সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ৮৬)

রেকারিং ডেসিমাল

ডাক্তার পুত্রবধূ, দুই ছানার মা অনেক ছোটবেলায় বাবা মা পিসিমাদের সঙ্গে বেনারস গিয়েছিল।
আবছা মনে পড়ে।
আর কি রকম ভেতরে গুনগুন করে মা-বাবার আলোচনার শব্দেরা মাথার মধ্যে।
….তীর্থের দেবতা না চাইলে কখনও তীর্থে যাওয়া যায় না।
…কাশী বিশ্বনাথ দর্শন বহু ভাগ্যে হয়। চাইলেই যাওয়া যায় না।

সে, সব দ্বিধা কাটিয়ে মন ঠিক করে ফেলে।

দিদি ক্লাস টু, আর ভাই নার্সারি টু। এত্ত উঁচু ক্লাসের হাফ ইয়ারলি পরীক্ষার রেজাল্ট না পেলে কিচ্ছু যাবে আসবে না।
সে গম্ভীর মুখে ফরমান জারি করে, যাওয়া হবে।
ট্রেন, হলি ডে হোম, গিয়ে ঘুরবার গাড়ি সব ঠিক হয়ে গেছে।
একেবারে শেষ দিন অবধি ইস্কুল পরীক্ষা বাকি রাখবে কি করে জানবো?
যাক গে যাক। বাকি পরীক্ষার নম্বর ত পাবে?
কি আছে। প্যাকিং শুরু করো দেখি।

গাইঁগুই চলতে থাকে বাড়িতে। কিন্তু বাবা মা সে সবে কান দেন না। পুরোদমে প্রস্তুতি চলে বেড়ানোর।
মাঝে একটু শুকনো কাশি হচ্ছিল শ্বাশুড়িমায়ের।
ছেলে বকে অস্থির।
আরে মোটু, কি করে এত কাশি বাধালে? এদিকে বেড়ানোর সখ ওদিকে ঘ্যাং ঘ্যাং। কি করে যাবে।
বউমা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সিনিয়র ডাক্তারকে দেখিয়ে আগাপাশতলা চেক আপ করায়। চেস্ট এক্সরে, আল্ট্রাসাউন্ড, সব দেখে ডাক্তার বললেন, ঠিকই আছে, ঘুরে আসুন।
চওড়া হাসি কান ছুঁয়ে ফেলে শ্বাশুড়ির।
বাবু, এই বারে যাবই রে।

শরৎকাল এসেছে। ফুরফুরে চারদিক।
ছোটরা প্রথমবার ট্রেনে রাত কাটাতে হবে ভেবে উত্তেজিত।

মা জিনিসপত্র সুটকেসে ভরে।

জয় মা অন্নপূর্ণা। কাশী নাকি তাঁরই রাজত্ব।
সোনা রুপোর কুচি কুচি বেল পাতা বানিয়ে নিয়েছে মা। বিশ্বনাথ আর অন্নপূর্ণা মন্দিরে দেবে বলে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।