গদ্য বোলো না -তে মৃনালকান্তি দত্ত

কবিতা কেন লিখি

কবিতা কেন লিখি এই জানতে চাওয়া অর্থাৎ এই প্রশ্ন আমার মনেহয় অপ্রাসঙ্গিক তবে এই অপ্রাসঙ্গিক প্রাসঙ্গিকের বিপরীতে নয় কারন এই প্রসঙ্গ এতো বদলায় যে প্রসঙ্গ ও একসময় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে এই বিষয়ে আসছি তার আগে কিছু বলে নেওয়া প্রয়োজন কবিতাকে নিয়ে আমরা যা কবিতা ভেবে লিখছি তাকি কবিতাই! হ‍্যাঁ না যাই হোক এর উত্তর তা কিন্ত যে বা যাঁরা বলছি তাঁর বোধ তাঁর বুদ্ধির গভীরতা উপর ভিত্তি। যা সময়ের নিরীখে আপেক্ষিক। কবিতার তো নির্দিষ্ট কোনো ব‍্যাকরণ নির্দিষ্ট কোনো প্রকরণ অর্থাৎ সজ্ঞা নেই। ফলে কি কবিতা কি কবিতা নয় এর কোনো সঠিক  উত্তর নেই। আজ যেটা কবিতা কালের নিরিখে সেটা কবিতা নাও হতে পারে। এই যে সময়ের সংগে সংগে কবিতা বদল নিচ্ছে তা প্রধান কারন আমরা সবাই সময়ের  সংগে সংগে বদলাচ্ছি। বদলে যাচ্ছি এটাই স্বাভাবিক। ফলে আমাদের প্রসঙ্গ ও বদলাবে এবং বদলাতে বদলাতে এমন জায়গায় আসে যে তখন প্রসঙ্গও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। নিজের কথা ই বলি প্রথম যখন লিখতে শুরু করেছিলাম তার কারন আজকে কেন লিখি তার কারনের কোনো সাদৃশ্য নেই। হতে পারে শুরু হয়েছিলো বাকি অনেকের মতো প্রেমে কিংবা ঘৃণায় প্রতিবাদে অথবা ন‍্যায়ে তখন কবিতার ধরন একরকম পরে যখন জানলাম এই শব্দ আসলে ধ্বনি আসলে বীজ ও নাদ আসলে এ শব্দ হচ্ছে ব্রহ্ম তখন চিন্তার ধরন বদলালো কবিতা তখন শুধু প্রেম ঘৃনা প্রতিবাদ থাকলো না কবিতার মধ‍্যে ঢুকে পড়লো মনস্তত্ত্ব ঢুকে পড়লো আধ‍্যাত্মিকতা ঢুকে পড়লো বিজ্ঞান ইতিহাস ভূগোল…
আমরা যা লিখছি যা আমরা দৃশ‍্যে নিতে পারছি। যতটা কল্পনাকে ব‍্যাপ্তি দিতে পারছি। যেমন প্রথমে জানলাম জল যা আমরা পান করছি পরে যখন বড় হলাম তখন জানলাম এ তো জল নয় অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন। তখন ভাবনা বদলে গেল আমূল এভাবেই প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে আমাদের ধ‍্যান ও ধারনা বদলে যাচ্ছে আমাদের কবিতার প‍্রাসঙ্গিকতাও..
পরাবাস্তব আজ যাকে মনে হচ্ছে কালকে ও সেটা পরাবাস্তব হয়ে থাকবে এমনটা কিন্ত নয়। আজ যা দূর্বোধ‍্য কাল ও সেটা দূর্বোধ‍্য হয়ে থেকে যাবে তার ও কোনো নিশ্চয়তা নেই। ফলে কবিতার নির্দিষ্ট কোনো প্রাসঙ্গিকতা আমার কাছে অপ্রাসঙ্গিক। এরপর বলতেই পারেন কবিতা সমাজের দর্পন কবিতায় সমাজ না থাকলে সে কবিতা লেখার প্রয়োজন কি কবিতা আনন্দের কবিতা প্রেমের কবিতা বিশ্বাসের বিশ্বাস ভঙ্গের এ একান্তই ব‍্যাক্তিগত..
বিমূর্ত মানেই কিন্ত অনস্তিত্ব নয়..! কবিতা মূর্ত হবে নাকি কবি কল্প চোখে সেই বিমূর্ততার অস্তিত্ব কল্পনায় মগ্ন হয়ে সেই বিমূর্ততা লিখবে সে ভাবনা এবং বোধ পুরোপুরি কবির। আবার কবির ও কি? আমরা তো নিমিত্ত যা বাধ‍্য তারই বাধ‍্যতাই আমাদের নিয়তি। আশা করি ততটা বুঝতে পারলাম যতটা কেন লিখি আমি বুঝেছি…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।