সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ৫৯)

রেকারিং ডেসিমাল

জগদ্ধাত্রী পুজো এসে গেল কালি পুজো ভাইফোঁটার পর। 
আগে কলকাতায় পুজো আরও কম হত। 

আকাশপ্রদীপ হাতে মায়ের শেখানো মন্ত্র বলেন রূপোলি চুলের ডাক্তার। 
দামোদরায় নভসি তুলয়াং লোলয়াসহ
প্রদীপন্তে প্রযচ্ছামি নমো অনন্তায় বেধসে। 

কার্তিক মাসে প্রদীপ জ্বালাতে শিখিয়েছিলেন মা। 
এই সময়েই হিম পড়ে। 

এমন দিনেই শ্বশুর বাড়ি গিয়েছিলাম,  মনে পড়ে পুরোনো হওয়া বউয়ের। 

সেই সাথে মনে পড়ে একই দিনে ছোট দেওরের ও বিয়ে হয়েছিল। সেজ পিসিমার ছোট ছেলে। 
তার বউ ও বাবা মায়ের একটিই সন্তান। খুব আদুরে ছিল। মা অফিস করতেন তার ও। 
সবাই মিলে সাজার কি ঘটা। 
হ্যা হ্যা করার চোটে মায়ের দেয়া কোমরের রুপোর চাবির গোছাখানা রাস্তায় হারিয়েছিল ডাক্তার বউ। 
তাও কি কোন কমতি হয়েছে আড্ডা?  
উঁহু। 
কেবল, এবেলা কি পড়ব, আর ওবেলা কি পড়ব। 
আবার বাচ্চারা সঙ্গে। কাজেই তাদের সাজ। কর্তার তসরের পাঞ্জাবীর পাশে দিয়ে নিজের বালুচরি কাজ করা চাদর সরু করে ভাঁজ দিয়ে এক পাশে পিন করে দেবার কেতা। 
চুল বাঁধার রকম। আই লাইনার লিপিস্টিক গয়না, উফ। হই হই হই। 

আর এ ওর পিছনে লাগা। 
মাঝে মধ্যে ছোটরা খিদে পেলে ঘুর ঘুর করে। 
বউমনি, বৌদি, মামি, পয়সা দাও না। চিপ্স কিনি, কোল্ড ড্রিংকস খাই, ফুচকায়ায়া..
এই টুকু দিতে আর খেতে কি আল্লাদ যারা এমন ছোটকাল না পেয়েছে টের পাবে না। 
আর তারপর নতুন বউ আর বরের পিছনে লাগা ?  
সে অনাবিল আনন্দের কি কোন তুলনা হয়? 

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।