T3 || ১লা বৈশাখ || বিশেষ সংখ্যায় সপ্তর্ষি বসু

বসন্ত এসে গেছে

‘বসন্ত এসে গেছে,বসন্ত এসে গেছে…’সেই ভোর বেলা থেকে এই একই গান ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কত বার যে শুনলেন নিরুপমা,তার হিসেব নেই।প্রতি টা এফ.এম চ্যানেলে ঠিক গোটা দশেক গান পরেই এক বার করে,এই গানটা শোনাচ্ছে।আর পাঁচটা উৎসবের মতো দোল উৎসবেরও বেশ কিছু পেটেন্ট গান আছে।পুরনো গান গুলোকে পিছনের সারিতে ফেলে দিয়ে এই ‘বসন্ত এসে গেছে’ গান টা শেষ কয় বছর বসন্ত কালের জাতীয় সংগীত হয়ে উঠেছে।গানটা যে খারাপ তা নয়,কিন্তু একই গান আধ ঘণ্টা অন্তর শুনতে কাঁহাতক ভালো লাগে?বিরক্ত হয়ে,রেডিওর চ্যানেল চেঞ্জ করে দিয়ে,নিরুপমা জলখাবার বানাতে রান্না ঘরে ঢুকে গেলো।‘রং বর্ষে ভিগে চুনারিয়া…’
নীল জলখাবার খেয়ে বন্ধু দের সাথে দোল খেলতে বেরিয়ে যাওয়ার পর,নিরুপমা মন দিয়ে ইস্ত্রি করছিলো।হঠাৎ একটা শোরগোল শুনে ইস্ত্রি থামিয়ে,বারান্দায় এসে দাঁড়ালো।পুঁচকির বাড়ির সামনে বেশ কয়েকটা ছেলে-মেয়ে জড়ো হয়েছে।ওর কলেজের বন্ধুরা বোধ হয়।নাম ধরে জোরে জোরে ডাকছে,’বেরিয়ে আয়।আজ তোকে রং না মাখিয়ে আমরা এক পা-ও নড়ছিনা।’ পুঁচকি দীর্ঘ প্রতিরোধ শেষে বাধ্য হয়ে বেরিয়ে এলো।সবার হাতে রং মাখলো এবং শেষে সেও ওই দঙ্গল এর সাথে হৈ হৈ করতে করতে বেরিয়ে গেলো।নিরুপমা ভাবলো,সত্যিই আজ মানুষ বদলেছে।মানুষ রক্ষণশীলতার গণ্ডি ডিঙিয়ে অনেক উদার হয়েছে।ইস,সে যদি আজকের দিনে জন্মাতো তাহলে হয়তো তার জীবনটা অন্য দিকে বইতে পারতো।
ছোড়দার বন্ধু সফিকুল ইসলাম।পড়াশোনায় তুখোড়,মাধ্যমিক,উচ্চমাধ্যমিক দুটোতেই স্টার পেয়ে এবার কলকাতায় ডাক্তারি পড়তে যাবে।ছয় ফুট লম্বা,বাবরি চুল,দুধের মত গায়ের রং,হাসলে বাঁ গালে টোল পড়ে।রাজদূত বাইকটা নিয়ে সে যখন শ্যামপুরে পাক খেত,হেন কোনো মেয়ে নেই যে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতো না।সেই ক্যারিশমাটিক ছেলেটা নিরুপমাকে ভালোবাসতো।বিদ্যাধরী কন্যা উচ্চ-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাইরে প্রতি দিন নিয়ম করে এসে দাঁড়িয়ে থাকতো।কথা বলার জন্য ছুঁক ছুঁক করতো।সব বন্ধুরা বলতো,’তুই কি রে,যার জন্য সবাই পাগল,তুই তাকে পাত্তা পর্যন্ত দিচ্ছিস না।রূপের এত দেমাক কিন্তু ভালো নয় নিরু।’নিরুপমা বন্ধু দের কথা গুলো এড়িয়ে যেত।কোনো উত্তর দিতো না।নিরুপমা তো আগে কতবার সফিকুল দার সাথে কথা বলেছে।কই ভয় পায়নি তো।কিন্তু সফিকুল দা প্রপোজ করার পর থেকে সে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেছে।কারণ সে জানত,তার বাবা শ্যাম পুরের এম.এল.এ শ্রী অমূল্য রতন চ্যাটার্জি কি ধরনের মানুষ।ওই রকম একটা ধর্ম প্রাণ,রক্ষণ শীল মানুষ সফিকুলের সাথে তার সম্পর্ক কোনো দিন মেনে তো নেবেই না,উল্টে অনর্থক কিছু করে বসবে।তাই নিরুপমা নিজের এবং সফিকুলের হিতার্থে নিজের প্রেমানুভুতি লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছিল।
নিরুপমা শুধু বাবার ভয়ে তার থেকে এমন দূরে দূরে থাকছে,কোথাও থেকে সফিকুল এ কথা জানতে পেরে,একদিন বাইক নিয়ে একদম নিরুপমার সামনে এসে ল্যান্ড করেছিল।স্কুল ছুটির পর নিরুপমা সেদিন একাই ফিরছিল।আগেও অনেক দিন সে একা ফিরেছে,সফিকুল দূর থেকে বাইক নিয়ে ঘুর ঘুর করেছে,কিন্তু আজকের মত এত কাছে…নিরুপমার বুক দুর দুর করছিলো।কেন এমন ভাবে এগিয়ে আসছে,সফিকুল দা?কি বলবে?উল্টো পাল্টা কিছু করে বসবে না তো?হাজারো প্রশ্ন এবং চাপা উত্তেজনা নিয়ে নিরুপমা পাথরের মূর্তির মত চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল।সফিকুল বাইক থেকে নেমে একদম সামনে চলে এসেছিলো।চোখ থেকে সান গ্লাস টা নামিয়ে সে তার ব্যারিটোন গলায় সাবলীল ভাবে বলেছিলো,’ নিরু আমি জানি তুই আমায় ভালবাসিস।কিন্তু,তুই জেঠুর ভয়,এগোতে পারছিস না।চিন্তা করিস না,আমি জেঠুর থেকে মত নিয়েই তোকে বিয়ে করবো।পরশু দোল,সে দিনই আমি তোর বাড়ি গিয়ে জেঠুর থেকে অনুমতি নিয়ে তোকে আবির মাখিয়ে আসবো।তুই তৈরি থাকিস।‘ নিরুপমা বলতে যাচ্ছিল,না সফিকুল দা দয়া করে ওই ভুলটা করো না।কিন্তু,তার গলা দিয়ে সেদিন কোনো শব্দ বেরোয় নি।যে ভাবে এসেছিলো,ঠিক সেই ভাবেই শেষ বিকেলের আলোয় ধুলো উড়িয়ে সফিকুল ‘রাজদূত’ নিয়ে উড়ে গেছিলো।

কথা রেখে ছিল,সফিকুল।দোলের দিন নিরুপমাকে বাড়ি বয়ে রং মাখাতে এসে ছিল।বলাই বাহুল্য অমূল্য বাবু ছোকরার সাহস দেখে অবাক হয়ে ছিলেন।বাড়ির ছেলে পুলেরা সফিকুলকে সেদিন মেরে পুতেই দিত যদিনা ছোড়দা গিয়ে কোনো ক্রমে তাকে বাঁচাত।সেদিনের পর নিরুপমার আর বাড়ির বাইরে বের হওয়া হয়নি।সে যা ভেবে ছিল হয়েছিল ঠিক তাই।স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে,মাত্র এক বছরের মধ্যে তার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়ে ছিল।সফিকুল দার সাথে তার আর কোনো দিনও দেখা হয় নি।নিরুপমা জানতে চায়নি,আর ছোড়দাও কোনো দিন সফিকুলের ব্যাপারে কিছু বলেনি।
প্রায় ত্রিশ বছর হয়ে গেল,কিন্তু এখনও মনে হয় যেন এই সেদিন কার ঘটনা।লোকে বলে প্রথম প্রেম ভোলা যায় না।ধ্রুব সত্য!নিরুপমা কি আজও সফিকুল দা কে ভুলতে পেরেছে?না,পারেনি।এখনো মাঝেই মাঝেই খুব জানতে ইচ্ছা করে সফিকুল দা এখন কোথায় আছে ?কি করছে?সে কি নিরূপমাকে একদম ভুলে গেছে?না কি তার মানস পটে মাঝে মাঝে নিরুপমা আজও ক্ষনিকের জন্য ভেসে ওঠে।সফিকুল দা কি…
টিং টং।কলিং বেলের শব্দে নিরুপমার চিন্তার সুতো ছিঁড়ে গেল।পাশের ফ্ল্যাটের সুজাতা মনে হয়,সত্য নারায়ণ পুজোর প্রসাদ দিতে এসছে।নিরুপমা তাও স্বভাব বশত এক বার কে বললো,ব্যারিটোন গলায় উত্তর পেল,আমি।অচেনা কণ্ঠস্বর। তাই নিরুপমা এবার আই হোলে চোখ রাখল আর দেখল একজন বছর পঞ্চাশের প্রৌঢ় ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছে।প্রায় ছ’ফুট উচ্চতা,ফর্সা,মাথায় টাক,চোখে চশমা,ক্লিন সেভড।এক ঝলক ভদ্রলোককে দেখেই নিরুপমার মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল।নিরুপমা আর ভাবতে পারছে না।তার সব কিছু তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।সে বিহ্বল হয়ে,প্রস্তর মূর্তির মত স্থাণুবৎ দাঁড়িয়ে আছে।তার হাতটা দরজার লক পর্যন্ত উঠছে না।সে কি কোনো স্বপ্ন দেখছে।এও কি হয়?বলা নেই কওয়া নেই দীর্ঘ ত্রিশ বছর বাদে একদিন হঠাৎ তার কৈশোর বেলার রাজকুমার এই ভাবে সামনে এসে হাজির।গেটের বাইরে থেকে আবার ব্যারিটোন গলা ভেসে এলো,কি রে দাঁড়িয়েই থাকবি না,দরজাটা খুলবি।নিরুপমা এবার,’হ্যাঁ হ্যাঁ’ খুলছি বলে সফিকুল ইসলামকে দরজাটা খুলে দিল।
-চিনতে পারছিস?
-চিনতে পারবো না কেন?একটুও তো বদলাও নি। নিরুপমা ভিতরের উথাল-পাতাল টাকে চাপা দিতে চাইল,কিন্তু কথা গুলো যেন একটু জড়িয়ে গেল তাঁর।
-যাক বাবা।তাহলে মুখটা ভুলে যাসনি।
নিরুপমার মনে হলো সফিকুল দা এতো সাবলীল ভাবে কথা শুরু করেছে যে,মনেই হচ্ছেনা তারা এতো গুলো বছর বাদে মুখোমুখি হয়েছে।তাই এবার সেও জড়তা ছাড়ানোর চেষ্টা করলো,‘কি যে বলো!কেমন আছো?
-এই চলে যাচ্ছে রে।তুই কেমন আছিস?ফ্ল্যাটে ঢুকে সফিকুল সোফায় এসে বসেছে।
-ভালো।
-নীলকে দেখছি না।রং খেলতে বেরিয়েছে?
-আমার ছেলের নাম কি করে জানলে?
-শুধু তোর ছেলের নাম?তোর ব্যাপারে সব জানি।
-যেমন।কৌতূহলী হয়ে নিরুপমা জিজ্ঞাসা করলো।
-যেমন,তোর বর পরিতোষ রায় রেলে চাকরি করতেন।ম্যাসিভ স্ট্রোকে তিন বছর আগে মারা গেছেন।তোর ছেলে সফট ওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সল্ট লেকে এক বিখ্যাত সংস্থায় চাকরি করে।তোরা আগে পাইকপাড়ায় থাকতিস,বছর দশেক আগে বাগুইহাটিতে এই ফ্ল্যাটটা কিনে এসেছিস।
-বাবা,তুমি তো সব জানো।ছোড়দা নিশ্চয়ই।
-উহু,সোর্স বলা যাবে না।
-আমাকে যে ট্র্যাক করে গেছ তা তো বুঝলাম।এবার তোমার ব্যাপারেও কিছু বলো।
-কি বলবো।কিছুই তেমন বলার নেই।
-কেন,তোমার বউ ছেলে মেয়ে।
-ধুস, বিয়েই করিনি।
কেন জানতে চাওয়া অনধিকার চর্চা হবে জেনেও নিরুপমা নিজেকে আটকাতে পারলো না,জিজ্ঞাসা করেই ফেললো,কেন?
-কেন,আর নতুন করে এই বয়সে এসে কি বলবো।তাও তুই শুনতে চাইছিস যখন বলি।
-তোমার অসুবিধা থাকলে বলো না,নিরুপমা ভদ্রতা দেখিয়ে বলল।
-না,অসুবিধা আর কি আছে! দীর্ঘ ত্রিশ বছরের মিসিং লিংক টা তো তোরও জানা উচিত।সেই দিন মরেই যেতাম,যদি না তোর ছোড়দা থাকতো।বাড়ি ফিরে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য উতলা হয়ে উঠেছিলাম।গোটা কতক লোক নিয়ে আসছিলাম,ঝামেলা করতে।আব্বু নিরস্ত করে।বোঝায় যে,আমার প্রত্যুত্তর শুধু শ্যামপুরের গণ্ডিতে আটকে থাকবে না;বিধ্বংসী আগুন হয়ে,দিক্বিদিক ছড়িয়ে পড়বে।সেই পরিণতির ভার বহন করা তখন সহজ হবে না।ঠিক করলাম,তোকে নিয়ে পালাবো।জবরদস্ত প্ল্যান করেছিলাম।এর মধ্যেই একদিন হঠাৎ আব্বু মারা গেলো।আম্মি,পাঁচ বোন আর এক ভাইয়ের দায়িত্ব ঘাড়ে এসে পড়লো।নিজের কথা ভাবলে ওরা ভেসে যাবে,তাই কলকাতায় আব্বুর দোকান সামলাতে চলে এলাম।একদিন শুনলাম,তোর বিয়ে হয়ে গেছে।ব্যাস,আর শ্যাম পুরে ফিরি নি।গোটা পরিবারকে কলকাতায় নিয়ে এলাম।আব্বুর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ডাক্তারিতে ভর্তি হলাম।ভাই সকালে দোকান সামলাত আমি ডাক্তারি পড়তাম।একদিন ডাক্তার হলাম।প্র্যাকটিস শুরু করলাম।বোনে দের বিয়ে দিলাম,ভাইকে আরেকটা দোকান করে দিলাম।সবাই এখন সুখে আছে।ভালো আছে।ব্যাস আর কি চাই।
-আর তুমি?তুমি ভালো আছো,সফিকুল দা।
-হ্যাঁ,খারাপ কেন থাকবো।একা আছি বিন্দাস আছি।
-তুমি তো বিয়েটা করে নিতে পারতে।এই ভাবে গোটা একটা জীবন একা কাটানো যায়?
-প্রেম ভালোবাসা জীবনে এক বারই হয় রে।বাকি গুলো শুধু অ্যাডজাস্টমেন্ট।পুরনো দিনের চিন্তা ধারা বলতে পারিস।
নিরুপমা খুব ভালো ভাবে জানে সে কথা।কিন্তু,একটা ছেলের যা স্বাধীনতা থাকে একটা মেয়ের কি সেই স্বাধীনতা থাকে?সে কি চেয়েছিল বিয়ে করতে?না।তাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়ে ছিল। সেই সময় ঘরে ঘরে এই প্র্যাকটিস টাছিল।মাত্র ষোলো বছর বয়সে সে সেই সিস্টেমের বলি হয়ে ছিল।সফিকুল দা আজ কি সেসব বিশ্বাস করবে?না,করবেনা।চা খাবে তো? নিরুপমা প্রসঙ্গ ঘোরানোর জন্য বলল।
-তুই তো জানতে চাইলি না,আজ হঠাৎ এত বছর পর আমি কেন এসেছি।
সত্যিই তো এত বছর বাদে সফিকুল দা হঠাৎ আজ এলো কেন,নিরুপমার মনে এই প্রশ্ন এলেও ভদ্রতার খাতিরে সে কিছু জিজ্ঞাসা করেনি।ত্রিশ বছর বাদে জীবনের প্রথম এবং একমাত্র প্রেমিককে সামনে পেয়ে কেউ কি জিজ্ঞাসা করতে পারে,এত বছর বাদে,হঠাৎ কি মনে করে? না করা যায় না।নিরুপমা আলতো হেসে বললো,এমনিই এসেছ হয়তো।সব কিছুর কি কারণ থাকতে হয়।
-না,এমনি আসিনি।দরকারে এসেছি।কিন্তু তার আগে একটা কথা বলবি।সফিকুল সোফা ছেড়ে উঠে নিরুপমার একদম কাছে চলে এসেছে।
-কি ? প্রবল উত্তেজনায় নিরুপমার গলাটা একটু কেঁপে গেলো।
সেই ত্রিশ বছর আগের এক বিকেল বেলা সফিকুল দা যে ভাবে,ঠিক যে টোনে কথা গুলো বলেছিলো,ঠিক অবিকল সেই একই গলার স্বরে চোখে চোখ রেখে এবার বললো,জানিস,আগেও বহু বার ভেবেছি,সাহস করে তোর সাথে দেখা করবো।কিন্তু পারিনি।এদিকে বয়সও তো বাড়ছে,কবে কি হয়ে যায়।তাই ভাবলাম জীবন তো একটাই,অপূর্ণ সাধ রেখে মরবো কেন?তার থেকে যাই,একবার।যদি চিনতে না পারে,নয় ফিরে আসবো।চেষ্টা তো করেছি,এই নয় সান্ত্বনা রইলো।একটু থেমে সফিকুল বললো,একটা আবদার করবো আজ না বলতে পারবি না।
নিরুপমা মন্ত্র মুগ্ধের মত চোখ না নামিয়েই দু দিকে ঘাড় নাড়িয়ে বলল,না।
সফিকুল পকেট থেকে একটা ছোট প্লাস্টিকের ক্যারি ব্যাগ বের করে,তার থেকে একটা বহু পুরনো ঠোঙা বের করলো।
-কি আছে ঠোঙায়??নিরুপমা প্রশ্ন করলো।
-পঁয়তাল্লিশ বছর আগে তোকে মাখাতে না পারা সেই আবির ;যত্ন করে রেখে দিয়েছিলাম।ভেবে ছিলাম,যদি কোনো দিন তোর সাথে দেখা করার সাহস যোগাতে পারি,তাহলে তোকে…
নিরুপমা সফিকুলের কথা শেষ হওয়ার আগেই তার গোলাপি আবির ভরা দুটো হাত নিয়ে নিজের দুগালে ঘষে দিয়ে,সফিকুল কে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করলো।
‘বসন্ত এসে গেছে,বসন্ত এসে গেছে…’ রেডিওতে আবার গানটা বাজতে শুরু করেছে।তবে,এবার আর নিরুপমার দৌড়ে গিয়ে চ্যানেলটা চেঞ্জ করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করল না।বরং তার প্রাণ ভরে গানটা শুনতে ইচ্ছা করছিলো;সর্বোপরি,এই প্রথম তার জীবনে সত্যি সত্যিই বসন্ত এসেছে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।