লাগত। কলকাতা থেকে ব‍্যাঙ্গালোর থেকে দিল্লি থেকে মুম্বাই থেকে আসাম থেকে বিশাখাপটনমের আমি, সবাই যেন পাশাপাশি বসে গল্প করছি। কতকিছু ভাবনা ;লাইট ঠিক মত মুখে পড়ছে কি না? শোনা যাচ্ছে কি না? নেটওয়ার্ক ঠিক আছে কী না? তা কয়েকবারের পর, গল্পগাছার লাইভে মোটামুটি সাবলীল হয়েছি। সেইসময় পয়লা বৈশাখে আয়োজিত একটি নৃত্য প্রতিযোগিতায়(অবশ‍্যই অনলাইন ) দ্বিতীয় স্থান লাভ করলাম। সেই গ্রুপের কর্নধার, খুবই গুণী এক মানুষ ফোন করে বললেন, ” আমাদের গ্রুপের প্রথম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে আপনি নাচের লাইভ করুন।”তার আগে অসংখ্য নাচ পোস্ট করেছি কিন্তু নাচের লাইভ! যাই হোক, আমি নতুন কিছু চেষ্টা করতে সবসময় তৈরী।
নাচ তো প‍্রাক্টিস করে টরে রেডি হলাম কিন্তু চিন্তা হল অনেক গুলো
প্রথমত, কোনখানে স্টেজ হবে? ছাদে তো নেটওয়ার্ক আসবে না।
দ্বিতীয়ত,নাচের গান যে বাজবে তা কী ঠিকঠাক শোনা যাবে?
তৃতীয়ত, সবচেয়ে জরুরি ফোন টা কোথায় রাখব? নাচ তোলার সময় তো খুশি ফোন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তোলে। আধঘন্টা ফোন হাতে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বললে, আমায় ত‍্যাজ‍্য মা করে দেবে। ওনলাইন ক্লাস অথবা গান আবৃত্তির লাইভে তো এত নাচন কোঁদন নেই তাই চিন্তা থাকে না।
যাইহোক জয় মা বলে তো শুরু করলাম নাচের লাইভ। বসার ঘরই স্টেজ , টুলের ওপর টুল তার ওপর মোবাইল, স্মার্ট টিভিতে ইউটিউবে গান আর এই ব‍্যবস্থাপনার নেপথ‍্যে সেই খুশি (কন‍্যারত্ন)। আমার প্রতি পারফরম্যান্সের সময় যা হয় তাই হল, একবার নাচ শুরু করলে আমি অন্য সবকিছু ভুলে যাই। প্রথম নাচ ছিল ” আনন্দধারা বহিছে ভুবনে”। শেষ করতেই হাততালির মতই কমেন্টের বন‍্যা। ব‍্যস আর ভাবতে হয় নি। এরপর আরো অনেক লাইভ করেছি ও করছি কিন্তু এই প্রথম লাইভ নাচের অনুষ্ঠানের স্মৃতি একটু স্পেশাল। তখন ফোন ডি এন ডি করতে জানতাম না। স্পিকার ক‍্যানেকশনও গন্ডগোল হত তবু উৎসাহের ঘাটতি ছিল না। আসলে সেই সময় , এই ভাবেই আমরা বেঁধে বেঁধে থাকতাম।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।