T3 সাহিত্য মার্গ || ১৫০ তম উদযাপন || সংখ্যায় ইন্দ্রানী ঘোষ

ওগো দুখ জাগানিয়া 

এমন একেকটা সন্ধ্যে আসে, কনে দেখা আলোর সন্ধ্যের পর কেমন যেন সে ম্রিয়মান| চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য্য নেই তাঁর| কনে দেখা আলোর সন্ধ্যে যেমন রুপসী| পরনে তাঁর নরম মখমলি শাড়ী| কখনো কমলা, কখনো গোলাপী, কখনো বেগুনি| চুল পরিপাটি করে বাঁধা, অবস্যি পার্লারে ছাড়া তিনি বিশেষ প্রসাধন করেন না| কাজেই যেদিন তিনি মর্ত্যে আসেন রূপের ডালি উজার করে দিয়ে আসেন | তাঁর চোখের প্রতিটি পাতায় লাইনার, ভ্রু যুগল যেন বঁাকা ধনু | ঠোঁট দুখানি যেন গোলাপের পাপড়ী, কানে হিরের দ্যুতির মত বৃষ্টির দুল, সিথিতে বৃষ্টির সিথিপাটি, পায়ে বৃষ্টির নুপুর | হাতে দুখানি হিরের চুড়ি. শাড়ির পাড়ে রুপোলি নক্সা |
অন্যজন তাতের নীল শাড়ীতে আটপৌর রূপ| চুল টেনে মাথার উপরে বাঁধা|. জবাকুসুমে জবজবে|. দু হাতে শুধু দুটো সোনার রুলি| কপালে আঁকা কুমকুমটি বেশ সুন্দর গোলপনা| তাঁর নীচে লম্বা আরেকটি দাগ, তঁার নীচে আরেকটি বিন্দু| কনে দেখা আলো চলে গেলে পা টিপেটিপে সে আসে| আমি ঘরের আলো জ্বালি না| আমার জানলার কাচের সামনে সে এসে দাঁড়ায় | তাঁর বৃষ্টি হিরের অলংকার নেই | আমি তাঁর সাথে কথা বলি| দু একটা সুখ দু:খের সাত সতেরো| বৃষ্টির সাথে তাঁর দেখা নেই| সে দুর থেকে বৃষ্টিকে দেখে বৃষ্টি যখন কনে দেখা আলোর সাথে লুটোপুটি যায়,এ অভিমানিনী তাঁকে দেখে, কথা বলে না | বৃষ্টি তাঁর কাছে এমন করে আসে না | এলেও দুদ্দাড় বেগে ভিজিয়ে দিয়ে চলে যায়| আমি এই অভিমানিনীর নাম দিয়েছি জোনাকি , নাম শুনে সে মেয়ে মহা খুশি, আমার হাতে হাত রেখে সে কথা দিয়েছে আর মন খারাপ করবে না সে | অমনি কে যেন গেয়ে উঠল ‘ যা আছে তা তোমার আছে, তুমি নও তো ঋণী কারও কাছে, তোমার অন্তরে যে শক্তি আছে তার ই আদেশ পেলেছো, ও জোনাকি কি সুখে ওই ডানা দুটি মেলেছ , ও জোনাকি.’

আকাশে তখন একটা, দুটো জোনাকির মত তারা ফুটে উঠছে |

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।