কর্ণফুলির গল্প বলায় প্রকাশ চন্দ্র রায়

অনুকরণ
স্ত্রী সুজাতা দেবীর বকাঝকা’র অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ধূমপান করা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন সুকুমার বাবু।
বাড়ীতে সুজাতা না থাকলে বা থাকলেও চুপচাপ করে ছাদে গিয়ে তার সখের ইজিচেয়ারে বসে ধূমপান পর্ব সমাপ্ত করে তবেই নিচে নামেন তিনি।
একমাত্র ছেলে ‘শুভ্র’ যেন বাপের মত ধূমপায়ী না হয়,
এই হলো সুজাতার অভিলাষ।
ছেলের মঙ্গলার্থে এবং স্ত্রীর অভিলাষ পূরণের লক্ষ্যে স্বামীও তাই বেশ সতর্কতা অবলম্বন করেছেন।
এখন কেউ জানে না তিনি কখন কোথায় সিগারেট লুকিয়ে রাখেন এবং কখন কীভাবে কোথায় বসে সিগারেট টানেন।
আজরাতে ধূমপানের ইচ্ছেয় কাতর সুকুমার বাবু
সিগারেট খুঁজে পাচ্ছেন না!
জ্যাকেটের গোপন পকেটে নেই! কোটের ভিতর পকেটে, বাইরের পকেটে নেই! নেই তো নেই-ই–!
এমন সময়ে স্ত্রী সুজাতা এসে জানালেন শুভ্রকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! এ ঘরে নেই,ও ঘরে নেই, বারান্দাতে উঠোনেও নেই-!
মাথাটা বিগড়ে গেলো সুকুমার বাবুর।
-ছাদে খুঁজেছো?
-না,খুঁজিনি–এ কথা বলেই ছাদের দিকে ছুটলেন সুজাতা দেবী।
ছাদে গিয়ে দেখতে পেলেন তিনি!
বাপের ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বেশ আনন্দের সাথেই সিগারেট টানছে পাঁচ বছরের ছেলে-শুভ্র!
সিগারেটের ডগায় অবশ্য আগুন জ্বালায়নি সে।
মায়ের ডাক শুনে জোরছে একটা টান মেরে ধোঁয়া ছাড়ার ভঙ্গিতে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বললো ছেলে,
-মা,আমি বাবা হয়েছি।
ছেলের অপকর্ম দেখে হাসবে নাকি কাঁদবে স্থির করতে না পেরে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়েই থাকলেন মা-সুজাতা দেবী।