Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ক্যাফে ধারাবাহিক গল্পে মনোরঞ্জন ঘোষাল (পর্ব - ৮)

maro news
ক্যাফে ধারাবাহিক গল্পে মনোরঞ্জন ঘোষাল (পর্ব - ৮)

টলি ট্যাব আবিষ্কার

মাথায় চিন্তা নিয়ে ঘরে গিয়ে দু মুঠো খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। ঘুম এল না। বিছানায় শুয়ে এ পাশ আর ও পাশ করতে থাকলাম। হঠাৎ মনে পড়ে গেল সেই অর্কিডের কথা। সে এক রহস্য। যদিও আমি সেই রহস‍্যটিরও সমাধান করেছিলাম। আজও চোখের সামনে ভেসে ওঠে প্রিয় বন্ধু রবিনসনের মুখ। সেও আমার কাছে একটি অর্কিডের খোঁজে এসেছিল। মনে পড়ে সেদিন আমি আমার বাগানে ডিডাইমোপ্লেক্সিস প‍্যালেন অর্কিড টি নিয়ে তার পুষ্প বৃন্তের নির্যাস বের করছি। তখন হন্ত দন্ত হয়ে সে আমার কাছে এল। আমি তো তাকে তখন চিনতাম না। কোথা থেকে কে এক সাহেব এসেছে। হাজার হোক বাড়িতে এসেছে একজন অতিথি। সে চেনা জানা নাই বা হোক। একটু বসতে তো বলি। তাকে বাগানের চেয়ারে বসতে বলে জিজ্ঞেস করলাম। “আপনার কাকে চাই?” ও বলল- “আপনাকে।“ আমি তো অবাক! তার কথা শুনে। ভাবলাম বাবা! আমার কাছে আবার সাহেব সভ্যেরা আসছে দেখছি? জিজ্ঞেস করলাম- “তা কী দরকার? আঙুল বাড়িয়ে দেখিয়ে বলল- “ওই অর্কিড টি।“ আর একটু অবাক হলাম! এমন পরিত্যক্ত অর্কিডে ওর আবার কী কাজ থাকতে পারে? আমি ভুলেই গিয়েছি যে, পৃথিবীর কোথাও কোথাও আমার মত দু একটা পাগল থাকতে পারে। যাদের চিন্তা ভাবনা ঠিক আমার মত। আমি ঐ অর্কিডের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য কে তুলে ধরে একটি আর্টিকেল রিসার্চ গেটে প্রকাশ করে ছিলাম। সেটি রবিনসনের চোখে পড়েছে। তাই সে ছুটে এসেছে আমার কাছে। আমি আমার বন্ধু বরিস কে বলে ছিলাম এটি থেকে নির্যাস বের করছি বলে। এটি থেকে ক্যান্সারের প্রতিষেধক আবিষ্কার করবো বলে। ও সেই কথা তার কাছে থেকে শুনেছে। ও সেই কাজে আমার সঙ্গী হতে চায়। রবিনসন একজন সনাম ধন্য কোশ তত্ত্ব বিদ। সম্প্রতি ক্যান্সার কোশ ও অঙ্কো জিন নিয়ে কাজ করছে আমি কাগজে পড়ে ছিলাম। ওর কেমন মাথায় লেগেছে আমার গবেষণায় সাফল্য আসতে পারে বলে। আমার অবশ্য ওর প্রয়োজন ছিল না। তবু কাজটা ভাগাভাগি করে নিলে তাড়াতাড়ি সম্পন্ন হবে বলে ওর প্রস্তাবে রাজি হয়ে ছিলাম। সাফল্য যে আসতে বাধ‍্য তা আমি বুঝে গিয়েছিলাম অনেক আগেই। যখন দেখে ছিলাম ঐ অর্কিডের পুষ্প বৃন্ত কয়েকটা দিনেই প্রায় ফুট দুই বেড়ে উঠছে এক বিশেষ পরিস্থিতিতে। তখনই বুঝেছিলাম ঐ গাছের ঐ পুষ্প বৃন্তে এমন কিছু বিশেষ কোন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন কোশ আছে যাদের বিভাজন ক্ষমতা খুব বেশি। তাই ঐ কোশকে প্রাণী দেহে ব‍্যবহার উপযোগি করে তুলে ক্যান্সারের চিকিৎসাতে ব‍্যবহার করা যাবে। এই কোশ বিভাজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যেটি ক্যান্সার কোশের ক্ষেত্রে সম্ভব না। ক্যান্সার আক্রান্ত স্থানে এই কোশ ইনজেক্ট করে দিলে দ্রুত তা বৃদ্ধি পেয়ে ক্যান্সার কোশ গুলিকে ঘিরে ফেলে তার বৃদ্ধি বন্ধ করে দিতে পারবে। তার ফলে সে কোশের আর বৃদ্ধি হবে না। দেহের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। অর্থাৎ মেটাস্টিসিস বন্ধ হয়ে গেলে মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা যাবে। ও বলল- “আমাকে নির্যাস দাও।“ আমার তখনও তা সঠিক মাত্রায় প্রস্তুত করা ছিল না। সে কথা ওকে স্পষ্টতই জানালাম। ও কটি অর্কিডের গাছ চাইল। বলল সে নিজে নির্যাস বানিয়ে নেবে। ও যে পারবে তাতে আমার কোন সন্দেহ ছিল না। তাই আমি কটি অর্কিড চারা ওকে টব বন্দি করে দিলাম। ও নিয়ে দেশে ফিরে গেল। তার দিন চারেক পর ওর মৃত্যুর খবর আমার কাছে এল। তার মৃত্যুতে আমি মর্মাহত হলাম। তখনি শুনি তার মৃত্যুর কারণ কেউ বুঝতে পারছে না! কেন?
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register