সম্পাদকীয়

গত শনিবার থেকে মনে হচ্ছিল আকাশটা গলে গলে পড়ছে বৃষ্টির জল হয়ে লালচে একটা আভা ছিল তার সাথে উপুরঝন্তু বৃষ্টিধারা।
আকাশ থেকে যেন জলের ধ্বস নেমেছে। আর পেছন পেছন ছুটে আসছে দলে দলে পাগলা হাতি।
একটা গল্প শুনেছিলাম অনেকদিন আগে, একদল হাতির গা ঘেষে, একটা জীপ চলে গিয়েছিল,বোধহয় পালামৌ এর জঙ্গলের ঘটনা। দলের দুটি হাতির গায়ে ঘষা লেগেছিল। জীপ ঝড়ের বেগে পৌঁছে গিয়েছিল তাঁর গন্তব্যে। সওয়ারিরা বিশ্রাম নিচ্ছেন, দুপুরে দেশী মুরগির ঝোল দিয়ে ভাতটি পেট ভরে খাওয়া হয়েছে। রেষ্ট হাউসের বাগানে এরপর চায়ের আসর বসবে, আরেকটু পরে সুরার আসর বসানোর পরিকল্পনা।
বিকেলের পড়ন্ত আলোতে দেখা গেল তাদের জীপ নিয়ে ফুটবল খেলছে গোটা পচিশ হাতি।
তাঁরা আঘাত ভোলেন নি।
ফরেষ্ট রেষ্ট হাউজের অতিথিদের বাঁচাতে বেগ পেতে হয়েছিল কর্মীদের। ঢ্যারা পিটিয়ে, আগুন জ্বেলে, হাতির দলকে সরিয়েছিলেন বনকর্মীরা, আর বনের প্রান্তে রাখতে হয়েছিল ব্যারেল ব্যারেল মদ। গজ মহারানীরা (হাতিরা মাতৃতান্ত্রিক গোষ্ঠি হয়) মদ খেয়ে মোহিনী, গজগামিনী স্টাইলে বনে ফিরে গিয়েছিলেন । সামনে একটা দাঁতাল ছিল। যেমন থাকে ঠাকুমা, দিদিমা, মায়েদের দলে, সে একটু বেশি মদ খেতে চেষ্টা করেছিল, মাতামহীটি এসে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়েছিলেন। বাচ্চারা মদ খেয়েছিল কিনা জানা নেই। বোধহয় সল্ট পিটে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মা, দিদিমারা।
মদের উপহার পেয়ে গজ মহারানীরা বেজায় খুশি হয়ে বনের পথে চলতে চলতে ঘুমিয়ে পড়েছিল না খানিক জিরিয়ে নিয়েছিল জানা নেই।
তবে গত শুক্রবার এবং শনিবার দুপুরে যে তঁারা মহা বৃংহণে কলকাতার আকাশ থেকে নেমেছিলেন জানি ।
এ শহরে মদের ব্যাবস্থাও ছিল নিশ্চয়ই তাদের জন্য ।
ইন্দ্রাণী ঘোষ।