অণুগল্পে পার্থপ্রতিম পাঁজা

এক বিছানায়!

“সত্যিই আমি ভাবতে পারি না, ছি ছি! আমার ঘুমন্ত অবস্থায় সুযোগ নিয়ে তুমি রাতবিরেতে আমার বিছানায়, আমার পাশে শুয়ে পড়বে! শুধু শুয়ে পড়া তো নয়, আমার গায়ের কম্বলের ভেতরে ঢুকে আমার পারমিশন ছাড়াই আমাকে আদর করতে শুরু করবে। যে সে আদর নয়, একেবারে লিপ কিসিং! রাতের অন্ধকারে অবস্থার সুযোগ নিয়ে মেয়ে মানুষের শরীরে অবৈধ হস্তক্ষেপের মানে জানো তুমি? এটা কত বড় অপমান কতখানি অপরাধ সে বিষয়ে কোনো কাণ্ডজ্ঞান আছে তোমার? তোমাকে আমি কতটা বিশ্বাস করতাম। কি করিনি আমি তোমার জন্য? এই তার প্রতিদান! বেশ বুঝতে পারছি আমি, আমারই ভুল। তোমাকে এতোখানি সুযোগ দেওয়া আমার মোটেই উচিত হয়নি। মা পই পই করে আমাকে বলেছিল কাউকে এতটা মাথায় তুলতে নেই। সুযোগ বুঝে সে তার উল্টো প্রতিদান দেবে। তখন মায়ের কথা বিশ্বাস করিনি। তাকে বিশ্বাস না করার ফল তো হাতেনাতেই পেলাম আজকে। যাকে বিশ্বাস করলাম সেই তো আমার বিশ্বাসের এমন মূল্য দিল! ছি ছি! আমি লোকের কাছে আর মুখ দেখাতে পারবো না। শেষকালে তুমিও আমার ঘুমন্ত অবস্থার সুযোগ নিলে! আমার পোড়া কপাল, তোমার মত একজনের সঙ্গে এক বিছানায় অজান্তে হলেও রাত কাটাতে হলো। তারপর শরীরের স্পর্শ! গাটা ঘিনঘিন করছে আমার। এই শীতের রাতে আবার আমাকে স্নান করতে হবে। কী জ্বালা!এরপর থেকে আর কেউ কাউকে বিশ্বাস করবে না। আমি তো নয়ই। তোমাকে এতটা ভালবাসা, এতটা বিশ্বাসের ভালই প্রতিদান দিলে! এখন মানে মানে বিদায় হও। তোমাকে আর আমি এক মুহূর্তের জন্যেও সহ্য করতে পারছি না।”–ঝাঁঝিয়ে উঠল রুচি, রুচিরা সেন, বালিগঞ্জের রীতিমতো অভিজাত পরিবারের একমাত্র কন্যে।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি কিন্তু নির্বিকার। যেন কিছুই হয়নি। অপরাধবোধের ছিটেফোঁটাও তার চোখে মুখে দেখতে পাওয়া গেল না।
এই ব্যাপারটাই রুচিরাকে আরো ক্ষেপিয়ে তুলল।
এবার সে একটা চটি জুতো তুলে তাড়া করল তার শ্লীলতাহরণকারীকে।
এবার প্রমাদ গুনলেন অপরাধী। রীতিমতো অবিশ্বাসীর চোখে রুচিরার দিকে তাকিয়ে বেয়াড়া বিপ্লবী মতো আওয়াজ তুললেন,”ভো….উ…..”

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!