কর্ণফুলির গল্প বলায় রবীন জাকারিয়া

নাট্যকার সজিব

আমাদের বাড়ির পাশেই এ শহরের এক নামজাদা ব্যক্তির বাড়ি৷ এক অতি সাধারণ তথা নিম্ন মধ্যবর্তি পরিবারে তাঁর জন্ম৷ আর্থিক সংকটের কারণে দশ ভাই-বোনদের কেউই উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারেনি৷ ছোট বেলায় পিতার আকস্মিক মৃত্যুতে গোটা পরিবারটাই অসহায় হয়ে পড়ে৷ শহরে নিজেদের বাড়িটুকু ছাড়া আর কোন সম্পদ কিংবা উপার্জনের পথ ছিল না৷ তাই বড় তিন ভাইকে জীবন-জীবিকার সংগ্রামে নামতে হয়৷ মা-সহ আরো চার ভাই ও তিন বোনের আহার জোটাতে হবে৷ লেখাপড়া শেখাতে হবে৷ অনেক দায়িত্ব৷ তিনি পিতা-মাতার দ্বিতীয় সন্তান৷ অতএব অন্য দু’ভাইয়ের সাথে মেধাবী ছাত্রটাকেও লেখাপড়ার পাঠ চুকাতে হলো৷ নাম তাঁর সজীব৷ সকলের কাছে নাট্যকার সজীব নামে পরিচিত৷ সজীব অর্থ প্রাঞ্জল অথবা সুস্থ-স্বাভাবিক হওয়ার কথা৷ কিন্ত তার ক্ষেত্রে ঘটেছে ভিন্ন৷ দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার শরীরে ধরা পড়লো মরণ ব্যাধি কুষ্ঠ৷ প্রথম অবস্থায় এটা কেউ জানতো না৷ মনে করেছিল সাধারণ কিছু৷ রোগ-শোকতো থাকবেই৷ তবে এতটা জানতে পারেনি৷

তিনি লেখালেখি করতেন৷ কবিতা, গল্প, গান৷ বেশি পছন্দ করতেন নাটক লিখতে৷ সে সময় আমাদের দেশে নাট্যকারের প্রচন্ড অভাব ছিল৷ তাই ভারতীয় লেখকদের স্ক্রিপ্ট দিয়ে মঞ্চ নাটকগুলো হতো৷ এরপর দেশে অনেক গুনীজন সে ঘাটতি পূরণ করেন৷ বাদল সরকার, সেলিম আল দীন, সৈয়দ শামসুল হক, মামুনুর রশীদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এস এম সোলায়মান প্রমুখ৷ কিন্ত তাঁরা ছিলেন জাতিয় পর্যায়ে৷ আঞ্চলিক পর্যায়ে চোখে পড়ার মত তেমন কেউ ছিল না৷ এমতাবস্থায় রংপুরের মত মফস্বল শহরে তাঁর নাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়লো৷ বিশেষ করে জাতীয় বিভিন্ন দিবসে আমাদের পাড়ায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতোই৷ আর এর সবটুকু অবদান ছিল তাঁর৷ কেননা তিনি একজন ভাল সংগঠকও ছিলেন৷ নাটক কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বাহির থেকে কোন শিল্পি হায়ার করার প্রয়োজন হতো না৷ কেননা মুনসীপাড়ায় তখন অনেক নামি-দামি মঞ্চ ও বেতার শিল্পি ছিলেন৷ পাশাপাশি আব্বাস উদ্দিন একাডেমীর শিল্পিরাও অংশগ্রহন করতো৷ সমস্যা হতো নাটকের নারী চরিত্র নিয়ে৷ তখন এমেচার শিল্পি পাওয়া যেত না৷ পুরুষ চরিত্রগুলো আমরা পাড়ার ছেলেরাই করতাম৷ কিন্ত নারী চরিত্রের জন্য নাটকের বাজেট বেড়ে যেত৷ তখনো এত স্পন্সরশীপ পাওয়া যেত না৷ তাই আমরা নিজের চরিত্রটা যেন বাদ না পড়ে এজন্য চাঁদা দিতাম৷ যার চাঁদার পরিমান বেশি কিংবা নাট্যকারকে যে যত বেশি আপ্যায়ন করবে তার নাটকে উপস্থিতি বেশি থাকবে৷ চলতো নাট্যকারকে খুশি করার প্রতিযোগিতা৷ আর প্রতিদিন স্ক্রিপ্ট পরিবর্তন হতো৷ এভাবে অনেক নাটক করা হলো৷

অভিনয়ের নেশা তখন সংক্রামিত করলো৷ যুক্ত হলাম রংপুর থিয়েটারের সাথে৷ বড় বড় অনেক অভিনেতার সাথে পরিচয় ঘটলো৷ একসাথে কাজ করলাম৷ রংপুর থিয়েটার টেলিভিশনেও মঞ্চ নাটক করলো৷ ময়নার বিয়ে৷ রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায়৷ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল৷

এদিকে প্রতিদিন নাটকের পরিচালক হিসেবে রিহার্সেল তদারকি করতে আসেন নাট্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী মোহাম্মদ জুননুন৷ বিমান ভাই, বাবলু ভাই প্রমুখ৷ সকলের আন্তরিকতা আর অদম্য স্পৃহায় এভাবেই অবশেষে মঞ্চস্থ হতো৷ একটা নাটক শেষ হলেই প্রস্তত হতাম পরবর্তি নাটকের জন্য৷ নাটক আর সজীব যেন মিলে মিশে একাকার৷ আমরা সবাই বলতাম৷ বয়সতো অনেক হলো৷ এখন বিয়ে করেন৷ কিন্ত তিনি এড়িয়ে যেতেন৷
কিছুদিন পর আবিস্কৃত হলো নাটকের নায়িকা হিসেবে যাকে ভাড়া করা হয়েছিল তার সাথে রোমাঞ্চ চলছে৷ মেয়েটার নাম অনি৷ আর যায় কোথায় সকলে জেকে ধরলো৷ কিন্ত উনি বললেন বাড়ি আমার বিয়েতে ইচ্ছুক নয়৷ বলে তুই অসুস্থ৷ কে তোর সংসার চালাবে?
এরমধ্যে সজীব ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লেন৷ ওনাকে নিয়ে যাওয়া হলো নীলফামারী কুষ্ঠ হাসপাতালে৷ চিকিৎসা চললো প্রায় সাত বছর৷ হাসপাতালে বসে তিনি অনেকগুলো নাটক লিখলেন৷ সুস্থ হয়ে যখন তিনি ফিরে এলেন৷ আর দেরী করলেন না৷ তাঁর জন্য অপেক্ষারত অনিকে বিয়ে করলেন৷ যদিও তিনি আগের সেই শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন৷ শীর্ণকায়৷ সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন না৷ কিন্ত প্রাঞ্জলতার কমতি নেই৷ আবারো নব উদ্যমে নাট্যচর্চা শুরু হলো৷ অনি ও নাট্যকার সজীবের ঘর আলো করে আসলো তাঁদের একমাত্র পুত্র৷ তিনি স্ত্রী ও নিজের অদ্যাক্ষরের দিয়ে সন্তানের নাম রাখলেন “অসম”৷
নাট্যকার সজীব শহরে আরো পরিচিতি লাভ করলেন৷ নাটকই যেন তাঁর ধ্যান জ্ঞান হয়ে উঠলো৷ উপার্জন লাটে উঠলো৷ নাটক প্রিয় মানুষটা ভূলেই গেল যে তিনি এখন বিবাহিত৷ একটা সন্তান আছে৷ পরিবার আছে৷ সংসারের চাহিদা আছে৷ কিন্ত তিনি উদাসীন৷ নাট্যপ্রিয় মানুষটা একদিন সবচেয়ে বড় আঘাতটা পেল যখন তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গেল৷ সকলে চেষ্টা করলো তাদের সংসারটা জোড়া লাগানোর৷ কিন্ত তাঁর স্ত্রীর বক্তব্য একটাই, “সংসার করার জন্য আর্থিক ও শারীরিক যে দু”টো জিনিষ প্রয়োজন আপনাদের নাট্যকারের তার কোনটাই নেই”৷
স্ত্রী’র অপমান আর ছোট্ট অসমের ভবিষ্যৎ কী হবে? তাই এ আঘাতটা সজীব নিতে পারলেন না৷ তিনি আবার ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লেন৷ যথারীতি তাঁকে আবারো কুষ্ঠ হাসপাতালে ভর্তি করা হলো৷ তবে ডাক্তাররা বললেন এবার ওনার অবস্থা ভাল নয়৷ ভয়ের কিছু নেই চিকিৎসা চলুক৷

আমার সারা জীবনের অভ্যেস হচ্ছে রাতে পড়াশুনা করা৷ রাতটা যেন আমার কাছে আলাদা রুপ নিয়ে হাজির হয়৷ তাই একে উপভোগ করি৷ স্বপ্নের জাল বুনি৷ ছিড়ে ফেলি৷ আবারো বুনি৷ আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার মত প্রচুর বই পড়ি৷ বাবা রাত জাগা পছন্দ করতেন না৷ আমাদের বাড়িতে বাবার একটা অধ্যাদেশ ছিল৷ সেটা হলো রাতে ঘুমাতে গেলেও সকলের ঘরে অবশ্যই বাতি জ্বলবে৷ যাতে করে কেউ ফাঁকি দিয়ে রাতে বাড়ির বাইরে না থাকতে পারে৷ উনি জানালা দিয়ে চেক করতেন৷ তবে শুধুমাত্র আমার ঘরের বাতি বন্ধ থাকবে৷ যেন আমি রাত জেগে বই না পড়তে পারি৷ এ আইন আমরা সকলেই মেনে চলতাম৷ কিন্ত বই আমাকে ডাকে৷ রাত উপভোগের আহ্বান করে৷ আমি কখনো যা এড়াতে পারিনি৷ এখনো নয়৷ একদিন বাবার কাছে হাতে নাতে ধরা পরে গেলাম৷ আমি মাসুদ রানা সিরিজের একটা বই মুড়িয়ে জানালার বাহিরে বের করে বারান্দায় জ্বালানো আলোয় পড়ছিলাম৷ বাবা হঠাৎ দরজা খুলে বের হতেই আমাকে ঐ অবস্থায় দেখে ফেলে৷ ভয়ে আমি না পারছি ফেলে দিতে৷ আবার না পারছি বই সমেত হাত দু’টো ঢুকিয়ে ফেলতে৷ বাবা কাছে আসলেন৷ বইটা হাতে নিয়ে দরজা খুলতে বললেন৷ আমি তাই করলাম৷ উনি চুপচাপ৷ আমি আতঙ্কিত৷ তবে আমার একটা প্ল্যাস পয়েন্ট হলো৷ ওনার সাথে অনেক মিল আছে৷ বাবা বেতার ও মঞ্চ নাটক করেন৷ আমিও করি৷ উনি আর্ট করেন৷ আমিও করি৷ উনি প্রচুর বই পড়েন৷ আমিও পড়ি৷ তাই উনি আমাকে বেশি ভালবাসেন৷ সেদিন বাবা আমাকে শুধু একটাই কথা বলেছিলেন, “তুমি যাত্রা করলে ভাল করতে কেননা তোমার রাত জাগার অভ্যাস আছে”৷
বাবা যে উদ্দেশ্যেই কথাটা বলে থাকুক৷ সেটা ফলেনি৷ কারণ আমি যাত্রাও করিনি৷ আবার রাত জেগে বই পড়াও ছাড়িনি৷

সেদিনও গভীর রাত পর্যন্ত বই পড়ছিলাম৷ হুমায়ুন আহমেদের “হিমু” সিরিজ৷ রাত ক”টা দেখিনি৷ হঠাৎ বাহিরে জুতো পরা কিছু মানুষের খট খট শব্দ শুনতে পেলাম৷ লাইট অফ করে দিলাম৷ এই হচ্ছে একটা জ্বালা৷ আমাদের পাড়ায় প্রায় প্রতিদিনই পুলিশ রেইড করে৷ এখানে ঘরে ঘরে মস্তান৷ তাই চুপ করে বোঝার চেষ্টা করছি ঘটনাটা৷ ঘড়ি দেখলাম৷ রাত তিনটা৷ কিছুক্ষণ পর মনে হলো এটা পুলিশের বুটের আওয়াজ নয়৷ তাই মেইন গেট খুলে বাহিরে এলাম৷ তাছাড়া আমিতো গুন্ডা-বদমাশ নই৷ আমাকে দেখেই দুজন লোক জিজ্ঞেস করলেন, এখানে সজীবের বাড়ি কোনটা?
কোন সজীব?
কুষ্ঠ হাসপাতালে যিনি ছিলেন৷ নাটক লিখতেন?
কেন কী হয়েছে?
আসুন বলে আমাকে রাস্তায় দাঁড় করানো একটা ছোট্ট পিকআপের কাছে নিয়ে গেলেন৷ একটা ডালা খুলে বললেন “উনি আজ মারা গেছেন”৷
খোলা ডালার পাশে দাঁড়িয়ে দেখলাম অতি শীর্ণকায় এক ব্যক্তির লাশ পড়ে আছে আড়াআড়িভাবে৷ মাথার কাছে দড়ি দিয়ে বাঁধানো দু,বান্ডিল কাগজ৷
আমার শরীর কাঁপতে লাগলো৷ কাঁদতে কিংবা চিৎকার করতে পারছি না৷ গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বের হচ্ছে না৷ ওনারা বললেন, কাগজের বান্ডিলগুলো হলো হাসপাতালের বেডে লেখা নাটকের পান্ডুলিপি৷ আমি শুধু হাতের ইশারায় ওনার বাড়িটা দেখিয়ে দিলাম৷ দ্রুত ঘরে আসলাম৷ চেষ্টা করেও কান্না চাপাতে পারলাম না৷ কান্নার শব্দ শুনে বাবা এসে কারণ জানতে চাইলে বললাম সজীব চাচা মারা গেছে৷

কয়েক মূহুর্তের মধ্যে সারা পাড়ায় ছড়িয়ে পড়লো৷ মানুষের ঢল৷ একটা শোকাবহ পরিবেশ৷ ফজরের নামাজের পর আরো লোকের আগমন ঘটলো৷ বিত্ববান ও বিশিষ্টজন৷ বিশেষ করে পৌরসভার সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান আসলেন৷ আমাদের পাড়ার একটা গর্ব করার বিষয় হলো৷ এখান থেকে অনেক পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে৷ এখন আলোচনা চলছে৷ যে যাবার সে-তো গেছে৷ কিন্ত এ ছোট্ট ছেলে অসমের কী হবে? ওর লেখাপড়া৷ দেখাশুনার ব্যবস্থা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব৷ অবশেষে পাড়ার একজন ধনী বড় ভাই অসমের সমস্ত দায়িত্ব নেয়ার অঙ্গীকার করলেন৷ যথাসময়ে লাশ দাফন হলো৷ দিনে দিনে সকল ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষ হলো৷ অসম আগের মতই খেলে বেড়াচ্ছে৷ ওর জীবনে কত বড় ক্ষতি হয়ে গেল তা বোঝোর মত যথেষ্ট বয়স হয়নি৷

স্কুলের বিরাট মাঠে যেখানে নাট্যকার সজীব সর্বদা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর নাটক মঞ্চস্ত করতো৷ আজ সেখানে শোক সভার আয়োজন করা হলো৷ কত পন্ডিত, বুদ্ধিজীবি আর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব স্মৃতিচারণ করলো তার শেষ নেই৷ অবশেষে সকলে দাবী তুললো চৌরাস্তার মোড়ে তাঁর একটা ভাষ্কর্য নির্মাণ করা হোক৷ আর নামকরণ করা হোক সজীব চত্ত্বর৷ সবাই মেনে নিল৷ বিশেষ করে পৌর চেয়ারম্যান ঘোষণা দিলেন, নাট্যকার সজীব আমার সহপাঠি, ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন৷ তাই পৌরসভার ফান্ড থেকে এই ভাষ্কর্যের কাজ করা হবে৷

বেশ কিছুদিন পর সজীব চত্ত্বরের ভাষ্কর্যের বেদীমূলে এক ভিক্ষুককে দেখা যেতে লাগলো৷ ভিক্ষুকের বয়স কম৷ ছোট্ট ছেলে৷ সে আর কেউ নয় জীবনের অসম সংগ্রামরত অসম৷ আচ্ছা সজীব কি আগেই বুঝতে পেরেছিল যে এই ছেলেটাকে একদিন অসম সংগ্রাম করতে হবে? সেজন্যই কি নাম রেখেছিল অসম? ও বড় হলে একদিন বুঝতে পারবে৷ এদেশে মৃত লোকের স্মৃতি রক্ষার বাজেট থাকে৷ কিন্ত জীবিত মানুষের খাদ্য কিনে দেয়ার কোন বাজেট নেই৷ কেউ কথা রাখে না৷ পীর-পুরোহিত-পাদ্রী কেউই খোঁজ রাখে না৷ অসম বেদীর এমন একটা জায়গায় বসে থাকে৷ যেখানে ভাষ্কর্যের উপরের অংশটা তাকে রোদ-বৃষ্টি থেকে আগলে রাখে৷ যেভাবে পিতা তার সন্তানকে রক্ষা করে৷

আজ ভীষণ রোদ৷ অসম বসে আছে বেদীর এমন একটা স্থানে যেখানে শুধুই ছায়া৷ আর শান্তি! ভাষ্কর্যের উপরে অসম তাকিয়ে থাকে৷ যেখানে ম্যূরালে অংকিত হাস্যজ্জল নাট্যকার সজীব৷

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।