সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব – ৩৭)

পদাতিক

— মানে তো খুবই সোজা জেঠু। দুজন আশ্রমিক কন্যার বিয়ে হচ্ছে কিন্তু নিজের মেয়েকেও একইসাথে বিয়ে দিচ্ছি। আমি কারোকেই আলাদা করে দেখি না।আমার নিজের মেয়েকেও যেভাবে দেখি আশ্রমিকদেরও সেই একইরকমভাবে দেখি। বলুন তো, আমাদের বিয়েটা ওদের বিয়ের কিছুদিন আগেপরে হলে কী এমন ক্ষতিবৃদ্ধি হতো? যেটা হতো সেটা হলো এই প্রচারটা হতো না। বিশ্বাস করবেন না, ঘটনাটাতে আমি এতোটাই দুঃখ পেয়েছিলাম যে আমি কাউকে কিছু না জানিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছিলাম।
— আরে বলো কী? নিরুদ্দেশ হয়ে গেছিলে? সত্যিই? তাহলে ফিরে এলে কেন?
— আরে ধুস, চায়নাকে আমি কিছুতেই ভুলতে পারছিলাম না যে। স্বপ্নেও যেন ওর দুচোখে জলভরা মুখটা যেন ভেসে উঠতো। ও যে কী ভালো মেয়ে সেটা যে ওর সাথে অন্তরঙ্গভাবে মিশতে না পারবে সে কিছুতেই বুঝতে পারবে না। আমরা আশ্রমটাকে চালাই ভেবে গর্ববোধ করি। কিন্তু সেটা তো আমরা অনেকে মিলে চালাই। কিন্তু পাঁউশি হোমটার কথা চিন্তা করুন দেখি? একা হাতে দশদিক সামলে যাচ্ছে চায়না। কোনো অভিযোগ নেই, অভিমান নেই, অতবড় একটা ইন্সটিটিউশন একা হাতে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তো?
যাই হোকগে, আমাদের বিয়ে হওয়ার সামান্য কিছুদিন পরেই মন্দারমণির জমিটা বাবাকে দান করেন। এখন দেখুন দেখি কতো সুন্দর একটা গেস্ট হাউস তৈরী হয়েছে সেই জমিতে।
— আচ্ছা মণিকরণের বিয়েটা কবে হয়েছিলো?
— আমাদের বিয়ের বছরখানিক বাদে ওদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন বাবা। আমার শালি বলে বলছি না জেঠু, মণিকরণের মতো স্বভাবের মেয়ে পাওয়া এতো সহজ না। এতো সহজসরল, নিরহংকারী, মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে পাওয়া খুবই সমস্যার।

বিয়ের পর বেশ কিছু বছর আমরা কলকাতাতেই ছিলাম। আইটি কোম্পানির চাকরিটা আমি ছাড়িনি। আঠেরো সাল পর্যন্ত আমরা কলকাতাতেই ছিলাম। অবশেষে আঠারো সালে আমি আশ্রমে এসে ঢুকলাম। সত্যি বলতে কি, বাবার অনুরোধ ফেলতে পারি নি। সেই থেকে যে অফিসের চেয়ারে এসে বসলাম আজও পর্যন্ত তো এখানে বসেই সময় কাটিয়ে দিলাম।

ইতিমধ্যে মনোজের খাওয়া শেষ হয়েছে। প্লেটটাকে গুছিয়ে টেবিলেই রেখে দিলো মনোজ। সীমা এসে ঠিক নিয়ে নেবে থালা বাটি। এরভেতর মনোজ খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিলো মনোজকে। ডাক্তারের গাফিলতির কারনে

ক্রমশ

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!