• Uncategorized
  • 0

|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় মিলন কুমার মাজী

সেই পয়লা বৈশাখ

শান্তময়ী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চল্লিশোর্ধ্ব অনুপমা দেবীর স্কুল আর দুই ছেলেমেয়ে ও বর নিয়ে ব্যাস্ততার জীবন।
কিন্ত বছরের এই দুটোদিন মাতাল বাতাসের মত তাড়া করে বেড়ায় অনুপমা দেবীকে। কেমন যেন সব ভুলে যান, হারিয়ে ফেলেন নিজেকে কোথাও একটা।
রতনপুরের চড়ক,গাজনগ্রামবাসীদের ভালোবাসার অপেক্ষা ।আর পয়লা বৈশাখের রাত্রে কলকাতার যাত্রাপালা। সে কি উদ্দাম থাকে গ্রামবাসীদের।
আজ থেকে ২৫ বছর আগের এই দিন দুজনে চুটিয়ে মেলা ঘুরেছে, ঝালমুড়ি খেয়েছে, গাজন দেখেছে একসাথে। আর প্ল্যান বছরের প্রথমদিনের যাত্রাপালাটাও একসাথে দেখবে, বাড়ির লোকেদের ম্যানেজ করে।অনুপমা বাড়ির লোকেদের সাথে এসেছিল যাত্রাপালা দেখতে । শিবমন্দিরের অদূরে সেই বড় বট গাছের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল ইংরেজি ফার্স্ট ইয়ারের অতনু। বড্ড ভালো লাগে ছেলেটাকে অনুপমার।
যাত্রাপালা যখন পুরো জমে উঠেছিল, অনুপমা হঠাৎ টুক করে উঠে গিয়ে পৌঁছে গেছিল সেখানে,যেখান থেকে অতনু কারোর আশায় দাঁড়িয়ে ছিল।
সেদিন সেই বৈশাখী বাতাসে কিছু একটা মায়া ছিল।যাত্রাপালার সুরের নিচে চাপা পড়ছিল আধো আধো গলায় দুই যুবক যুবতীর বার্তালাপ। রাতের গহীনে কাছাকাছি এসেছিল তারা, একে অপরের ওষ্ঠে ভালোবাসার প্রতীক এঁকেছিল পরস্পর। আর আবেগী সেই ছেলেটা আঙুল কেটে রক্তে ভরিয়ে দিয়েছিল অনুপমার সিঁথি। অনুপমা চুপ ছিল, বুঝে উঠতে পারেনি আর কোন কিছুই।
কিন্তু বাড়ি ফিরে মায়ের চোখ এড়াতে পারেনি আবছা লেগে থাকা সেই রক্তের লাল দাগ। তারপর অনুপমার আর সেই গ্রামে থাকা হল না। বাবা জোর করে মামার বাড়ি হাওড়াতে পাঠিয়ে দিলেন, আর বাবা কয়েকমাস পর চাকরি স্থানান্তর করে মা কে নিয়ে চলে এলেন এখানে। তারপর রতনপুর কেমন আছে অনুপমা আর দেখেনি। অতনুকে আজো মনে আছে তার ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।