গল্পবাজে দেবাশীষ মণ্ডল

মেয়ে

কেমন আছিসরে মা!ঝিঙ্কি,টোটন,টিয়া ওরা সব কেমন আছে?আর জা-মা-ই!তোকে পাঠানো নুতন দামি খাটটা,তোর মনে ধরেছে!তোকে বলাই হয়নি জানিস।পাপাই টা খুব ভালো পাশ দিয়েছে,বলছে নাকি,আরো ভালো ফল হতো!আসলে ও যে পড়াশুনায় খুব কাঁচা।কেমন পাগল বলতো!বলে, আর হাসে সমর বাবু।

কিন্তু,মেয়ে অনুর মুখে হাসি নেয়।হাসি এ বাড়িতে যেন বিলাসিতা,তাই হাসতে মানা।

না এ বাড়িতে কেউ রামগড়ুড়ের ছানা নয়,ওরাও প্রাণ খুলে হাসে।শুধু বৌমা ছাড়া।কারন,নুতন বৌদের নাকি হাসতে নেয়।

কান্নার প্রতিযোগিতা হলে,এ বাড়ির বৌয়ের প্রাইজ অনিবার্য।যে বৌ ছেলের জন্ম দিতে পারেনা,তাদের মুখে হাসি নাকি ভালো লাগেনা।

ঝিঙ্কি,টোটন,টিয়া একে,একে মেয়েরা জন্ম নেয় মাএ এক ছেলের আশায়,তখনও অনু নুতন বৌ ছিল,এখনো সেই নতুন বৌ আছে, বিশ বছর পরেও।

অনুর শাশুড়ি ঝর্না দেবীও ছিলেন একদিন।একছেলে জন্ম দেওয়ার আগ পর্যন্ত।চার মেয়ের জন্ম হয়েছে,তখনও বৌমা ছিলেন তিনি।এটায় নাকি এ বাড়ীর নিজস্ব আইন।মেনেও চলে এবাড়ীর বৌমারা।

বড় চুপ আছিস যে মা,কিছু বলছিসনা কেন?
ওপারের ফোনে সমর বাবুর আওয়াজ আসে।

এপারের বৌমা অনু শুধু বলে- ভালো আছি বাবা,আমি বেশ ভালো আছি।পরে ফোন করবো ,এখন রাখি ।খাওতে হবে টিয়াকে,না হলে ও যে কান্দবে। ও যে আমার ই মেয়ে।ফোন কেটে দেয় অনু।

সমর বাবুর কানে মেয়ের কান্নার রোল হয়তো পৌঁছায়নি,তবু যেন মনে হয় ওপারে কান্দছে কোনো এক মেয়ে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।