তোমার কাছে কিছু অনুযোগ রাখছি…
অক্লান্ত পরিশ্রমে মানবজমিন গড়বে বলে দুনিয়া কাঁপিয়েছো জীবনভর ।
কিন্তু ভবিষ্যতের ‘মানুষ’ খুঁজে পেয়েছিলে কি !
মুষ্টিমেয় কিছু আদর্শবান তোমাকে ঘিরে থাকতেন ঠিকই…..কিন্তু ‘মানুষ’ !
এতো এতো গ্রন্থ লিখেছো….
এতো কাব্য , উপন্যাস , সঙ্গীত , ছবি….
সবই কি আজ গুরুত্বহীন !
যদি তা না হয় তবে মানুষ কেন আজ এতো ধ্বংসলোলুপ !
বলতে পারো গুরুদেব !
পারো বলতে !
পারো না ।
তোমার পাথরে বারবার ধাক্কা দিয়েও উত্তর পাই নি আমি ।
তোমার বানী আজ শুধুই ব্যবসা…. পেট পুজোর দোহাই দিয়ে লালিপপের মতো দেখছি তোমার হাজারো ছবি….
কিন্তু মিটছে না ক্ষুধার জ্বালা ।
কিছুক্ষন আগে যে ‘সাধারন মেয়ে’-টি খুন হলো….
কি সান্তনা দেবে তুমি তাকে !
যাদের জন্য লিখলে ‘শিশু ভোলানাথ’
তাদের হাড় জিরজিরে শরীরের দিকে তাকিয়ে দেখেছো…তারা কিভাবে থাকে !
তোমার নন্দিনী আজও খুঁজে পায়নি রঞ্জনকে….
‘বিশু পাগল’ আজও ভিক্ষে করে রাজপথে
আর ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে তোমার চল্লিশফুট উত্তুঙ্গ স্তম্ভের দিকে ।
দেখতে পাচ্ছো না তাইতো !
তোমার নিশ্চুপ পাথুরে দেহ আমি আর মেনে নিতে পারছি না ।
আমি শুধু উত্তর চাই গুরুদেব
উত্তর চাই ।
তোমার অমিতও আর লাবণ্যকে ভালোবাসে না ।
নিয়মিত খুঁজে চলে জ্যামিতিক আকার বহু বহু ‘কেটি’ -র মধ্যে ।
দেখতে পাও !
পাও না….কেননা তোমার দৃপ্ত চোখ আজ পাথর ।
অনেক চেষ্টা করেও একটা ‘বলাই’ বা ‘রতন’ খুঁজে পাইনি….
কাবুলিওয়ালারাও মিনিকে খোঁজে না ।
জানো তুমি !
‘মাষ্টারবাবু’-কে আজ দূরবীনে খুঁজছি ।
ব্যর্থ….
ব্যর্থ তুমি আজ আগুন জ্বালাতে….
পুড়বে না আর কোনও আবর্জনা ।
এ বড় নিদারুন সংকট….
এই সভ্যতাই চেয়েছিলে বুঝি !
তুমি দিব্যি পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছো…..
‘কথা কও গুরুদেব , কথা কও’ ।
এ আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি গুরুদেব !
তুমিই না বলেছিলে ‘সারাজীবন ছাইপাশ লিখে গেলাম ।’
আজ ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে বলছি গুরুদেব….
‘ আর আমি এই ছাইপাশ পড়বো না – পড়াবো না ।
কেননা আমি ‘মানুষ’ হতে পারিনি
তুমি ‘মানুষ’ করতে পারো নি গুরুদেব….॥