গল্পে নুসরাত রীপা

সন্ধ্যা রাতের গান

হঠাৎ তুমুল হৈচৈ শুনে পরম উদ্বিগ্ন হয়ে স্ত্রী পাপিয়ার পাশ থেকে উঠে এগিয়ে গেলেন আতিক হাসান। হৈচৈ টা আসছে রান্নাঘরের দিক থেকে।
রান্নাঘরে বড় কন্যা মুমু কে দেখতে পেলেন কাজের বুয়ার সাথে চিল্লাবিল্লা করছে। পাশে ছোটমেয়ে রুমু চোখ মুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। আতিক হাসান কয়েক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে কী হয়েছে জানতে চাইলে মুমু,রুমু বা বুয়া কেউ কিছু না বলে নিজেদের চিল্লাচিল্লি চালাতেই থাকলো।
কাজের বুয়া মতির মা নরম সরম প্রকৃতির। এ বাড়িতে কাজে প্রায় দশ এগারো বছর হয়ে গেলো। তাকে কোনোদিন এভাবে চিল্লাতে দেখেন নি আতিক হাসান।
একটু এগিয়ে রুমুর পাশে দাঁড়িয়ে নরম কন্ঠে প্রশ্ন করলেন, কী হয়েছে রে?
প্রশ্নটা করা মাত্রই গরম আগুনে ঘি পড়লো যেন। মুমু চেঁচিয়ে উঠলো, তুমিই বলো বাবা, সেই ঘুম ভাঙা সকালে এখানে এসেছি। এগারোটা বাজতে চললো।বাবান আর মিঠেলে এতোসময় ধরে একটু নুডুলস আর ডিম পোচ খেয়ে আছে। এটা কোনো কথা হলো? বুয়াকে বললাম ওদের জন্য একটু পরোটা গোস্ করে দিতে,বলে কী না হাতের কাজ শেষ হলে
করবে— মুমু এটুকু বলতেই বুয়া চেঁচিয়ে উঠলো, আম্মার শরীল খারাপ। কাল থেইকা না খাইয়া আছে। এট্টু জাউ বসাইসি আর পেঁপে দিয়ে মুরগির ঝোল,ওই হইতে আর কতো সময় লাগে? তা না ঐ ডি নামায়া ফেলতে কন। এডা কুনু মাইনসের কথা।
একথা বলেই বুয়া খুন্তি দিয়ে চুলোর হাঁড়িতে কী যেন নাড়তে শুরু করে।
সেদিকে কটমট করে তাকিয়ে মুমু বললো, আমার মায়ের প্রতি তোমার কি আমার চাইতে বেশি টান?
আহা মারে! তোদের মা কাল থেকে না খাওয়া।ভানু হয়তো সে কথাটাই আগে ভেবেছে। তুই রাগ করিস না মা। আমি ভানুকে বলে দিচ্ছি তোর ছেলেদের খাবারটুকু আগে করে দিতে –মুমুকে থামাতে চাইলেন আতিক হাসান।
আব্বা আর একটু সময় লাগবে। আম্মার রান্না শেষ প্রায়। এটা নামাইয়া ই কইরা দিচ্ছি। গরুর মাংস রান্না করাই আছে। শুধু পরাটা বেলুম– আতিক হাসানের কথার সাথে কথা জুড়ে ভানু।
আতিক হাসান সেই ভালো- শব্দটা উচ্চারণ করতে যাবেন মাত্র মুমু আবার চেঁচিয়ে উঠলো, তুমি ও বাবা। তুমিও ভানুর কথায় সায় মেলাচ্ছো? আমার ছেলেরা চিকেন ছাড়া খায় না আর এখন গরুর মাংস দেবে? তাও আবার পুরানা রান্না! আমি চলে যাচ্ছি বাবা। মাকে দেখতেই এসেছিলাম। কিন্তু দেখলাম আমার টান থাকলে কী হবে আমার ছেলেদের প্রতি তোমাদের কোন টান নেই – বলতে বলতে হতভম্ব আতিক হাসানের সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেলো মুমু। আতিক হাসান রুমুর দিকে তাকিয়ে মৃদুস্বরে বললো, ওকে থামা রুমু। তোদের মা শুনলে কষ্ট পাবে। সে সুস্থ থাকলে তো নাতি নাতনি আসবে শুনলেই এটা ওটা নানান কিছু রান্না করে রাখে।
জানি বাবা। মুমু তোমার বড় মেয়ে। ওর বাচ্চাদের প্রতি তোমাদের আলাদা একটা দরদ আছে। কই সাফকাত কে নিয়ে যখন আসি মাকে তো কখনো স্পেশাল কিছু রান্না করে রাখতে দেখিনি- রুমুর কন্ঠে উষ্মা প্রকাশ পায়।
আরে কী আশ্চর্য! সাফকাত তো এখনো খেতেই শিখেনি। কী রাঁধবে ওর জন্য! আতিক হাসান বিস্মিত কন্ঠে বলেন।
রুমু কন্ঠে তিক্ততা স্পষ্ট , বাবা সাফকাতের ন’মাস বয়স। ও পিশপাশ খায়,স্যুপ খায়–থাক বাবা সাফকাতকে তোমরা ভালো বা বাসলেও আমি মুমুর মতো রাগ দেখিয়ে চলে যাবো না। সাফকাতের খাবার আমি সাথে করে নিয়েই এসেছি। চলো বাবা ঘরে চলো। মা একা। বুয়া তুমি আমার আর বাবার জন্য দুকাপ চা নিয়ে এসো। শেষের কথাটা বুয়াকে বলে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লো রুমু।
নয় মাসের বাচ্চার জন্য স্পেশাল খাবার রান্না না করে রাখা মানে কি তার প্রতি ভালোবাসা না থাকা? কথাটা ভেবে আতিক হাসান কূল কিনারা পান না।
২)
দুই মেয়ে এক ছেলের জনক আতিক হাসান সরকারের উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন।বেশ কয় বছর হয় রিটায়ারমেন্টে গেছেন।সন্তানেরা ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়েছে। ছেলে ফাইয়াজ, ইন্জিনিয়ার। নিজের কম্পিউটার ফার্ম আছে। সহপাঠীকে বিয়ে করে বনানীতে নিজের ফ্ল্যাটে থাকে। এক সন্তানের জনক। মেয়েরাও সুশিক্ষিত। যদিও তারা কেউ চাকরি করে না কিন্তু নিজেদের সৌন্দর্য ও বাবার উঁচু পদমর্যাদার কারণে তাদের বিয়ে হয়েছে ধনী ও শিক্ষিত পরিবারে। একজনের স্বামীর বিশাল বিজনেস। অন্যজন একটা বিদেশি কোম্পানির বড় কর্মকর্তা। বাবা হিসেবে তিনি তার কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করেছেন। তিনি নিজে এবং স্ত্রী পাপিয়া দুইজনাই নরম মানুষ। কিন্তু ছেলেমেয়েরা ঠিক তাদের মতো যেন হয়নি। কেন হয়নি- এবিষয়টা বুঝতে পারেন না আতিক হাসান। আতিক হাসান তো মাটির মানুষ। জীবনে তাকে কেউ উঁচু স্বরে কথা বলতে শোনে নি। পাপিয়ার ও তেমনি স্বভাব।
কিন্তু ছেলে মেয়েগুলো জন্মেছে উগ্র মেজাজ নিয়ে। আতিক হাসান শুনেছেন মানুষ তার চৌদ্দতম পর্যন্ত পূর্বপুরুষের বৈশিষ্ট্য পেতে পারে। তারমানে আতিক হাসান অথবা পাপিয়ার পূর্ব পুরুষের ওপর দিকের ধারায় কেউ না কেউ উগ্র মেজাজের ছিলো! আর তাঁর জিনগত বৈশিষ্ট্য বইছে সন্তানদের শরীরে।
কোনো পিতামাতাই সন্তানদের কাছে কোনো কিছুর প্রত্যাশা করে সন্তান লালন পালন করে না।কিন্তু তারপরও মনের খুব গহীন নিভৃত কোণে, চুপিচুপি আশা রাখে
সন্তানেরা শিশুবেলার মতো বাবা মাকে মিস করে বার বার ছুটে ফিরে আসবে।
আতিক হাসানের সন্তানেরা অবশ্য নিয়ম করে বাবা মায়ের খবর নিতে ভুল করে না। কিন্তু সেটা কতোটা ভালোবাসা আর কতোটা কেবলই কর্তব্য সেটা একটা প্রশ্ন বটে!
৩)
রুমু,মুমু আর ফাইয়াজ- তিন সন্তানের প্রতি কখনো এতটুকু রূঢ় হয়েছেন বলে মনে পড়ে না আতিক হাসানের। অসুস্থ স্ত্রীর পাশে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে রুমুকে দেখেন তিনি। জানালার পাশে চেয়ারটায় বসে সে অনবরত মোবাইল টিপেই যাচ্ছে। হয়তো ফেসবুক বন্ধু বান্ধবের সাথে চ্যাট করছে।
ফোনের প্রতি তার এই মেয়ে বরাবরই, দুর্বল। স্কুলে কলেজে পড়ার সময়ও অলটাইম সে মোবাইলে ব্যস্ত থাকতো।এমনকি এইচ এসসি পরীক্ষার হলে মোবাইল নেয়ার জন্য তাকে দু’বার দশমিনিট করে পরীক্ষা হলের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলো। তবুও স্বভাব পরিবর্তন হয়নি।
চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে আতিক হাসান স্ত্রী কে ডেকে তুললেন।
ভানু জাউ আর মুরগির ঝোলের বাটি রেখে গেছে। পাপিয়াকে এখন কিছু খাওয়াতে হবে। প্লেটে খাবার মাখাতে মাখাতে রুমুকে আবার দেখলেন তিনি।পড়াশোনার সময় মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকতো সে টা ঠিক আছে। কিন্তু এখন সে সংসারী এবং সন্তানের মা, এখন তার এমন ছেলেমানুষী আসলেই দৃষ্টিকটু। ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস লুকালেন। মনে মনে সন্তানের এমন দায়িত্বহীন হওয়ার জন্য নিজেদেরকেই দোষী সাব্যস্ত করেন তিনি।
৪)
হাউজ ফিজিশিয়ান এবং আতিক হাসানের স্কুল ও কলেজ জীবনের বন্ধু মাহমুদুর রহমান সন্ধ্যার আগে আগে আর একবার এলেন। বাসায় যতটুকু চেকআপ করা যায় করে টরে বারান্দায় পাতা বেতের চেয়ারে গা এলিয়ে বসলেন।
প্রথম সম্তান জন্ম দেওয়ার পর থেকেই পাপিয়া হাই প্রেসারের রোগি। নিয়ম কানুন মেনে চলে এবং ওষুধ পত্তরে নিয়ম মানায় অসুখটা আর অসুখ থাকেনি। কালে ভদ্রে একটু আধটু দেখা দিলেও সেটা দৈনন্দিন জীবনে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারে নি।
গত কাল সকালেও তিনি অসুস্থ ছিলেন না। বাসার রান্না বান্না ভানু করলেও মাঝে মধ্যেই পাপিয়া রান্না ঘরে ঢোকেন স্বামীর প্রিয় কোনো পদ রান্নার জন্য। কয়দিন আগে গ্রাম থেকে খেতের কাউন এসেছে। আতিক হাসান ঝাল ঝাল ভর্তা, পুঁটি মাছের মুচমুচে ভাজা বা গরুর গোশতের ভুনা দিয়ে কাওনের পোলাও খেতে ভীষণ ভালোবাসেন। আর ভর্তা জিনিসটা চাকর বাকরের হাতে তৈরি করা অপছন্দ করেন।
চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর আতিক হাসান সকালের নাস্তা করেন নয়টায়। পাপিয়া তাই সকালে স্বামীর জন্য রান্না করতে ঢুকেছিলেন। হঠাৎ কী হলো ফ্রিজ থেকে আদা রসুনের বাক্সটা নামাতে গিয়ে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়েই জ্ঞান হারালেন।
ভানুর চিল্লাচিল্লিতে বারান্দায় বসে পত্রিকা পড়তে থাকা আতিক সাহেব ছুটে এসে অবস্থা দেখে কয়েক সেকেন্ড কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।
অবশেষে ভানুর চেঁচামেচিতে এ্যাম্বুলেন্স কল করলেন। ছেলে মেয়েদের জানালেন।
মুমুর বাচ্চারা স্কুলে। ওদেরকে রেখে কীভাবে আসবে? রাস্তায় যা জ্যাম। পরে স্কুল ছুটি হয়ে গেলে বাচ্চারা একা স্কুলে পড়ে থাকবে। মুমু তাই কাল আসেনি।
অবশ্য বেশ কয়বার ফোন করে খবরাখবর নিয়েছে। বেশি প্রয়োজন হলে আসবে বলেও জানিয়েছে।
আর রুমুরা ঢাকায় ছিলো না। কালই ফিরেছে। তবে টায়ার্ড থাকায় আর মায়ের অবস্থা ততো খারাপ নয় বলে কাল আর আসেনি!
এম্বুল্যান্স এসেছিলো। তবে তার আগে জ্ঞান ফিরে আসায় আর হসপিটালে নিতে হয়নি।
ডাক্তার মাহমুদুর রহমান চেয়ারে হাত পা ছড়িয়ে বসে চা খেতে চাইলেন।
তারপর আতিক সাহেবকে অভয় দিলেন। টেনশনের কিছু নেই। হাই প্রেশারের রোগি। হঠাৎ প্রেশার কমে গিয়েছিল। আর সে সময়ই বসা থেক ওঠার কারণে এ অসুস্থতা।
এখন খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করতে বললেন। আর সময় সুযোগ মতো কিছু
টেস্ট করাতে বলে বিদায় নিলেন।
৫)
আতিক হাসান বারান্দায় একা বসে । মনটা নিরাসক্ত, ভার হয়ে আছে। সকালে রাগ করে চলে যাবার পর মুমু কোনো ফোন দেয় নি। তিনি দুবার ফোন করেছিলেন। রিসিভ করে নি। রুমু অবশ্য দুপুর পর্যন্ত ছিলো। কিন্তু লাঞ্চের আগে চলে গেছে। ওর যৌথ পরিবার। বন্ধের দিন একসাথে না খেলে স্বামী শ্বাশুড়ি উভয়েই রাগ করে। আর ফাইয়াজের তো কোনো খবরই নেই। অসুস্থতার খবর জানানো হয়েছে অথচ এখন কী অবস্থা সেটা জানতেও একটা ফোন করেনি!
শিক্ষিত হওয়া আর মানুষ হওয়া এক নয়- ভাবেন আতিক হাসান।
জীবনের টুকরো টুকরো অসংখ্য স্মৃতি মনের পর্দায় ভাসছে।
মানুষের জীবনটা কী অদ্ভুত। জন্মের পর বড় হওয়া। তারপর টিকে থাকার সংগ্রাম। সন্তানদের বড় করে তোলা। নিজের কতো ইচ্ছে,স্বপ্ন, আকাঙ্খা অপূর্ণ রেখেই এক দিন টুপ করে পৃথবী ছেড়ে চলে যাওয়া!
প্রথম জীবনের যুদ্ধ, মধ্য জীবনের ভর-ভরন্ত সময় শেষ জীবনে কী নিস্তরঙ্গ!
ভাবতে ভাবতে বুকের গভীর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন আতিক হাসান।
মন খারাপ তোমার?- পাপিয়া কখন এসে পাশে বসেছে খেয়াল করেন নি। ঘাড় ফিরিয়ে পাপিয়ার দিকে তাকালেন। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে। আঁধার নেমেছে। পাশের কোন বাসার একটু আলোয় পাপিয়ার মুখটা অস্পষ্ট বোঝা যায়। বেচারা একদিনেই অনেক ভেঙে পড়েছে।
না, মন খারাপ নয়। ভাবছিলাম ফাইয়াজরা তো এলো না। আজ বন্ধের দিন গেলো। আজই যদি আসতে না পারে তাহলে আর কবে আসবে?
হয়তো ব্যস্ত আছে। ওর অফিসে তো প্রচুর কাজ– পাপিয়া বলে। তাছাড়া আসারই বা কী দরকার। আমি তো ভালোই আছি। শুধু শুধু কষ্ট করা। মুমু রুমুরও আসার দরকার ছিলো না। ওদের বাচ্চাদের কষ্ট হয়।
একটু থেমে পাপিয়া আবার বলে, শোনো কাল সারাদিন তুমি আর আমি ঘুরবো। রাজি?
রাজি। কিন্তু কোথায় ঘুরবো? তোমার শরীরটাও ভালো না।
শরীর আমার ঠিক আছে। এর বেশি ভালো আর হবে না।তুমি ভেবে বের করো কোথায় ঘুরবো। আমার দম বন্ধ লাগছে।
আদরের ছেলে না আসায় তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। সেটা ভুলতে চায় । তাই আবার বলে, আর শোনো, এরপর আমি আর কখনো অসুস্থ হলে ছেলে মেয়েদের খবর দেবে না। ঠিক আছে?
শেষের কথাগুলো পাপিয়া কড়া করে বললেও তার কণ্ঠস্বরের ভেতরের লুকানো অভিমানের কান্না ঠিক টের পান আতিক হাসান।
আতিক হাসান ব্যথাময় মৃদু হেসে বলেন, বলবো না। কাউকে আর ডাকবো না। আমরা বুড়োবুড়ি একসাথে হাতে হাত রেখে চলে যাব একদিন। ঐ যে কী কবিতাটা, থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার,বনলতা সেন! তুমি আমার সেই বনলতা সেন—
আতিক হাসানের কথা শেষ হয় না, নিচে কলিংবেল বেজে ওঠে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।