সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব – ৩০)

আমার কথা

১১৭

কার্ল মার্ক্স , কৈশোরেই তাঁকে চিনেছিলামজেনেছিলাম ইতিহাস কেমন করে পড়তে হবে, তার রূপ রেখাটা তিনি অন্য রকম করে গড়ে দিয়েছিলেনমানুষে মানুষে সম্পর্ক কিসের ওপর দাঁড়িয়ে – সে নিয়েও পৃথিবী কে অনেক কিছু ভাবতে শিখিয়েছিলেন তিনিকবিতা লিখতেন তিনি।

১১৮

মদ যদি ঠিক ঠাক হয়, তাহলে খানিকটা খেলেও নেশা নেশা লাগবে। তেমনি সার্থক কবিতা পড়লেও মহৎ ভাবনায় মন আক্রান্ত হবে। তুচ্ছ ব্যক্তি স্বার্থ ভুলে বৃহতের পানে তাকাতে ইচ্ছে করবে। তা যদি না হয়, ওকে আমি কবিতাই বলবো না। ও একটা এলোমেলো শব্দের জঞ্জাল। ও একটা মধ্য মেধার লাফানি ঝাঁপানি। ওতে আমার কোনো কাজ নেই।

১১৯

একজন কবি, শব্দ ও অলংকারে যাঁর অতখানি দখল, পুরাণ ইতিহাস আর লোক কথায় যাঁর প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি, তিনি কেন আরো কিছু কবিতা গান গল্প নাটক উপন্যাস না লিখে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে নিজেকে নিঃশেষ করেন? কেন এক মহৎ মানুষ বারে বারে সম সময়ের রাজনীতির কথা বলেন? কেন, কি করে তিনি শক্তিমানকে ধিক্কার দিতে পারেন? পুরস্কার পেলে যে দেশের শিক্ষিত লোকে গদ গদ হয়ে যায়, পুরস্কার যাতে মেলে তার জন্যে দারুণ চেষ্টা করে, সেখানে নাইটহুড কি করে তিনি ত্যাগ করেছিলেন, কত দূর ঝুঁকি নিয়েছিলেন, ভাবলে মাথাটা শ্রদ্ধায় নত হয়ে আসে।

১২০

সেই যে ঘর, যেখানে যখন তখন তারা যে কেউ আসতে পারত, আর পত্রিকার কাজ হত, কিছু না জেনে যে জানা, সেই জানার আনন্দে মন ভরে নিত উনিশ কুড়ির ছেলেরা। কেউ মেতে উঠতো গানে। কারো নেশা বাজনা। যৌথতা শব্দটা তখন কেউ শুনিনি। কিন্তু না জেনে, অন‍্য কোনোভাবে একরকম জেনে গিয়ে প্র্যাকটিস করেছি অবিরল। টাইম মেশিনে চড়ে পার হয়ে গেল কেউ তিরিশ বছর।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।