ছোট্ট সংসার—
একমাত্র সন্ততি আর কলাবউকে নিয়ে মা থাকেন।
যুদ্ধ শুরু হলে শঙ্খচিল চলে যায় মুক্তিযুদ্ধে
যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত;
যুদ্ধের মাঝখানে একদিন এসেছে মাকে দেখতে
এসে দরজায় নক করলোঃ
মা মা দরজা খোলো
শব্দটি মায়ের কর্ণকুহরে পৌঁছোয়নি
ওপাশ থেকে মা শুনতে পেলেন দুড়ুম দুড়ুম আওয়াজ!
সেই থেকে শঙ্খচিলের মা ডাকটি নেই বিধবা গরীয়সী মায়ের পর্ণকুটিরে
সকালে ঘুম থেকে উঠে দূরবর্তী বাড়ির পোড়া ঘরের এক নিভৃত জায়গায়
মা তার তনয়ের বুলেটবিদ্ধ দলিত দেহ, রক্তাক্ত শার্ট আর পকেটে
একটি চিঠি পেলেনঃ
যেখানে শঙ্খচিল লিখেছে—
“তার জন্য চিন্তা না করতে, তার মায়ের শরীরের যত্ন নিতে,
ঘরে থাকা তার সন্তানসম্ভবা বউকে দেখে রাখতে আর মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে।”
লিখেছে— “জয় বাংলা, বাংলার স্বাধীনতা অনিবার্য।”
শঙ্খচিলের চিঠি বেদনার্ত বিধবা মায়ের কাছে
যুদ্ধদিনের কষ্টের একখণ্ড লাল-সবুজের বাংলা;
শঙ্খচিলের থুড়থুড়ে মা হয়তো আজো বেঁচে আছেন,
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটেন পাহাড়সম অপত্য শোক
বুকে নিয়ে…
তার যুদ্ধদিন আর ফুরোয় না…
বুকে বাঁধা পাথর…।