কবিতায় শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

ত্যাগপত্র 

ক্রমশ মূল স্রোতের বাইরে সরে যাচ্ছি।
থাকার ইচ্ছাও মরে গেছে তাই।
পরিচিত তট ছুঁয়ে কাটাতে হবে বাকিটা।
জাহাজ হোক বা জেলে ডিঙি –
দৃশ্যপট থেকে হারাক সকলে।
কাজটা কঠিন, তবু স্বেচ্ছা অন্তরীণ
হতে না পারলে হয়তো আটকে যাব কচুরিপানায়
ভাসার আকুল আর্তি নিয়ে।
নিজেরই হয়তো সব দোষ।
হয়তো অধিক ব্যাকুলতা —
সবকিছু ঠিকঠাক পরিধিতে চাই।
প্রিয় স্বরে বিরক্তি জমে ওঠে তাই।
সাড়াহীন ইচ্ছাকৃত, আমি ডেকে যাই।
বেঠিক তো ঘটে চলে ব্রাউনীয় বিশৃঙ্খলাকে
অমোঘ নিয়তির মতো মেনে। চলুক।
হয়তো নিজেকে বধের প্রহরণ নিজেই তুলে দিই।
কী করি, জীবনে মেঘনাদ কম তো দেখিনি।
রজ্জুতে সর্পভয় আর সহ্য নয়
বরং উত্তরীয় অকস্মাত্ ছোবল দিক,
যেমন দিয়ে এসেছে এতকাল।
মরদেহ হয়ে আর ভেসে থাকা নয়
সাগর সঙ্গম যখন জানি পরাহত।
সপ্তডিঙা ভেঙে গেছে, জেলে ডিঙি নিয়ে
কতদূর বলো আর দিতে পারি পাড়ি?
স্রোতে তো শবও ভাসে, ভাসে ঘরবাড়ি।
কচুরিপানায় আটকে প্রবাহে অশ্রুমোচনের চেয়ে
চেনা তটে উঠে এসেই বরং হাঁফ ছাড়ি।
অন্তত সৎকার তো পাব।
দুটি মুখ আজ যারা অনুযোগে লাল,
সেই চোখ চারখানিই জলেও লাল হবে।
Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!