Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ক্যাফে কাব্যে তুলিকা

maro news
ক্যাফে কাব্যে তুলিকা

সেদিন চৈত্র মাস

অপ্রকাশিত জীবনের গল্প

দশ বছর পর দেশে ফিরেছে স্বপ্ননীল ........ শান্তিনিকেতনের প্রতিটি ধূলিকণার সাথে একসময় খুব সখ্যতা ছিল তার,আজ সেই চিরচেনা শহরের সবদিক কেমন যেন অপরিচিত মনে হচ্ছে নীলের। সময়ের সাথে কতকিছুর বদল ঘটেছে, কিন্তু!সে সেই দশবছর আগের স্মৃতি বুকে নিয়ে পথ হাঁটছে। অন্বেষা কে আজ ও ভুলতে পারেনি সে! যদিও তাকে কোন দিন বলা হয়ে ওঠেনি তার অন্তরে অতি গোপনে লালিত প্রেমের কথা। সে অনেক দিনের কথা! এখনো কি সে অবিবাহিত আছে! না,সেটা হতে পারে না, এদেশে মেয়েদের বিয়ে একটু তাড়াতাড়ি হয়,তবে যুগ বদলেছে........ তাই বলে এম.এস.সি পাশ করার পর দশ বছর কেউ অবিবাহিত থাকবে না। তাই আর কোন দিন বলা হবে না স্বপ্ননীলের অন্বেষাকে ভালোবাসার কথা,বিয়ের কথা।
নীল যে ভালোবাসার কথা বলতে পারেনি তার একটা বড় কারণ ছিল এদেশে অনেক প্রেম পারে না একটা পাঁচিল টপকাতে,সেটা মধ্যবিত্তের যা অনেকের‌ই জীবনের বেঁচে থাকার স্বপ্ন আশা গুলোকে হত্যা করেই টিকে আছে..... টিকে আছে রোজকার জীবনের দিন আনা দিন খাওয়া ঘরের ছোটগল্পের মধ্যে। এই সব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে নীল এগিয়ে চলেছে সবুজে সবুজে ঘেরা বড় রাস্তার উপর দিয়ে। মনে মনে গাইছে রবি ঠাকুরের গান, তার খুব পছন্দের....."আরো প্রেমে আরো প্রেমে মোর আমি ডুবে যাক নেমে।"
সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে নীল আলো নিভিয়ে শুয়ে পরে, ক্লান্তিতে নয় মনের মধ্যে ভিড় করা হাজার স্মৃতি রোমন্থনের তাগিদে। অন্বেষা তার খুব সুন্দর বান্ধবী ছিল,কি সুন্দর কথা বলতো, নীল মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতো।তবে অন্বেষার কথায় কখনো কমা-পূর্ণচ্ছেদ ছিল না, একটানা বলে যেত। নিজের অজান্তেই নীল হেসে ওঠে। হঠাৎ পাশে রাখা মোবাইল বেজে উঠল...... "আকাশ ভরা সূর্য তারা"
নীল-হ্যালো!কে বলছেন! প্রশান্ত দা বলছি, ব্যস্ত আছো নাকি হে! নীল-না দাদা বলুন, তার এবারে কি পরিকল্পনা,এদেশেই থাকবে না.... কথা থামিয়ে দিয়ে নীল বলে থাকবো দাদা এখানেই পাকাপাকি ভাবে। জয়েন করলাম আজ ইউনিভার্সিটি। না! মানে একজন তোমার সাথে কথা বলতে চাই, ফোনটা দেব! নীল বিষ্ময়ে বলে কে দাদা? আরে ভাই কথা বলেই দেখো।
হ্যালো! কে! খুব চেনা গলার স্বর,তবে অনেক শান্ত। আমি অন্বেষা,কেমন আছো! নীল একমিনিট চুপ থাকে,বেশ কিছু কথা মাথায় ভিড় করে......
তবে কি অন্বেষা প্রশান্ত দা কে! না না সেটা কি করে সম্ভব, প্রশান্তদার সাথে রীতার সম্পর্কের কথা সবাই জানতো! ঘোর কাটিয়ে নীল বলে বেশ ভালো, তুমি! আমি ও বেশ আছি। বাড়িতে সবাই ভালো তো! হ্যাঁ, বাবা মা সকলেই ভালো আছেন..... আর তোমার স্বামী! দূর্ভাগ্য বিয়েটা এখনো করা হয়নি। নীল কি ঠিক শুনেছে! এ যেন মরুভূমির পথে মহাসাগরীয় স্রোত...... বুকের বাম দিক ঘেঁসে নেমে গেল। একবার দেখা করা যাবে নীল তোমার সাথে! হ্যাঁ নিশ্চয়ই। কোথায় বলো আমি পৌঁছে যাব। তাহলে কাল এসো ডিয়ার পার্কে.......
সে রাতে নীল আর ঘুমাতে পারেনি, জীবনের এত উপহার একসাথে সে পেল আজ তার ভারেই আর সে রাতে ঘুম এলো না। পরের দিন হলুদ পাঞ্জাবী আর নীল জিন্সে নীল হয়ে উঠেছে অন্যতম। দূর থেকে অন্বেষাকে দেখে আরো অবাক, সেও পরেছে হলুদ শাড়ি, খোঁপায় লাল গোলাপ, আর লাল গোলাপ তার হাতেও।
(কাল্পনিক)
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register