Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

ক্যাফে গল্পে পৌলোমী রহমান নিশা

maro news
ক্যাফে গল্পে পৌলোমী রহমান নিশা

স্মৃতির পাতায় পিকনিক…

আজ হঠাৎ মনে পড়ে গেল গার্লস স্কুলে থাকতে যে পিকনিক হত সেই পিকনিকের কথা। বেশ কদিন আগে থেকেই চলতো তোড়জোড়। স্যার ম্যাডামরা বারবার এনাউন্স করতেন এইবার কিন্তু পিকনিকে অনেক আনন্দ হবে, সবাই যেন পিকনিকের চাঁদা দিয়ে দেয়। ঠিক করা হত কদিন ধরে কোথায় যাওয়া হবে। এই নিয়ে চলত নানা জল্পনা-কল্পনা! কত দূর পিকনিক স্পট, ফিরতে কতক্ষণ লাগবে, কী কী রাইড আছে, সাউন্ড সিস্টেম কী হবে, গাড়িতে নাসতা কী দেওয়া হবে, আর কয়টা বাস নিতে হবে। হালকা শীত-শীত আবহাওয়া... পিকনিকের আগের রাতে ছাত্রীদের ঘুম নেই চোখে। অনেক ভোরে সবাই উঠে কোন জামাটা সবচেয়ে সুন্দর সেটা বের করত। কেউবা বান্ধবীদের সাথে ম্যাচিং করে জামা বানিয়েছে। খুব ভোরে রিকশা নিয়ে স্কুলে প্রবেশ। চারিদিকে চোখ যেন খুজছে প্রিয় বান্ধবীর উপস্থিতি...আরে ওইতো! দৌড়ে গিয়ে ম্যাচিং জামা দেখানো আর নতুন ভ্যানিটি ব্যাগটার প্রথম ব্যাবহার। স্কুলে যে নিতে হয় বই বোঝাই কাঁধের ব্যাগ! ভ্যানিটি ব্যাগ দেখানোর অবকাশ কই? আর বাসে আগে আগে উঠতে হবে, সব বান্ধবীরা একসাথে বসা লাগবে যে! কোন স্যার আর কোন ম্যাডাম থাকছেন বাসে এটাও একটা উৎসাহের ব্যাপার বটে। যেসব শিক্ষক-শিক্ষিকা বেশি গল্প করেন আর নাচানাচি করলে বকা দিবেন না, এমন কি মাঝে মধ্যে নাচতে উৎসাহ দিবেন তাদের উপস্থিতিই বেশি কাম্য। একে একে প্রত্যেকে উঠলো বাসে আর শুরু হল গানের কলি। গানের তালে তালে নাচ। কিছুক্ষন পর আসত নাসতা। বাড়িতে হাজার সাধলেও রুটি, ডিম, ফল না খাওয়া মেয়ে গুলো ডিম,কলা,আপেল,রুটি, কমলা পেয়ে আজ কতই না খুশি! এ যেন অমৃত! ডেস্টিনেশনে পৌঁছে দেখা যেত বড় বড় ডেকচি বসছে। পোলাও, কোরমা, আরও কত্তো কি রান্না হবে! সবাই ঘুরে ঘুরে চারিদিক দেখা, দল বেধে রাইড শেয়ার করা আর ছবি তোলা। না, মোবাইল ছিল না। যার কাছে ছিল ফিল্ম ওয়ালা ক্যামেরা অথবা ডিজিটাল ক্যামেরা সে সবার মধ্যমণী। ক্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে সে কি ভাব! অতপর খেয়ে দেয়ে হতো র‍্যাফেল ড্র, নাচ, ছড়া ও গানের অনুষ্টান! হতো না কোন ডিজে বা হিন্দি গান। স্যারেরা সামান্য কিছু মজার কৌতুক বলতেন তাতে অট্টোহাসিতে ফেটে পড়ত শিশুসুলভ কন্যারা। কোন এক ম্যাডাম এসে হয়তবা গাইতেন রবীন্দ্রসংগীত। না, কেউ ফেসবুক লাইভে দেখাতো না সেসব, কিন্তু অনেক জীবন্ত ছিল যেন প্রতিটা মূহুর্ত! এবারে ফেরার পালা। বাসে অতি আনন্দঘন পরিবেশ, সবচেয়ে কাঙ্খিত সময়। পড়ন্ত বিকেল। মেয়েরা আবার মেকাপ ঠিক করে নিচ্ছে কেউ কেউ। ছিলনা ফাউন্ডেশন, কন্টোর,ব্লাসান,আর কী কী সব দাঁত ভাঙ্গা মেকাপ। যা ছিল তাই অনেক! বাস চলছে, গানের কলি পুরোদমে শুরু হয়েছে। সাউন্ড বক্সে চলছে - “চল সবাইইই, জীবনের আহবানে সামনে এগিয়ে যাই।“ তিনটা বাস পরপর ছুটে চলছে। সূর্যটা ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে...
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register