Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ক্যাফে ধারাবাহিক গল্পে মনোরঞ্জন ঘোষাল (পর্ব - ৯)

maro news
ক্যাফে ধারাবাহিক গল্পে মনোরঞ্জন ঘোষাল (পর্ব - ৯)

টলি ট্যাব আবিষ্কার

কদিন পর যখন শুনলাম তখনো কেউ তার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে পারে নি। তখন আমি মেল করলাম স্পটের বিভিন্ন কোন থেকে তোলা কত গুলো ছবি চেয়ে।

বলা মাত্রই তারা ছবি পাঠিয়ে দিল। স্পষ্টতই দেখলাম তার মৃত্যু ঘটেছে ঐ অর্কিডের কারণে।

সম্ভবত রাতে কাজ করতে করতে ও টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। তার পাশেই ছিল ঐ অর্কিডের টব। রাতে এদের ঐ পুষ্প বৃন্ত ছুটে যাওয়া বল্লমের মত বেড়ে যায় হঠাৎ। আমি আর্টিকেলে তা লিখেছিলাম। ও তা আমোল দেয় নি। হঠাৎ সজোরে বল্লমের ভোঁতা ফলার মত ঐ অর্কিডের পুষ্প বৃন্ত তার রগের এক পাশের নরম চামড়াতে আঘাত করলে সে মারা যায়। আঘাত করার পর সেটি বেঁকে গিয়ে পথ পরিবর্তন করে। রগের পাশের রক্ত জমাট বাঁধার কালচিটে দাগ সে কথার জল জ্যান্ত প্রমাণ। পোষ্ট মর্টামে মৃত্যুর সময় রাত্রি আর কারণ সজোরে ঐ স্থানে আঘাত তা লেখা রয়েছে। প্রথমে ওরা আমার মতকে কেউ বিশ্বাস করতে পারে নি। ওরা বিশ্বাস করতে পারে নি যে একটি অর্কিড এর ঐ সরু উপাঙ্গ এমন আঘাত করতে পারে। আমি পরীক্ষা করে দেখালাম যে ঐ একটি সরু উপাঙ্গের একটি আঘাত পঁচিশ নিউটন বল প্রয়োগ করে। একটা পঁচিশ কেজি ভরের লোহাকে সরাতে যে পরিমান বল লাগে! চিন্তা করতে পার!

এখন আমি একা ঐ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি। তাই সময়  একটু বেশি লাগছে। আবার তার মাঝে এই সব কাজে সময় চলে যাচ্ছে।

সেই ঘটনা মনে পড়তে সন্দেহ হল! এই ঘটনার পিছনে এই গাছ পালাদের হাত নেই তো?

দিনের আলো ফুটলে আমি বুমেরাং নিক্ষেপ করে গাছ পালার কিছু ডাল পাতা কেটে উপরের দিকটা ফাঁকা করে দিলাম। সেই ফাঁকা জায়গা দিয়ে রোদ্দুর এসে মাটিতে আছড়ে পড়ল। আমি টর্চ লাইট ওয়ালা লেন্স দিয়ে সেই মাটিকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলাম।

একটি দৃশ‍্য আমাকে খুব অবাক করে দিল! কেঁচো বা ছোট কোন পোকা মাকড়ের এত টুকু চিহ্ন পর্যন্ত কোথাও নেই। অথচ সেখানে মাটিতে ছোট ছোট গর্ত রয়েছে। যদিও সেই গর্ত সেখানের সর্বত্র ছড়িয়ে নেই। ঠিক যেখানে ঐ ইঁদুরের খাঁচা রাখা ছিল, তার পাশেই একমাএ ঐ ছিদ্র গুলো রয়েছে। আমার আর বুঝতে দেরি হল না। যে ঐ ছিদ্র গুলির সঙ্গে ইঁদুরের মরে যাওয়ার সম্পর্ক আছে।

একটা শাবল জাতীয় লোহার রড দিয়ে সেখানের মাটি খুঁড়ে ফেললাম। দেখলাম সেই ছোট ছোট ছিদ্র গুলো গভীরে প্রবেশ না করে, পাশের দিকে ধেয়ে চলেছে। সেই পথ অনুসরণ করে আমি গর্ত খুঁড়ে এগিয়ে চললাম। দেখলাম শেষ পর্যন্ত গর্ত গুলো একটা বড় গাছের গোড়ার দিকে এগিয়ে চলেছে। সেই দিকে আরো একটু খুঁড়তেই সরু সরু সাদা সুতোর মত শিকড়ের গুচ্ছ পড়ে রয়েছে। সেগুলি ইঁদুরের গায়ে গিয়ে জড়িয়ে ছিল গত কাল রাতে। গন্ধ শুঁকে দেখলাম তার গায়ে ইঁদুরের গন্ধ লেগে রয়েছে।

কী আশ্চর্যের! ভেবে অবাক হলাম! কী আশ্চর্য জনক তাদের প্রসারণ আর সঙ্কোচন ক্ষমতা।

কয়েকটা শিকড় টুকরো করে কেটে নিলাম। পরীক্ষা করে দেখব ঐ গুলি কে আমার টলি ট‍্যাব অর্থাৎ লম্বা হবার ওষুধ বানানোতে কোন কাজে লিগে কি না।

ঐ গাছের শিকড় গুলো ইঁদুরের মৃত্যুর কারণ জানতে পারলেও। এটি বুঝে নিতে পারলাম না। যে তারা কেন ঐ নিরীহ প্রাণী গুলিকে মেরে ফেলছে।

আমার জেদ চেপে গেল। আমার একটি অসমাপ্ত যন্ত্র আবিষ্কার টিকে সমাপ্ত করতে হবে।

আমি প্লান্ট-ট—হে-মে তৈরীর কাজটি অর্ধ সমাপ্ত করে রেখে ছিলাম। এখন তার বিশেষ প্রয়োজন। তাই আবার শুরু করলাম।

আমাকে জানতেই হবে ঐ নিরীহ প্রাণী গুলিকে ওরা এত চতুর তায় মেরে ফেলছে কেন?

খাদ‍্য সংগ্রহ তো নয়! তাহলে আমাদের মত এত বড় বড় প্রোটিনের ভাণ্ডার সম শরীরে থেকে ওরা প্রোটিন শোষণ করছে না কেন?

ক্রমশ 

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register