সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ৯১)

রেকারিং ডেসিমাল

ভাগাতোর, মিরামার, পুরোনো পর্তুগীজ পাড়া, চার্চ, দুর্গের মত, ব্যাসিলিকা অফ বম জেসাস, দেখে মুগ্ধ হয় চার জন।

পুরোনো লাইটহাউস কি রকম গায়ে কাঁটা দেয়া।

এক দিন বোট ক্রুইজে গোয়ানিজ গানের সাথে দোতলার ডেকে নাচ। নৌকো চলতে থাকে মাণ্ডভীর উজানে।
দুই ছানার কি উৎসাহ আর কি নাচ!

কোঙ্কানি নাচের জুটিরা হাত ধরে সামনে নিয়ে যায় এদের দেখে। কি আল্লাদ সবার!

সবচেয়ে আশ্চর্য আর রোমাঞ্চিত হয়েছিল দুই ছানা স্পাইস আইল্যান্ডে যাবার সময়।
মস্ত মোটরবোট এসে দাঁড়াল জেটিতে। মানুষদের টিকিট কাটা হল। সবাই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে উঠবে বলে। হঠাৎ, একটা পাটাতন নেমে এল বোটের পিছন থেকে। আমাদের মারুতি ভ্যান গড় গড় করে উঠে গেল নৌকায়। তারপর পাটাতন ও ভাঁজ হয়ে ঢুকে পড়ল নৌকোয়।
যা উত্তেজিত হল বাচ্চারা, সে আর বলবার নয়।

সারা দিন এইসব করে রিসর্টে ফিরে দিদি তবু শক্ত হয়ে মা বাবার মাঝে বসে বুফে ডিনার খেয়ে শেষ করে।
ভাই ত মায়ের কোলে ঘুমে কাদা।
তাকে সেরেল্যাকের বদলে ডেজার্ট যা থাকে চামচ করে খাওয়ানোর প্ল্যান থাকে মায়ের।
পায়েস, কাস্টার্ড বা অসাধারণ ভালো গাজর কা হালোয়া এক বাটি খেলেই খোকার রাত কাবার হয়ে যায়।
প্রথম দিন মা অসহায় ভাবে হাতে বাটি আর কোলে ঘুমে ঢুলে পড়া ছেলেকে নিয়ে এদিক ওদিক তাকাতেই স্টুয়ার্ড এসে খুব নিচু স্বরে বলেছিলেন, ম্যাম, টেক দা বোল উইথ ইউ। বেবি খা লেনে কে বাদ রুমকে বাহার বোল রাখ দিজিয়ে গা। স্টাফ উইল পিক ইট আপ ফর ইউ।

মা বুড়ো বয়েসেও তাকে মনে মনে ধন্যবাদ জানান।
এই রকম স্নেহময় মানুষদের চিরকাল চারপাশে পাওয়া গেছে বলেই না জীবন এত মিষ্টি, নানান ওঠানামা সত্ত্বেও।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।