T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য
by
·
Published
· Updated
আমার যেসব দিতে হবে
তোমার সাথে বসে আছি, পাশেই নদী। পা ডুবিয়ে বসে গাইছি,’ আছে দুঃখ আছে মৃত্যু’, তুমি আলতো করে ডাকলে, বললে ‘সুধা, তুমি কি চাও? ‘
আমি তোমার কাঁধে মাথা রেখে বললাম , ‘আমি আমাকে চিনতে ঢাই,তুমি আমাকে চিনিয়ে দাও’। তুমি আমার হাত ধরে বললে, ‘ আমার আমির মধ্যে ও সেই বিশ্বব্যাপী প্রকাণ্ড
দুই শক্তির খেলা; তার এক শক্তি প্রবল হাত দিয়ে ঠেলে ফেলছে, আর_এক শক্তি প্রবল হাত দিয়ে টেনে নিচ্ছে। এমনি করে আমি এবং আমি_না’র মধ্যে কেবলই আনাগোনার জোয়ার ভাঁটা চলছে।… সুধা, এই আমি তাঁর প্রেমের সামগ্রী;একে তিনি অসীম বিচ্ছেদের দ্বারা চিরকাল পর করে অসীম প্রেমের দ্বারা চিরকাল আপন করে নিচ্ছেন। ‘ আমি তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘শরবৎ তন্ময় ভবেৎ।’তুমিই আমার ব্রহ্ম, আমি নিবিষ্ট শরের মতো তোমাতেই প্রবেশ করতে চাই, তুমিই তো শিখিয়েছ দুঃখকে বরণ করে নেবার স্পর্ধা। তুমি আমার জীবন দেবতা। আজ এই ভয়ঙ্কর দিনে তুমি আমায় পথ দেখাও।’
হঠাৎ দেখি নদীতে পা ডুবিয়ে বসে আমি একা। কোলের উপর খোলা রবীন্দ্র রচনাবলী। আমি পালিয়ে এসেছি আতঙ্কে, শোকে। আমায় ফিরে যেতে হবে নিজের জন্য সেখানেই যেখানে প্রেম জয়ী হবে মরণ সাধনার মধ্যে দিয়ে। আমি সুধা, হাজার হাজার অমলের অসুখ আমিই তো সারাবো। আমি ঘরে ফিরে পিপিই ড্রেসিং কিট টা বার করে মাকে বললাম, ‘মা আমায় যেতে হবে। ‘ মা শুধু বললেন’দুর্গা, দুর্গা’
চোখ দুটো মায়ের তোমার মতই উজ্জ্বল, ঠিক তোমার মতো রবীন্দ্রনাথ।