কবিতা সিরিজে রতন বসাক
ঘাসের মনের কথা
হেঁটে গিয়ে আমি বাগানের থেকে
তুলে আনি কিছু ফুল,
বুঝিতে পারিনি এর কারণেতে
কি জানি কি হল ভুল।
পদতলে চাপা পড়ে ছিল ঘাস
দেখিনিতো তারে চেয়ে,
তার কথা আমি ভুলিয়া ছিলাম
ফুলগুলো হাতে পেয়ে।
ফিরে আসি ঘরে ফুলে সুতো ভরে
মালা গেঁথে যাই হাটে,
বেচে দিলে পরে অর্থ আসে হাতে
হাট বসে পদ্মা ঘাটে।
পর দিন আমি আবার বাগানে
যাই কিছু ফুল নিতে,
কে যেন বলিলো এই শোনো তুমি
ভাবো নাতো মোর হিতে।
চেয়ে দেখি নিচে ঘাস কিছু নড়ে
কথা তার থেকে আসে,
দুখী হয়ে বলে কভু দেখেছো কি
পা’টা যে তোমার ঘাসে?
শুনে সেই কথা পাই মনে ব্যথা
তার কাছে ক্ষমা চাই,
হেসে বলে ঘাস অবহেলা কেন
বলো দেখি মোরা পাই?
মাকে মনে পড়ে
তোমার গর্ভে জনম নিয়ে
ধন্য হলাম আমি,
মাগো তুমি আমার কাছে
সবার চেয়ে দামি।
ছোট থেকে ভালোবেসেই
সব শেখালে তুমি,
সারাজীবন সুখে থাকার
গড়ে দিলে ভূমি।
মনের কষ্ট তোমায় বলে
শান্তি আমি পেতাম,
বাইরে গেলেই চরণ ছুঁয়ে
প্রণাম করে যেতাম।
তোমার তৈরি রান্না খেয়ে
মনটা যেতো ভরে,
যখন যেমন বলে যেতাম
তেমন দিতে করে।
চলে গেছো অনেক দূরে
আমায় রেখে একা,
ভেবে আমার অশ্রু ঝরে
আর হবে না দেখা!
জন্ম দিও মোরে
অনেক দূরে চলে গেছো
আমায় ছেড়ে তুমি,
মাগো আমি ছবির পরে
তোমার পায়ে চুমি।
আজও আমার মনে পড়ে
সুখে দুখে থাকতে,
আদর করে ছোট্ট নামটা
নিমু বলে ডাকতে।
তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে
দৌড়ে এসে যেতাম,
খাবার জন্যই রেঁধে রাখা
হাতে কিছু পেতাম।
ভালোবাসতে এতো তুমি
কি আর বলি আমি,
সত্যি কথা লাগতো সেটা
সবার থেকেই দামি।
আবার মোরে জন্ম দিয়ে
এই জগতে এনো,
বৃদ্ধাবস্থায় তোমার সেবা
করতে পারি যেনো।
ভেবে বলো
এখন দেখি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ঘরে
অন্যায় কিছু করলে পরে বলা যায় না মুখে।
বাবা মা’য়ে শাসন করলে অভিমানটা করে
তার কারণে নিজের মনে থাকে তারা দুখে।
হঠাৎ এমন করবে কিছু বলবে নাতো মুখে
আত্মহত্যা করে ফেলে ভুলটা তারা বুঝে।
মা ও বাবা সারাজীবন কাটায় সময় দুখে
কেন করলো এমন কর্ম উত্তর পায় না খুঁজে!
মনের কথাগুলো আগে যদি যেতো বুঝে
তাহলেতো কিছু তারে বলতো নাতো রাগে।
বলার জন্য নতুন কিছু উপায় নিতো খুঁজে
যাতে করে মনে বিচার বুদ্ধি বিবেক জাগে।
সবাই জানে ক্ষতি হবে করলে কিছু রাগে
তাইতো বলা উচিত নহে হঠাৎ করে মুখে।
এমন কথা বলো তারে যাতে বিবেক জাগে
ভালোর থেকে পথটা হারায় যখন থাকে দুখে।
ভালো কিছু লিখতে
সঠিক করে লিখতে হলে
জানতে হবে আগে,
শব্দ কিংবা অক্ষর পড়ে
মাত্রা কয়টা লাগে?
ভালো ভাবে বুঝে নিও
ছন্দ মাত্রায় ঢুকে,
কবিতা ও ছড়া লিখতে
গুনতে হবে মুখে।
গল্পটা বেশ বানিয়ে নাও
লেখার আগে তুমি,
লাইন সংখ্যা গুনে তারই
তৈরি করবে ভূমি।
ছবি কিংবা বিষয় ভেবে
লেখা শুরু করো,
হয়ে গেলে ভুলটা ধরতে
বারে-বারে পড়ো।
শুধরে নিয়ে আবার পড়ে
লেখা ছাড়ো তবে,
দেখো তখন তোমার সৃষ্টি
ভালো তাতে হবে।