মার্গে অনন্য সম্মান খুশী সরকার (সর্বোত্তম)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ১২৩
বিষয় – মোহ

মোহের নেশা

মোহ মায়ায় অন্ধ হয়ে রইলি চক্ষু বুজে,
সুখের নেশায় সারাজীবন চললি টাকা খুঁজে।
শেষের বেলা ভাবছিস বসে ভেসে চোখের জলে।
বৃথায় গেল জীবনটা তোর মোহের মায়া ছলে।

কুহক মায়ায় মজে কেবল ভাবলি শুধু টাকা,
টাকা ছাড়া এই জগতে সবই যে তোর ফাঁকা।
খেয়ে পরে বাঁচতে গেলে অবশ্যই চায় টাকা,
টাকাটাই সব কিন্তু নয় ভাই টাকাতেই মন বাঁকা।

মোহের অঞ্জন চোখে পরে দেখলি রঙিন ধরা,
ভাবলি না তো মোহের বক্ষ সংকীর্ণতায় গড়া।
মোহের নেশায় মত্ত হয়ে আত্মসার্থে মেতে,
গোলকধাঁধায় মরলি ঘুরে প্রচুর টাকা পেতে।

সুখটা হয়তো পেলি কিছু শান্তি পেলে মনে?
মোহাসক্তি মুক্ত হলেই পাওয়া যায় সেই ধনে।
মানুষ হয়ে মনুষ্যত্ব সবই গেলি ভুলে,
কারি কারি টাকার লোভে উঠলি কেবল দুলে।

দয়া মায়া ভালবাসায় কেউ হলো না আপন,
গাড়ি বাড়ি আভিজাত্যে ওই সুখ স্বপ্ন যাপন।
বন্ধু বান্ধব স্বজন থেকে গেলি সরে দূরে,
আত্মসার্থ রইল শুধু গোটা হৃদয়জুড়ে।

পথভ্রান্ত পথিক হয়ে ঘুরলি নানা দেশে,
মোহের স্রোতে ভেসে গেলি আনন্দেতে হেসে।
সর্বহারা নিঃস্ব করে মোহ গেছে ছেড়ে,
তোর জীবনের আনন্দ যা সবই নিয়ে কেড়ে।

মোহ সে তো মনের শত্রু জ্ঞান আর বুদ্ধি নাশে,
মানুষের ওই মনটা ধরে বাঁচতে ভালোবাসে।
সত্য পথে দেয় সে বাঁধা অন্ধকারে চলে,
নিশাচর ওই পাখির মত আলোতে পা টলে।

নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সদা অন্যে ছলে,
অসৎ অন্যায় দুর্নীতি আর অধর্ম তার তলে।
মানুষের মন দেবত্বের স্থান তার উন্নতবোধে,
সত্য ন্যায়ের আদর্শপথ মোহ সদা রোধে।

জীবনের ওই লক্ষ্য হলো আনন্দ আর শান্তি,
মোহ ধরলে পদে পদে ঘটায় তাতে ভ্রান্তি।
নির্মোহ ওই দৃষ্টি খুলে দেখ্ রে একবার চেয়ে,
নদী ঝরনা যাচ্ছে কেমন পরার্থে ওই ধেয়ে।

ফল ফুল পাখি চন্দ্র সূর্য সবাই পরের তরে,
মানবের ওই কল্যাণ করে কর্ম নিষ্ঠা ভরে।
আনন্দ আর আবেগে সে সদা করে হেসে।
জীবনের সাধ পূর্ণ করে সফলতায় ভেসে।

তুইও তেমন পরের তরে জীবনটা দে ঢেলে,
আনন্দে তুই উড়বি দেখিস পাখির ডানা মেলে।
অমূল্য এই মানবজীবন আদর্শময় হলে,
সত্যনিষ্ঠার সঠিক চাষে সোনার ফসল ফলে।

মোহ যে তোর পথের কাঁটা বাঁধা সাধন পথে,
মোহত্যাগী মহাজন‌ই চড়ে শুদ্ধরথে।
সংযম আর সাধনাতে আনরে তাকে বশে,
জীবনটা তোর সফল হবে আনন্দময় রসে।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!