এই ফুটফুটে জ্যোৎস্নায় অরণ্যের হৃদয় ছুঁয়ে লাজুক চাঁদ যেন আমাকে চুমু খেয়ে যাচ্ছে। আর ওই অসীম আকাশের হাজারো তারা নতুন রাতের গল্প শোনাবার জন্য পরম যত্নে নিজেদের সাঁজিয়ে তুলছে। এই জ্যোৎস্না রাতে মহুয়ায় মজে গোবিন্দ জির মাটির দালানে বসে অবাক দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছি নৈসর্গিক দৃশ্য। দূরের ওই আবছা অরণ্য যেন বলতে চায় অনেক কিছু,কিন্তু তার ব্যথা শোনার মানুষ কই। এই সব সাত পাঁচ চিন্তার মাঝে ঘোর ফিরে এলো ছোট ভাই বুবাইয়ের ডাকে। ওতো আজ প্রকৃতির এই রূপে পাগল হয়ে আমার পাশে চুপিসারে বসে পড়েছে। নির্জন অরণ্য আর নিস্তব্ধ গ্রাম,দূর থেকে ভেসে আসা জন্তুর আর্তনাদ,শাল ফুলের সুবাস আর থেকে থেকে কুসুম গাছের শিরশির হাওয়া মনকে যেন পাগল করে তুলছে। গোটা জামুয়ানি গ্রাম যেন আজ জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে। ওই দূরের শাল গাছের মাথায় ফুল গুলো যেন ফসফরাসের মতো জ্বলছে। আর এই পাগল করা প্রকৃতির মাঝে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়েছে জামুয়ানি গ্রাম। প্রকৃতির এই রূপ দেখতে দেখতে মাঝ রাত অতিক্রান্ত, এবার যেতে হবে ঘুমের দেশে। অগত্যা আর দেরি না করে গোবিন্দ জির মাটির ঘরে কম্বল চাঁপা দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুম।