কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে জায়েদ হোসাইন লাকী

১| আমাকে মনে রেখো না

পকেটে রোজ সুইসাইড নোট নিয়ে ঘুরি
যেমন, তুমি ভ্যানেটি ব্যাগে রাখো প্রতদিন
টাকা উঠানোর কার্ড
দুঃখ এসে হাঁটু গেড়ে বসে আছে বুকের পাশে
এত দীর্ঘপথ একসাথে হেঁটেও আমি তোমার ছায়া ছুঁতে পারিনি
গাছকে ছুঁয়ে দিলেও ছুঁতে পারিনি কখনোই পাতার দীর্ঘশ্বাস
তাই আমি আজ আত্মহত্যা করতে চললাম
আত্মহত্যার পরে কেউ আমার লাশ খুঁজো না
বরং, পকেটে রাখা চিরকুট খুঁজে দেখো
পেয়ে যেতে পারো অমোঘ প্রেমের
অনাবিষ্কৃত চতুর্থ সূত্রটি
আমার সুইসাইড নোটের ভাঁজে
একটি সাদা গোলাপের পাপড়ি রেখে দিয়েছি
যত দ্রুত পারো তা রাজশ্রীর হাতে পৌঁছে দিও
সে যদি আমার লাশ দেখতে আসে
তাহলে, আমার দুচোখ কেউ খুলে দিও
আমার পাথর চোখের দিকে তাকালে
পেয়ে যাবে সে, না বলা দুঃখের যাবতীয় ফুলঝুরি
আমার মৃত্যুর পরে আমাকে মনে রেখো না
তাহলে, পরের জন্মে দেখা হলে আবারো আমি
তোমার জন্য আত্মহত্যা করতে পারি

২| খুব কাছে থেকেও, তুমি দীর্ঘশ্বাস

আমি মরে গেলে সে আমার লাশ দেখবে না
জীবিতাবস্থায় দেখবে না পোড়া মুখ
এটাকে সত্যিই কী প্রেম বলে?
তোমার কুরিয়ার ঠিকানা যদি জানতাম
তাহলে, কফিনে করে পাঠিয়ে দিতাম
আমার সকল শুভাশিস, সব লেন-দেন
আর সমগ্র ভালোবাসা
বাড়ির পাশের স’মিল থেকে প্রায়শই
কাঠ চেরাইয়ের শব্দে ভাতঘুম থেকে জেগে উঠে
দেখি, এ আমার পাঁজর ভাঙার গান
আমি মন দিয়ে সে শব্দ শুনি; কাঁদি না
এ শহরের করাত কলের মালিকরা সবাই নারী
তাঁদের করতলে লুকিয়ে রাখা সুতীক্ষ্ণ
কাঁটাচামচে কাটা পড়ে রোজ যুবক বৃক্ষের বাঁকল
আমি তো অর্জুনের ছাল বৈ অন্যকিছু নই

৩| কেউ মনে রাখেনি

চাঁদের আলো গায়ে মেখে আমিও একদিন
চঁন্দ্রগ্রস্ত হয়েছিলাম
তোমার অগ্রন্থিত প্রেমের পারফিউম শরীরে মেখে
বিরহানল সয়ে ছিলাম।
তোমাকে ভালোবেসে
তখন আমি হয়ে উঠেছিলাম খুব তুমিময়
আমার মনমহুয়ায়
তুমিও যে মাতাল হওনি তাতো নয়।
তবুও তুমিহীন আমার অতিমর্ত্য সময়
একদমই থেমে থাকেনি
আমাদের সেইসব মারদাঙ্গা প্রেমের খবর
কেউ মনে রাখেনি।

৪| ঝলমলে ভোর

তোমার দরজায় নতজানু হয়ে থাকতে পারি
যদি তুমি খুলে দাও দোর।
তোমার শরীর, মন, কিছুই ছুঁব না নারী
শুধু দিয়ো ঝলমলে ভোর।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।