যোগেন রিক্সা টানে , ঠুন্ ঠুন্ শব্দ তুলে। খুব ভোরে বেরিয়েছে সে। বেলা গড়িয়ে দুপুর এখন।পিচ্ ঢালা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে একটা বিড়ি ধরালো। কিছুটা দূরে ভিখারীর বাচ্চাটা ওর মার স্তনের বোঁটা চিবুচ্ছে। জীবনের জঙ্গলে তেঁতুল চারার মত।
রাস্তার ওপারে একটা রকে বাপে খেদানো, মায়ে তাড়ানো কয়েকজন বসে আড্ডা দিচ্ছে। একটা ভাড়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। এমন সময় আকাশটা কালো করে ঝড় উঠলো। বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দৌড়ে এসে উঠলো রকের পাশে বারান্দাটায়।
বকুলের কথা মনে হলো। গর্ভবতী বৌটা ঘরে একা আছে। পূজোর জন্য একটু ফল নিয়ে যেতে বলেছিল। কাল বৈশাখীর দাপট কমতেই, রিক্সা নিয়ে ছুট লাগালো। ঘরে ঢুকে দেখল,বস্তির চাল গেছে উড়ে। উঠোনে জমা হয়েছে দুনিয়ার নোংরা জল। যোগেন এসে জড়িয়ে ধরতেই বকুল উঠলো কেঁদে। যোগেন, ওর মাথায় হাত রাখে। গর্ভের শিশুটির ওম নেয়। সেখানে গাল পাতে। চেয়ে দেখে মেঘ সরে আকাশে ফুটেছে তারা। বাতাসে নড়েচড়ে আলাপ জমিয়েছে বনস্পতির পাতারা। শুনতে পাচ্ছে আগামীর গান। কাল যে পয়লা বৈশাখ।