|| শাম্ভবী সংখ্যা ২০২১ || T3 শারদ সংখ্যায় স্বপঞ্জয় চৌধুরী

টি এস এলিয়টের দুটি কবিতা

বোস্টনের সান্ধ্যকালীন চিত্র

যেন নরম আলোয় পাকা ভুট্টা ক্ষেতের মতো
বাতাসে দোল খেতে থাকে।

যখন শহরের রাস্তা জুড়ে নেমে আসে নিথর সন্ধ্যাবেলা,
তখন কারো কারো ভেতরে জাগ্রত হয় জীবনবোধের ক্ষুধা
আবার কেউ কেউ তাতে খুঁজে শৈল্পিক আখ্যান
ঢালু পথ পেরোতে পেরোতে আমি ঘন্টা বাজাই, বাঁক নেই
নিজেকে এলিয়ে দেই যেন ক্লান্তিকর পথে
কেউ একজন রোচেফোকাল্ডকে হাত নেড়ে নেড়ে বিদায় জানাচ্ছে
যদি সময়কে রাস্তার মতো পরিমাপ করা যেতো
তবে পথের শেষে যেন সময়ও থমকে থাকতো
তখন আমি আমার সহোদর হ্যারিয়েটকে বলতাম
এই নাও মুঠোয় পুড়ে নাও বোস্টনের সন্ধ্যার আলোচ্ছবি।

পিসিমা হেলেন বিষয়ক

মিস হেলেন নামের তরুণীটি ছিলেন আমার পিসিমা,
তিনি একটি নান্দনিক চত্বরের কাছে ছোট্ট একটি বাড়িতে থাকতেন।
বাড়ির চারপাশ ‍পরিচারিকা কর্তৃক দেখভাল করা হতো।
এখন তার মৃত্যুর পরে বাড়ির চারপাশে শুনশান স্বর্গীয় নিরবতা বইছে
সে নিরবতা ছাড়িয়ে গিয়েছিল রাস্তার শেষ প্রান্ত অবদি।
মৃতদেহ সৎকারকারী শাটার টেনে নামিয়ে
নিজের ভেজা পদযুগল অপনোদিত করছিলেন
এ ধরনের ঘটনার সাথে তিনি নিয়তই অভ্যস্থ
কুকুরগুলো অত্যন্ত নিপুনতার সাথে বিষয়টিকে সামলে নিয়েছিলেন
খানিক বাদে পিসিমার পোষা তোতাটিও প্রাণত্যাগ করলো।
ড্রেসডেন ঘড়িটি ম্যান্টেলপিসে টিকটিকি শব্দে এগুতে থাকে,
পিসিমারেএকজন ভৃত্য খাবার টেবিলের উপরে বসে
অন্য একজন গৃহকর্মীকে তার হাঁটুর উপর চেপে ধরেছিলেন –
যিনি সবসময় উপপত্নীর মতো গৃহকর্তী পিসিমার দেখভাল করতেন।

টমাস স্টেয়ার্ন্‌স এলিয়ট, ওএম (ইংরেজি: Thomas Stearns Eliot; জন্ম: ২৬শে সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮ সালে সেন্ট লুইস, আমেরিকা – মৃত্যু: ৪ঠা জানুয়ারি, ১৯৬৫ ইংল্যান্ড) ইংরেজি ভাষার একজন , কবি, নাট্যকার সাহিত্য সমালোচক এবং এবং বিংশ শতকের অন্যতম প্রতিভাশালী কবি। তিনি ১৮৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিশৌরির সেন্ট লুইসে জন্মগ্রহণ করেন। তবে মাত্র ২৫ বছর বয়সে ১৯১৪ সালে ইংল্যান্ডে চলে যান এবং ১৯২৭ সালে ৩৯ বছর বয়সে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আর কখনো আমেরিকা ফিরে যান নি। এজরা পাউন্ড ছিলেন টমাস স্টেয়ার্ন্‌স এলিয়ট এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ।ইলিয়ট ১৯১৫ সালের দিকে তার কবিতা দি লাভ সং অফ জে আলফ্রেড প্রুফ্রক এর মাধ্যমে সবার নজর কাড়েন। এই কবিতার পরে তার ঝুলি থেকে একে একে বের হয় বিশ্ববিখ্যাত সব কবিতা। এদের মধ্যে
দি ওয়েস্ট ল্যান্ড (১৯২২) , দি হলো মেন (১৯২৫) ,অ্যাশ ওয়েন্সডে (১৯৩০) এবং
ফোর কোয়ার্টার্স (১৯৪৫) অন্যতম। তার নাটকগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল- মার্ডার ইন দ্যা ক্যাথেড্রাল (১৯৩৫)। আধুনিক সাহিত্যে অভূতপূর্ব অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৪৮ সালে তার বিখ্যাত কবিতা “The Waste Land” জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। “দ্যা ওয়েস্ট ল্যান্ড” কবিতায় তিনি “Indian Literature & Philosophy” এর অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।