গদ্যের পোডিয়ামে পিয়াংকী – ধারাবাহিক (প্রথম পর্ব)

ওরফে তারাখসা এবং তুমি বালক
(১)
কী নিয়ে লিখব? আর কতটা লিখলে আমার গা থেকে নেমে যাবে অতিরিক্ত ভারটুকু, জানি না। জানি না বলেই এখনো লিখে চলেছি।
আদৌ এ লেখা থামবে কোন রাস্তায়? কত তো ধুলো উড়ল, কতবার ছেনে রাখলাম মাটি। তোমাকে গড়ার নামে ঘুরলাম উত্তরের সমস্ত ফেরিঘাট। সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম স্তরে আঁকলাম বেশ কিছু দেয়ালচিত্র। এখন খড়গাদা এনে ফেলে রেখেছি বৃক্কের পাশের খালি জমিতে। শল্যচিকিৎসক আসবেন। অনেকদিন পর পিঠের পিছনে গিয়ে দেখি পুরোনো মাটিতে শ্যাওলা ধরে গেছে। ওই মাটি কি এখন আর জল শোষণে সক্ষম ? খুঁড়তে হবে। বের করে ফেলতে হবে ভিতরের আবর্জনা। পিঁপড়ের ডিম সাপের খোলস… ইত্যাদিতে জড়িয়ে আছে অন্তর্ভুক্ত দেহ। মা গাছ করত। দরিদ্রগাছ, দরিদ্রমানুষের মতোই। ডালভাতশাক খায়। মা বলত, পাতা পচে উন্নত সার হয়। আমি আজও বুঝতে পারি না পিঁপড়ের ডিম অথবা সাপের খোলস পচেও কি সার হওয়া সম্ভব? আপাতত,পিঠের জমিতে কোদাল চালাচ্ছি একাই। খড়গাদার সাথে মিশিয়ে মূর্তি রূপ দিতে হলে গভীরের মাটি চাই। কোদাল আমার অস্ত্র নয়,সে সহযোগী সহযাত্রী।
মাটি কুপিয়ে রেখে বুকের ওপর এসেছি। সন্তর্পণে জিভ বের করে টেনে নিচ্ছি বিষাদ। আড়চোখের সাথে একই সরলে বিষাদ জীবনের দীর্ঘতম বন্ধুও। একত্রে সঞ্চিত হচ্ছি বারুদের মতো, হৃদপিণ্ডের ওপর। কপাল থেকে আসছে তৃতীয় নয়নের মণি। পেট থেকে তুলে আনছি প্রাচীন শিকড়।
গাছ হবে গাছ হবে।
ব্রহ্মকমল ফুটছে দেখে
জোনাক সাজাই দুয়ার জুড়ে
দেনার দায়ে পড়লে ধরা
আমায় খুঁজি দ্বিপ্রহরে
আলতো ছুঁলেই পানি ঝরে
বুকের পাশে বকের বাসা
দেহের মাটি খুঁড়েই চলি
মাটির নামই ভালবাসা…