গুচ্ছ কবিতায় রতন বসাক

১| মায়ের দুঃখ

মাগো তুমি কাঁদছো কেন
একটু বলো খুলে,
হাসির গল্প বলবো আমি
দুঃখ যাবে ভুলে।

তোমার চোখে অশ্রু ঝরা
আমায় কষ্ট দিচ্ছে,
হাসি মুখে থাকবে সদাই
এটা আমার ইচ্ছে।

বড় হলে বউটা আনবো
সেবা দিয়ে যাবে,
যত্ন করে খাইয়ে তোমায়
পরে নিজে খাবে।

চোখটা মুছে এসো কাছে
হাতটা বুলাই গা’য়ে,
ভালো করেই টিপে দেবো
ব্যথা হলেই পা’য়ে।

ওরে খোকন এমন ভাবে
কেন কেঁদে চলি,
কোনো মতে বুঝবি নারে
যতই তোরে বলি।

২| দাও না ছাতা

ঝমঝমাঝম ভীষণ শব্দে
বৃষ্টি এলো ওই,
মাগো আমার ছোট্ট ছাতা
বলো দেখি কই?

ইচ্ছে করছে ছাতা মাথায়
বাইরে একটু যাই,
বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় হাঁটতে
কেমন লাগে তাই!

পুকুর নালায় দেখি গিয়ে
ভরছে কিনা জল,
এখন আমি যাবোই যাবো
করো নাতো ছল।

দেখে নেবো কেমন আছে
জলে ভেজা গাছ,
পুকুর ভেসে রাস্তার উপর
এলো কিনা মাছ?

দাও না এনে সেই ছাতাটা
নইলে করবো রাগ,
আমায় দিলে ভালোবেসে
দেবো তোমায় হাগ।

৩| ভুল ঠিকানা

মাসিমা আজ যাচ্ছ কোথা
জানতে আমি চাই,
ছোট একটা কাগজ হাতে
দেখছি ধরা তাই।

কী যে বলবো খুঁজে মরছি
সকাল থেকে আজ,
এ ঠিকানায় গেলেই নাকি
দেবে ঝি এর কাজ।

মালা পাড়ার ভজার পিসি
এইটা লিখে দেয়,
খোঁজটা দিতে দশটা টাকা
আমার থেকে নেয়।

অনেক খুঁজে পাচ্ছি নাতো
এই ঠিকানা ভাই,
বলতে পারো কেমন করে
এখন খুঁজে পাই?

কাগজখানা দেখাও দেখি
মারছে নাকি গুল,
আর খুঁজো না মনে হচ্ছে
ঠিকানাটাই ভুল!

৪| গাঁয়ের সুন্দর দৃশ্য

গাঁয়ের মাঝে মাটির বাড়ি
দেখে লাগে ভালো,
চারিদিকেই খোলামেলা
থাকে বেশি আলো।

ঘরের পাশে ধানের গোলা
মাথা উঁচু করে,
নারকেল ফলে ভর্তি দেখি
বৃক্ষ পুরো ভরে।

নীল গগনে মেঘের ভেলা
বায়ু লেগে ভাসে,
মেঘগুলো সব জমা হলে
বৃষ্টি নেমে আসে।

জলে ভিজে ফসলগুলো
বেড়ে ওঠে তাতে,
পাকার পরে কাটবে চাষী
কাস্তে নিয়ে হাতে।

বাড়ির কাছে বাঁধা আছে
গোটা কয়েক গরু,
শহর যেতে ধরতে হয় যে
মাটির রাস্তা সরু।

মটর গাড়ি একটা দুটোই
যাচ্ছে দেখা পথে,
গাঁয়ের মানুষ অধিক সুস্থ
জ্ঞানী জনের মতে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।