গদ্যের পোডিয়ামে প্রদীপ গুপ্ত

বৃষ্টি ও নারী

তুমি আজ আবার আমায় ভেজালে সুরঞ্জনা। যখন নিয়ন আলোকস্তম্ভর নীচে আমায় পেলে,এমনভাবে আছড়ে পড়লে আমার ওপর!
তোমার বছরসমান অভিমানেরা তীরের মতো এসে বিঁধছিলো আমার সর্ব শরীরে। আমার চুল, কপোল, চিবুক, গ্রীবা, হয়ে
দখল করে নিচ্ছিলো আমার হৃদয়।
সবটা ভিজিয়ে দিয়ে, তুমি এসে দাঁড়ালে আমার পাশে। দু’গাল বেয়ে নেমে আসছে তোমার ভেজা চুল। তোমার লাল রঙা উর্ণি আর মেঘরঙা চুড়িদার তোমার কাঞ্চনবর্ণকে আরও দীপ্ত করে তুলেছিলো।

জানো, শেষবারে, তুমি তখন মালতীলতার বিতানে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে, আর আমি অবিশ্রান্ত ভিজছি তোমার আদরে, তোমার দু’চোখের প্রশ্রয় আমাকে যেন বুনো করে তুলেছিলো। তোমার মালতি রঙের গাল, কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছিলো, তুমি কি জানতে? যদি জানতেই তাহলে বাধা দিয়েছিলে কেন আমায় বাতাস হয়ে বইতে, তুমিও কি কপটীয় ঢঙে প্রশ্রয় দিতে ভালোবাসো!

তুমি বলেছিলে, বাতাবি ফুলের নাকছাবি নাকি তোমার ভারি ভালোবাসার। এবার দেখা হলে তোমায় সন্ধ্যামণির দুল আর বাতাবিফুলের নাকছাবি পরিয়ে দেবো,আর চুলে দেবো সাদা কাঞ্চনের থোকা।
তুমি শুধু তোমার হাতদুটোকে আমার দু’হাতের ভেতর ধরতে দিও সুরঞ্জনা —
তোমার ভিজে যাওয়া হাতদুটো কতদিন যে শুকিয়ে যাওয়া ঠোঁটে, আর উষ্ণ গালে ছোঁয়ানো হয় নি!
এবার যখন আসবে সাথে হিমশীতল বরফের কুচি নিয়ে এসো।

তুমি তো জানো না, তোমার একবিন্দু শীতল পরশ আমাকে সমুদ্রস্নানের সুখ এনে দেয়। আমি অবগাহনের তৃপ্তি পাই, আমি ডুবে যাই — ডুবে যাই — আমায় ভালোবাসায় ডুবিয়ে দাও সু — সুরঞ্জনা —।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!